ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইরান, পারমাণবিক পরীক্ষা নিয়ে জল্পনা

ইরানে চলমান যুদ্ধাবস্থার মধ্যেই দেশটির উত্তরাঞ্চলে ৫ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, শুক্রবার (২০ জুন) স্থানীয় সময় ভোরে সেমনান শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দূরে এবং ১০ কিলোমিটার গভীরে এই ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতিও সীমিত ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের মতে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫ এবং এটি সেমনান প্রদেশের সোরখেহ শহরের আশেপাশের এলাকায় অনুভূত হয়। ভূকম্পনের প্রভাব রাজধানী তেহরানেও টের পাওয়া গেছে, যা ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে।
তবে ভূমিকম্পের প্রকৃত কারণ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করছেন, ইরান কি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে? যুদ্ধ পরিস্থিতির উত্তাপের মধ্যেই এমন ভূমিকম্প নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
এর আগে ২৮ মে দক্ষিণ ইরানে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল, যার গভীরতা ছিল ২৭ কিলোমিটার।
এদিকে, এই ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টা আগেই জাতিসংঘের পারমাণবিক নজরদারি সংস্থা আইএইএ’র প্রধান রাফায়েল গ্রোসি সতর্ক করেন, পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হলে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, ‘যেকোনো ধরনের সশস্ত্র হামলা পারমাণবিক স্থাপনার উপর রেডিওঅ্যাকটিভ বিকিরণ ঘটাতে পারে, যার প্রভাব কেবল আক্রান্ত দেশেই নয় বরং বাইরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।’
এই মন্তব্যের একদিন আগেই ইসরায়েলের এক সামরিক কর্মকর্তা স্বীকার করেন, বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলার দাবি একটি ভুল বার্তা ছিল।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই ভূমিকম্প এবং পারমাণবিক সংশ্লিষ্ট আলোচনা নতুন করে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের ভূকম্পন যদি প্রকৃতপক্ষে প্রাকৃতিক হয়, তবুও পারমাণবিক সংবেদনশীলতার কারণে এটি অস্বাভাবিক পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে।