তথ্যপ্রাপ্তির আবেদন ক্লাস অ্যাসাইনমেন্ট দিলে আইনের ধারণা ও বাস্তবায়ন বাড়বে: এনসিটিবি চেয়ারম্যান
মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাসের অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী তথ্যপ্রাপ্তির আবেদন করতে দিলে এই আইন সম্পর্কে ধারণা ও বাস্তবায়ন বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ. কে. এম রিয়াজুল হাসান।
২১ নভেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ তথ্য কমিশনের সম্মেলন কক্ষে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) আয়োজিত মাধ্যমিক শিক্ষক সহায়িকায় তথ্য অধিকার পাঠদান পদ্ধতির পর্যালোচনা বিষয়ক কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে ধারণা বাড়াতেই নবম শ্রেণির পাঠ্যক্রমে বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের যখন ক্লাসে অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হয় তখন যদি এই আইন অনুযায়ী তাদের তথ্যপ্রাপ্তির আবেদন করতে দেয়া হয় তাহলে তারা আইন সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন হবে এবং আইনের বাস্তবায়ন বাড়বে।’
নবম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি বইয়ের শিক্ষক সহায়িকায় তথ্য অধিকার বিষয়ক পাঠদান পদ্ধতিকে ব্যবহারিক এবং সময়োপযোগী করার জন্য ইউএসএইড-এর অর্থায়নে ও দ্য কার্টার সেন্টার বাংলাদেশের সহযোগিতায় একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে এমজেএফ-এর ‘তথ্য প্রাপ্তির অধিকারে নারীর অগ্রগতি’ প্রকল্প।
গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গবেষক ড. মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, নবম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি বইয়ে তথ্য অধিকার আইন নিয়ে একটি অংশ থাকলেও বিষয়টি পড়ানোর জন্য শিক্ষকদের যথেষ্ট প্রশিক্ষণ নেই। এ ছাড়া এটি পড়ানোর জন্য মাত্র ১০ মিনিট সময় বরাদ্দ রয়েছে যা একেবারেই যথেষ্ট নয়। এই আইন এবং আইনের প্রয়োগ সম্পর্কে শিক্ষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ, পাঠদানের সময় বৃদ্ধি, গল্পের মাধ্যমে বিষয়টি বোঝানো এবং কীভাবে শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে তথ্যের আবেদন করতে পারবে সে বিষয়ে ক্লাসওয়ার্ক প্রয়োজন।
মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে প্রশিক্ষণের বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনার কথা বলেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ উইং) অধ্যাপক মোঃ সাঈদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘কার্টার সেন্টার এবং এমজেএফ-এর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করা হলে আমি বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করবো। সেই সঙ্গে এই আইন ব্যবহার করে যেন তথ্যের অপব্যবহার করা না হয় সেই বিষয়েও সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে সর্বোত সহযোগিতার আশ্বাস দেন দ্য কার্টার সেন্টার বাংলাদেশের চিফ অফ পার্টি সুমনা সুলতানা মাহমুদ।
সমাপনী বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপ্রধান তথ্য কমিশনের সচিব মোঃ আরিফ বলেন, ‘আইন অনুযায়ী সঠিকভাবে আবেদন করলে তথ্য না দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তথ্য না দেয়ার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে কমিশনের সবাই যথেষ্ট সচেতন। কিন্তু যাদের তথ্য দরকার তারাই সেভাবে আবেদন করছে না। তথ্যপ্রাপ্তি বাড়াতে তথ্য অধিকার আইন ও তথ্যপ্রাপ্তির আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা বাড়াতে হবে।’
তিনি মনে করেন, কোনো শ্রেণির বই লেখার প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওই নির্দিষ্ট শ্রেণির শিক্ষককে যুক্ত রাখলে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুযায়ী সব বিষয় উঠে আসবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, গবেষক এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।