ঢাকা মঙ্গলবার, ৫ই আগস্ট ২০২৫, ২২শে শ্রাবণ ১৪৩২


গুলি চালিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়েছিল ফ্যাসিবাদী সরকার : প্রধান উপদেষ্টা


প্রকাশিত:
৫ আগস্ট ২০২৫ ১৫:৩১

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত

মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়েছিল ফ্যাসিবাদী সরকার—বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তিনি একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।

আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে দেশজুড়ে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।

বিগত ১৬ বছরে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করা হয়েছিল মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কোটা পদ্ধতি ছিল দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির হাতিয়ার। এ আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ আহkদের চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি। হাসপাতালগুলোকে তৎকালীন সরকার আহতদের চিকিৎসা না দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। এ কারণে বহু মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে দৃষ্টি হারিয়েছে, পঙ্গু হয়ে গেছে।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত নিহতদের স্মরণ করে তিনি বলেন, শহীদ পরিবার ও আহতদের আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের বিদেশে চিকিৎসা করানো হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শহীদ পরিবার ও আহতদের কল্যাণে যাবতীয় বিষয়াদির প্রশাসনিক দায়িত্ব মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৮৩৬ শহীদ পরিবারের মধ্যে ৭৭৫টি পরিবারকে মোট ৯৮ কোটি ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও মাসিক ভাতাবাবদ ব্যাংক চেক দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট যারা আছেন তাদেরও কয়েকটি বিষয় নিষ্পত্তি সাপেক্ষে সঞ্চয়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ৫ আগস্ট শুধু একটা বিশেষ দিবস নয়, এটি একটি প্রতিজ্ঞা, গণজাগরণের উপাখ্যান এবং ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতির পুনর্জন্মের দিন। আজ আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। যাদের কারণে আত্মত্যাগের কারণে আমরা আমরা পেয়েছি স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের উত্তাল জুলাই ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের এক সংকটময় অধ্যায়। ১৬ বছরের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এদেশের এই বিপুলসংখ্যক তরুণরা ১৬ বছর ধরে ক্রমাগত হতাশায় নিমজ্জিত ছিল। ভালো ফল করেও চাকরির জন্য ক্ষমতাসীনদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছে। চাকরিকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর তদবির বাণিজ্য। যে তরুণ ঘুষ দিতে পারেনি এলাকার মাফিয়াদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতে পারেনি, তার চাকরি হয়নি। সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি, যেটা মূলত ছিল দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আরেকটা হাতিয়ার। এর বিরুদ্ধে তরুণ সমাজ দীর্ঘদিন প্রতিবাদ বিক্ষোভ করলেও ফ্যাসিবাদী শাসকের টনক নড়েনি।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন এই সেক্টরে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিল। যারা আর্থিক বা অন্য সুবিধার বিনিময়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলবে, কাজ করবে। স্বৈরাচারের পক্ষের সঙ্গী হলেই তার চাকরি হবে।