ঢাকা শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


রাজধানীতে ভয়ংকর মাদক এলএসডিসহ পাচঁজন গ্রেফতার


৩১ মে ২০২১ ১৮:২২

আপডেট:
৩১ মে ২০২১ ১৮:২৫

ভয়ঙ্কর মাদক এলএসডিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী গ্রেফতারের পর এবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে খিলগাঁও থানা পুলিশ। খিলগাঁও সার্কেলের এডিসি মোহাম্মদ নুরুল আমিনের নেতৃত্ব এই অভিযান পরিচালনা হয়। গ্রেফতার শিক্ষার্থীরা হলো- সাইফুল   ইসলাম সাইফ (২০), মনওয়ার  আকিব আনান (২০), নাজমুস সাকিব (২০), বিএম সিরাজুস সালেকীন তপু (২৪) ও নাজমুল ইসলাম (২৪)। গ্রেফতারের সময় তাদের কারও প্যান্টের পকেটে আবার কারও ঘরের আলমারিতে এলএসডি পাওয়া যায়।

রোববার (৩০ মে) রাত ৮টার দিকে মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মো. আব্দুল আহাদ পল্টন থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি বলেন, অবৈধ মাদকদ্রব্য এলএসডি (লাইসার্জিক এসিড ডাই

এডিসি মোহাম্মদ নুরুল আমিন

থ্যালামাইড) কেনাবেচা হবে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খিলগাঁও থানাধীন মালিবাগ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে অভিযান চালিয়ে এলএসডি বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম সাইফ, এসএম মনওয়ার আকিব আনান, মো. নাজমুস সাকিবকে গ্রেফতার করা হয়। উপস্থিত লোকদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে তাদের কাছে অবৈধ মাদকদ্রব্য এলএসডি ও গাঁজা আছে। এরপর সাইফের ডান হাতে একটি স্বচ্ছ জিপ পলিব্যাগে মোড়ানো অবস্থায় ৩ পিস রঙিন প্রিন্টের ব্লট পেপার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন আনুমানিক তিন গ্রাম এবং মূল্য আনুমানিক ৯ হাজার টাকা। আকিবের পরিহিত প্যান্টের ডান পকেট থেকে এক গ্রাম ও নাজমুস সাকিবের হাফ প্যান্টের পকেট থেকে এক গ্রাম ব্লট জব্দ করা হয়। প্রতি গ্রামের মূল্য আনুমানিক তিন হাজার টাকা। এরপর তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা আরও দুই সহযোগীর নাম জানায়। পরে তাদের তথ্যমতে রাজধানীর বারিধারা থেকে নাজমুল ইসলাম ও তপুকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকেও এলএসডি ব্লট ও গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

ডিসি আহাদ বলেন, গ্রেফতাররা জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে তারা সবাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা গত এক বছর ধরে এলএসডি সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত। অনলাইনে মাদক ব্যবসা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল তারা।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তারা আসক্ত হয়ে এলএসডি সেবন শুরু করে। মূলত বিদেশ থেকে এলএসডি মাদক সংগ্রহ করে তারা। রাজধানীতে ১৫টি গ্রুপ রয়েছে যারা এলএসডি বিক্রি করে আসছে। গ্রুপগুলো গত এক বছর ধরেই এই এলএসডি বিক্রি ও সেবনের সঙ্গে জড়িত। আমরা প্রাথমিকভাবে ১৫টি গ্রুপের বিষয়ে জানতে পেরেছি। তারা সবাই সরাসরি ব্যবসা ও সেবনের সঙ্গে জড়িত। অনলাইনের মাধ্যমে এলএসডি মাদক নিয়ে আসত। তবে তাদের শনাক্তকরণ ও গ্রেফতারে কাজ চলছে। গ্রেফতার পাঁচজন একটি গ্রুপের সদস্য।

কোন দেশ থেকে এই গ্রুপটি এলএসডি মাদক নিয়ে আসতো—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, মূলত ইউরোপ থেকে এলএসডি নিয়ে আসত। ১৯৩৮ সালে সুইজারল্যান্ডের একজন বিজ্ঞানী ওষুধ হিসেবে এলএসডি আবিষ্কার করে। এরপর এটির অপব্যবহার হয়ে মাদক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

দেশে এলএসডি কিভাবে আসে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুরিয়ার ও লাগেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দেশে এলএসডি আসে। গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ১৪ থেকে ১৫টি গ্রুপ দেশে এলএসডি আনার সঙ্গে জড়িত। আমরা এই গ্রুপের সব সদস্যকে আইনের আওতায় আনতে পারব বলে আশা করি।

দেশে এই গ্রুপগুলো কত দিন ধরে সক্রিয় আছে?— জানতে চাইলে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা গত এক বছর ধরে এলএসডি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এছাড়া গত এক বছর ধরে তারা এলএসডি সেবন করছে বলে জানা গেছে। অন্যান্য গ্রুপের সদস্যদের গ্রেফতার করলে বুঝতে পারব তারা দেশে কতদিন ধরে সক্রিয়।