ঢাকা রবিবার, ১২ই মে ২০২৪, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১


শোকের মাসে জবি সাংবাদিকদের নির্বাচন,গঠনতন্ত্র বহির্ভূত কার্যক্রমে ফলাফল স্থগিত


৩০ আগস্ট ২০২১ ০৫:৫৫

আপডেট:
১২ মে ২০২৪ ১৪:৪৯

বাঙালির শোকের মাস আগস্ট মাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকদের একটি সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার ২৮ আগস্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি এই নির্বাচনের আয়োজন করে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংগঠনের চাপে ফলাফল প্রকাশ থেকে বিরত থাকে। সংগঠনের গঠনতন্ত্র বহির্ভূত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে অনেক ভোটার ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকে। প্রগতিশীল এক প্রার্থী এ নির্বাচন বয়কট করার ঘটনাও ঘটে।

সমিতির সদস্যরা জানান, গতকাল শনিবার অনলাইন প্লাটফর্মে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নির্বাচন প্রক্রিয়া ও ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করা হয়। শোকাবহ আগস্ট মাসে নির্বাচন স্থগিতের জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করা হলেও, নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের সমালোচনায় পরে নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত করে রাখা হয়।

উক্ত নির্বাচনে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করা হয়। সমিতির গঠনতন্ত্রের ধারা ১০ এর (ক) অনুযায়ী সমিতির যেকোনো সভার এজেন্ডা বা কর্মসূচী সভাপতির অনুমতি ব্যতীত উপস্থাপন করা যাবে না। কিন্তু সভাপতির অনুপস্থিতিতে ২০১৯-২০ কমিটি ভেঙে দিয়ে, একটি এডহক কমিটি গঠন করে ছয় মাস ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এবং নিজেদের মতো করে ২০২১-২২ কার্য নির্বাহী কমিটি করতে নির্বাচন কমিশন গঠন করে। গঠনতন্ত্রের ৪ নম্বর ধারার (ক) উপধারা অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী এক সভাপতি প্রার্থী কোনো গণমাধ্যমের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি না হয়েও জাল কার্ড বানিয়ে অংশ নিচ্ছে। ধারা ৯ অনুযায়ী নির্বাচন প্রস্তুতির জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটিতে সাধারণ পরিষদের দুই জন সদস্য থাকবে এবং এডহক কমিটির ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারে নি। এছাড়া নিয়ম বহির্ভূতভাবে নতুন একাধিক সদস্য অর্ন্তভুক্ত করে। পরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন পেলে তা যাছাই বা সংশোধন করেনি। ধারা ১০ এর (খ) অনুযায়ী মনোনয়ন পত্র যাছাই ও চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার দায়িত্ব কমিশনের থাকলেও তা না করে এখানে সভাপতি পদের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের ঐ প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

এছাড়া গঠনতন্ত্রের ১০ এর (খ) উপধারা অনুযায়ী গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সাধারণ পরিষদের প্রত্যক্ষ ভোটে কার্যনির্বাহী পরিষদ নিবার্চনের ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোট গণনা সাপেক্ষে কমিশনার ঐদিনই ফলাফল ঘোষণা করবেন -এমন নির্দেশনা থাকলেও কমিশন তা করে নি। কমিশন গোপন ব্যালড বক্সের পরিবর্তে অনলাইনে উন্মক্ত গুগল ফর্মে ভোট গ্রহণ করে। যার জন্য ভোট গ্রহনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে।

এদিকে এবছরের মার্চে এ নির্বাচনটির আয়োজন হয়েছে কিন্তু গঠনতন্ত্রের সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া সাংর্ঘষিক হওয়ায় কমিশন ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে নি। নির্বাচনের দিনই নির্বাচন স্থগিত করেন। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গঠনতন্ত্রের যেসব ধারা লঙ্গন হয়েছে তা সংশোধন না করেই হঠাৎ গতকাল শনিবারে অনলাইনে ভোট গ্রহণ আয়োজন করে। বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশনকে অবগত করা হলেও ভোট স্থগিত করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বরং নির্বাচন কমিশন শোকাবহ আগস্ট মাসেই নির্বাচন চালিয়ে যাওয়ার জন্য দিনক্ষণ নির্ধারণ করে নির্বাচন চালিয়ে যেতে বলেছেন। উপরোক্ত কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির প্রগতিশীল প্রার্থী ও সদস্যবৃন্দ নির্বাচনে অংশ নেন নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় আগস্ট মাসে ভোট গ্রহণ ও সংগঠনের গঠনতন্ত্র বহির্ভূত কর্মকান্ডের মাধ্যমে নিবার্চন আয়োজনের তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছে সংগঠনের প্রগতিশীল সদস্যবৃন্দ।