ঢাকা রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


ধানের শীষের প্রার্থী ছাড়াই বগুড়ার দুই আসনে ভোট


২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ২২:১০

আপডেট:
১৯ মে ২০২৪ ০৩:২৪

ধানের শীষের প্রার্থী ছাড়াই বগুড়ার দুই আসনে ভোট

বগুড়া: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার দুইটি আসনের লড়াইয়ে নেই ধানের শীষ প্রতীক। অর্থাৎ বগুড়া-৩ (আদমদিঘী-দুপচাঁচিয়া) আসন ও বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে বিএনপি বা জোটের কোনো প্রার্থী ছাড়াই শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হচ্ছে।

বগুড়া-৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিত তালুকদারের প্রার্থিতা উচ্চ আদালতে স্থগিত হয়ে যাওয়ায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। তবে এই আসনে তিনি ছাড়াও মহাজোটসহ অন্যান্য দলের ৭ প্রার্থী লড়াই করবেন।

শুরুতে এই আসনে বিএনপি যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত আব্দুল মোমেন তালুকদার খোকাসহ ৩ জনকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিলো। এরমধ্যে আব্দুল মোমেন তালুকদারের ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল মুহিত তালুকদারের প্রার্থীতা বাছাইয়ে বাতিল হলে তিনি আদালতে যান। অন্যদিকে দলীয় ভাবে মোমিন তালুকদারের স্ত্রী মাছুদা মোমিনকে বিএনপি প্রার্থী করলে মোমিন তালুকদার নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। তবে ৯ ডিসেম্বর মুহিত তালুকদার হাইকোর্টের আদেশে প্রার্থিতা ফিরে পেলে বিএনপি তাকেই দলের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়নের চিঠির ভিত্তিতে তাকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। আবার মুহিত তালুকদারের প্রার্থিতা স্থগিত করতে ইসি উচ্চ আদালতে আপিল করে। সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) এই আপিলের শুনানি শেষে আবারও প্রার্থিতা স্থগিত হয় তার।

এসব ব্যাপারে মুহিত তালুকদার জানান, প্রার্থিতা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় এখন আর তিনি নির্বাচনের মাঠে নেই। ফলে আসনটি নিয়ে দলের হাইকমান্ডই সিদ্ধান্ত নেবে।

বগুড়ার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়েজ আহম্মাদ জানান, বগুড়া-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থীর প্রার্থিতা স্থগিতের বিষয়টি তিনি গণমাধ্যমে জেনেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা তার হাতে এসে পৌঁছেনি। তিনি বলেন, উচ্চ আদালত প্রার্থিতা স্থগিত করলে ওই আসনে এখন আর ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে কারো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ নেই বলেও তিনি জানান। তবে নির্বাচন কমিশন বা আদালতের আদেশ হাতে পৌঁছানোর পর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বিএনপি প্রার্থীর প্রার্থীতা স্থগিত হওয়ায় আদমদিঘী-দুপচাঁচিয়া আসনে এখন প্রার্থী রয়েছেন- লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম তালুকদার, টেলিভিশন প্রতীকে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির মো. আব্দুল কাদের জিলানী, কোদাল প্রতীকে বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির মো. লিয়াকত আলী, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী, আপেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আফজাল হোসেন, ডাব প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মজিদ ও মোটরগাড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম।

অন্যদিকে বগুড়া-৭ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও গাবতলী উপজেলা চেয়ারম্যান মিল্টন মোর্শেদের মনোনয়ন বৈধ বলে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও সেলিনা আক্তার।

পরে সেলিনা আক্তার বলেন, ২৮ নভেম্বর ছিল মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন। ওই দিনই মিল্টন মনোনয়নপত্র দাখিলে একটি পদত্যাগপত্র দেখান। অথচ এ পদত্যাগপত্র মন্ত্রণালয়ে গৃহীত হতে হবে। গৃহীত হওয়ার আগে মনোনয়ন দাখিল করায় তা বাতিল হয়। এর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আপিলে এসে ওই আসনে প্রার্থিতা ফিরে পান মিল্টন মোর্শেদ। আপিলে নির্বাচন কমিশনের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন ডাব প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আরা বেগম। এ রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রুল জারি করেন। ফলে আপাতত তিনি আর নির্বাচন করতে পারছেন না বলে জানান সেলিনা আক্তার।

তবে এ আসনে জাতীয় পাটির মোহাম্মাদ আলতাফ আলী (লাঙ্গল প্রতীক), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের মো. শহিদুল ইসলাম (মই প্রতীক), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. ফজলুল হক (আম প্রতীক), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) এর মো. মন্তেজার রহমান (কুঁড়ে ঘর) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. শফিকুল ইসলাম (হাত পাখা) এখনও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।