বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন - বস্ত্রশিক্ষা ও শিল্পোন্নয়নের ইতিহাসে গৌরবময় এক অধ্যায়
বাংলাদেশের বস্ত্রশিক্ষা, গবেষণা ও শিল্পোন্নয়নের ইতিহাসে আজ যুক্ত হলো এক গৌরবময় অধ্যায়। দেশের প্রথম ও একমাত্র সরকারি বস্ত্রপ্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) প্রথম সমাবর্তন ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবারে অত্যন্ত আনন্দঘন ও মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেন, “অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় প্রমাণ করেছে যে বিশেষায়িত শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান কীভাবে জাতীয় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তিতে পরিণত হতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, বুটেক্স আজ বস্ত্র ও পোশাকশিল্পের জন্য দক্ষ, সৎ ও নেতৃত্বগুণসম্পন্ন মানবসম্পদ তৈরির একটি নির্ভরযোগ্য কেন্দ্র।”
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন Profesor Dr. Xungai Wang, চেয়ার প্রফেসর ফাইবার সাইন্স এন্ড টেকনোলজি, হংকং পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি, চীন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। এছাড়াও বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় এর সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সম্মানিত সদস্যবৃন্দ, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ, বিশিষ্ট অতিথি ও অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক বস্ত্রশিক্ষার শতবর্ষী ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে বলেন, “১৯১১ সালে জেলা উইভিং স্কুল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা নানা ঐতিহাসিক ধাপ অতিক্রম করে আজ বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে এক পরিপূর্ণ রূপ লাভ করেছে। তিনি বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনের ভূমিকার কথাও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন, যা এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ও গবেষণার ভিত্তি সুদৃঢ় করেছে।”
সমাবর্তনে সদ্য স্নাতকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা কেবল একটি ডিগ্রির অধিকারী নন; আপনারা বহন করছেন একটি গৌরবময় উত্তরাধিকার এবং দেশের ভবিষ্যৎ শিল্প ও অর্থনীতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার গুরুদায়িত্ব। সততা, পেশাদারিত্ব ও নৈতিকতার সঙ্গে কাজ করে দেশের প্রয়োজনে উদ্ভাবনী সমাধান দেওয়াই হবে আপনাদের প্রধান অঙ্গীকার।”
সি আর আবরার আরও বলেন, “বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, টেকসই উন্নয়ন এবং পরিবেশবান্ধব উৎপাদনের মতো সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেওয়ার সামর্থ্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের মধ্যেই নিহিত রয়েছে।”
অনুষ্ঠানের শেষে মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষকদের নিরলস পরিশ্রম ও অভিভাবকদের ত্যাগের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সদ্য স্নাতকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ, সাফল্য ও কল্যাণ কামনা করেন।
