ঢাকা রবিবার, ১৩ই এপ্রিল ২০২৫, ১লা বৈশাখ ১৪৩২


ভূমিকম্প মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি


৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৩৮

আপডেট:
৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৩৯

ছবি: আমাদের দিন

ভূমিকম্প মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি

সম্প্রতি মিয়ানমারে ঘটে যাওয়া ৭.৭ 

মাত্রার ভূমিকম্প গোটা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-প্রাকৃতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের মানুষের মনেও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের অবস্থান তিনটি টেকটোনিক প্লেট—ভারতীয়, ইউরেশিয়ান ও বার্মিজ প্লেটের সংযোগস্থলে হওয়ায় এটি এক উচ্চমাত্রার ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল।

গত এক বছরে বাংলাদেশে ছোট-বড় মোট ২১টি ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছে। ভূমিকম্পের তীব্রতা তুলনামূলকভাবে কম থাকায় বড় কোনো ক্ষতি না হলেও, ভূতত্ত্ববিদদের মতে বাংলাদেশ যেকোনো সময় মিয়ানমারের মতো ভয়াবহ এক ভূমিকম্পের সম্মুখীন হতে পারে।

রাজউকের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকার ৪০.২৮% থেকে ৬৪.৮৩% বহুতল ভবন ধসে পড়তে পারে। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মধ্যে রয়েছে পুরান ঢাকা ও বসুন্ধরা। ২০০৯ সালে সিডিএমপি ও জাইকার যৌথ জরিপেও বলা হয়েছিল, এই ধরনের একটি ভূমিকম্পে ঢাকায় প্রায় ৭২ হাজার ভবন সম্পূর্ণ ভেঙে পড়বে এবং আরও ১ লাখ ৩৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যার ফলে সৃষ্ট হবে প্রায় সাত কোটি টন ধ্বংসস্তূপ।

তবে শুধু ভবনধস নয়, ঢাকার অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ ও গ্যাস লাইন ব্যবস্থা এই শহরকে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পরিণত করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এমন ঘটনায় প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

অত্যন্ত উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এত সম্ভাব্য বিপর্যয় সত্ত্বেও ভূমিকম্প মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি এখনও খুবই সীমিত।  জনসচেতনতা বৃদ্ধি, নিরাপদ ভবন নির্মাণ, এবং জরুরি সেবাব্যবস্থা উন্নয়নে নেই  প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি।

তবে কিছু ইতিবাচক উদ্যোগও চোখে পড়ছে।যেমন: ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, রেড ক্রিসেন্ট ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসে ভূমিকম্প মহড়া পরিচালিত হচ্ছে, এছাড়াও, ভূমিকম্প পূর্বাভাস ও মনিটরিং সিস্টেম উন্নত করার পাশাপাশি জিও-টেকনিক্যাল সার্ভে ও রিয়েল-টাইম তথ্য বিশ্লেষণের প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “একটি মাত্র ভূমিকম্প বহু বছরের উন্নয়নকে মুহূর্তেই ধ্বংস করে দিতে পারে। অতএব এখনই না জাগলে পরিণতি হবে ভয়াবহ।”

মাহতাবুল ইসলাম প্রান্ত 

শিক্ষার্থী

গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা-১১০০


ভূমিকম্প, বাংলাদেশ