ঢাকা শুক্রবার, ১৮ই এপ্রিল ২০২৫, ৫ই বৈশাখ ১৪৩২


বাংলালিংকের কাছে পাত্তা পাচ্ছে না বিটিআরসি


৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:২১

আপডেট:
১৮ এপ্রিল ২০২৫ ০২:৩৫

রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর প্রায় ৪২ কোটি টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেনি বেসরকারি মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক। আদালতের নির্দেশনা থাকার পরেও কম্পানিটি এক যুগ আগের সেই ভ্যাট পরিশোধ করছে না। ভ্যাট পরিশোধে সময় বেঁধে দিলেও বিটিআরসিকে পাত্তা দিচ্ছে না বাংলালিংক।

বিটিআরসি সূত্র জানায়, মোবাইল অপারেটরগুলো গ্রস আয়ের ওপর বিটিআরসির সঙ্গে একটা অংশ রেভিনিউ শেয়ারিং করে।

বেসরকারি চারটি মোবাইল অপারেটরের মধ্যে বাংলালিংক অন্যতম। এই কম্পানি ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত যে রেভিনিউ শেয়ারিং করেছে, তার ওপর ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ১৬ হাজার ১৭১ টাকা ভ্যাট বিটিআরসিকে পরিশোধ করেনি। এই ভ্যাট পরিশোধের জন্য সর্বশেষ ২০২৪ সালের ২৫ জুন বিটিআরসি বাংলালিংককে চিঠি দেয়। কিন্তু বাংলালিংক এনবিআরের ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট জারি করা দ্বৈত কর নীতি আদেশ অনুযায়ী এই ভ্যাট প্রযোজ্য নয় বলে বিটিআরসিকে জানান। অথচ ওই আদেশের আগের রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর এই ভ্যাট দাবি করছে বিটিআরসি।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, এই ভ্যাট কোনোভাবেই দ্বৈত কর নয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যে আদেশ জারি করেছে, সেই আদেশের আগেই এই ভ্যাট। ফলে বাংলালিংককে এই ভ্যাট দিতেই হবে।

বছরের পর বছর চিঠি দেওয়ার পরও বিটিআরসির আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না বাংলালিংক। তবে বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ বলছে, আইন মেনে তারা বিষয়টি সমাধান করবে।
বিটিআরসি এই ভ্যাট পরিশোধে ২০২৪ সালের ২৫ জুন বাংলালিংককে যে চিঠি দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, আপিল বিভাগ শুনানি শেষে বিটিআরসির পক্ষে রায় দিয়েছেন। অর্থাৎ বাংলালিংককে এই ভ্যাট দিতে হবে। এই ভ্যাট পরিশোধে ২০২৩ সালের ২২ জুন ও ২৪ ডিসেম্বর বাংলালিংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে কর্তন করা ভ্যাট বাংলালিংককে পরিশোধের জন্য ২০২৪ সালের ৫ জুন বিটিআরসি থেকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলালিংক ভ্যাট পরিশোধে সাড়া দেয়নি। পরে ১০ জুন এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলালিংক বিটিআরসিতে একটি আবেদন করে। আবেদনে এনবিআরের ২০১২ সালের ১২ আগস্ট জারি করা বিশেষ আদেশ অনুযায়ী দ্বৈত করনীতিতে রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর ভ্যাট প্রযোজ্য হবে না বলে উল্লেখ করা হয়।

তবে নথিপত্র ও ওই আদেশ বিশ্লেষণ করে বিটিআরসি বলছে, রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর ভ্যাট বা মূসক হিসেবে পাওনা এনবিআরের আদেশ জারির পূর্ববর্তী বা আগের ১৫ মাস সময়ের (২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত)। ফলে বাংলালিংকে আবেদনপত্রে দ্বৈত করের যে দাবি করেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। সেজন্য বাংলালিংক কর্তৃপক্ষকে ভ্যাট হিসেবে ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ১৬ হাজার ১৭১ টাকা পরিশোধ করতেই হবে।

এই ভ্যাট পরিশোধে বাংলালিংককে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে সময় শেষ হলেও বাংলালিংক কোনো ভ্যাট পরিশোধ করেনি। অর্থাৎ এক যুগ পরও বিটিআরসিকে পাত্তা দিচ্ছে না বাংলালিংক।