ঢাকা মঙ্গলবার, ১৫ই জুলাই ২০২৫, ১লা শ্রাবণ ১৪৩২


চিকিৎসক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা, ২১জন চিকিৎসক পদের জায়গা ১৭টি পদই শুন্য


প্রকাশিত:
১৪ জুলাই ২০২৫ ১৪:৪৭

জনবল সঙ্কটে দীর্ঘদিন যাবৎ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা। এনেসথেসিয়ার অভাবে বিকল হচ্ছে যন্ত্রপাতি।

গাইনি, সার্জারি, শিশু, চর্ম ও যৌন, অর্থপেডিক্স, মেডিসিন, এনেসথেসিয়াসহ ২১টি পদের বিপরীতে ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ পদই খালি। মাত্র ৪জন চিকিৎসক দিয়েই চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা। এনিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় ও অনলাইন পত্রিকায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট চিকিৎসকের পদ রয়েছে ২১টি। তার মধ্যে ১৭টি পদই শূণ্য।এছাড়াও কনসালটেন্ট ১০টি পদের বিপরীতে আছে মাত্র একজন। নার্স ৩৫টি পদের মধ্যে আছে ১৯ জন। নার্সদের মধ্যে আবার প্রেষণে চলে গেছে পাঁচজন, মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন দুইজন।এনেসথেসিয়ার জন্য চিকিৎসক না থাকায় চালু করা যাচ্ছে না সিজারসহ ছোটখাটো অপারেশন।চিকিৎসকদের সহকারী সেকমো ১৫টি পদের বিপরীতে আছে তিনজন। একজন রেডিওলজিস্টটের অভাবে চালু হচ্ছে না এক্স-রে মেশিন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে আরও জানা যায়,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য যন্ত্রপাতি থাকার পরও মেডিকেল টেকনোলজিস্টের অভাবে এক্সরে মেশিনের সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাওর বেষ্টিত নাসিরনগর উপজেলাসহ আশেপাশের কয়েকটি উপজেলা থেকে আসা সাধারণ মানুষ।

সম্প্রতি হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে,প্রতিদিনের মত চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে লম্বা রোগীর লম্বা লাইন।আর এম ও ডাক্তার মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে গড়ে প্রায় ৫০০ রোগী এ হাসপাতালে বর্হিবিভাগ থেকে সেবা গ্রহন করে থাকে।এর মাঝে পুরুষের চেয়ে মহিলা আর শিশু রোগী সংখ্যাই বেশী কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় এত রোগীকে সেবা দিতে আমাদের সমস্যা হয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ শূণ্য থাকায় সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ৭০ বছর বয়স্ক নারী রোহেলা বেগম বলেন, বয়স হয়েছে, কোমড়ে ব্যাথা।উঠতে বইতে পাড়িনা, নামাজও পড়তে কষ্ট হয়। আইছিলাম ডাক্তার দেখাইতে। এই ডাক্তার(অর্থপেডিক্স) বলে নাই, হের লাইগা চইলা যাইতাছি।

চর্ম ও যৌন চিকিৎসা নিতে আসা লিচু মিয়া বলেন, চর্ম ও যৌনের মত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে কোন ডাক্তার নাই। আমাদের হাওরবেষ্টিত নাসিরনগরে এত বড় একটা হাসপাতালে ডাক্তার মাত্র কয়েকজন, মানুষ চিকিৎসা পাবে কই। এগুলো দেখার কেই নেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মকবুল হোসেন বলেন আমি দায়িত্ব নেয়ায় পর থেকেই হাসপাতালের সেবার মান উন্নত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু অনেক চিকিৎসকের পদ খালি রয়েছে। অপারেশন থিয়েটার সচল রয়েছে কিন্তু একজন এনেসথেসিয়ার অভাবে সিজার করা যাচ্ছে না।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোঃনোমান মিয়া জানান, জনবল শূন্যতার বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। চিকিৎসকদের জন্য সামনে নিয়োগ আসছে।আশা করছি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা নিবেন এবং চিকিৎসক শূন্যতা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।