কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের অযৌক্তিক প্রস্তাব
কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের একটি ফার্নিচারের দাম ৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা
 
                                প্রকল্পের অসঙ্গতি কোনোভাবেই যেন পিছু ছাড়ছে না মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ‘খিচুড়ি রান্না শেখার’ কেলেঙ্কারির পর এবার কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর অযৌক্তিকভাবে বিভিন্ন উপকরণসহ নানাবিধ ব্যয় দেখিয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।
কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রকল্পটির সঙ্গে পাঁচটি মন্ত্রণালয় জড়িত। এতগুলো মন্ত্রণালয় জড়িত থাকার পরও প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গভিত্তিক ব্যয় বিভাজনে অবাক হয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর বলছে, চারজনকে পুরস্কৃত করতে প্রয়োজন চার কোটি টাকা। এক্ষেত্রে জনপ্রতি পুরস্কৃত করতে খরচ হবে এক কোটি টাকা। এর বাইরেও পাঁচটি ফার্নিচার ক্রয় করতে প্রয়োজন ৪৩ কোটি টাকা। প্রতিটি ফার্নিচারের পেছনে ব্যয় হবে আট কোটি ৬০ লাখ টাকা। এক লাখ সাত হাজার ৩৮৬টি ফ্যাক্স বা ইন্টারনেট অথবা টেলেক্স পাঠাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর বলছে, চারজনকে পুরস্কৃত করতে প্রয়োজন চার কোটি টাকা। এক্ষেত্রে জনপ্রতি পুরস্কৃত করতে খরচ হবে এক কোটি টাকা। এর বাইরেও পাঁচটি ফার্নিচার ক্রয় করতে প্রয়োজন ৪৩ কোটি টাকা। প্রতিটি ফার্নিচারের পেছনে ব্যয় হবে আট কোটি ৬০ লাখ টাকা। এক লাখ সাত হাজার ৩৮৬টি ফ্যাক্স বা ইন্টারনেট অথবা টেলেক্স পাঠাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা
৬০ কর্মকর্তার দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণে ব্যয় হবে ছয় কোটি টাকা। এছাড়া ছয়টি টাকার ছাপযুক্ত স্ট্যাম্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতিটি স্ট্যাম্পে খরচ হবে চার লাখ ৫৮ হাজার টাকা। এমন অসঙ্গতি শুধু নয়, প্রকল্পের পুরো কেনাকাটায় নানা অযৌক্তিক আবদার করা হয়েছে।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে ‘Accelerating and Strengthening Skills for Economic Transformation (ASSET)’ অর্থাৎ ‘অর্থনৈতিক রূপান্তরের জন্য দক্ষতা ত্বরান্বিতকরণ এবং শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এমন আবদার করেছে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ।
প্রকল্পটির জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ২৯২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিশ্ব ব্যাংক ঋণ হিসেবে দেবে দুই হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি অনুমোদনের পর চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ১৮ মার্চ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা করেছে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক বিভাগ।
প্রকল্পটির জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ২৯২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিশ্ব ব্যাংক ঋণ হিসেবে দেবে দুই হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি অনুমোদনের পর চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে
ডিপিপি’র তথ্যানুযায়ী, প্রকল্পের অধীনে ২৪টি জরিপ কাজ পরিচালনা করতে লাগবে ২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ৩৩টি গবেষণায় আট কোটি টাকা, কনসালটেন্সিতে ১৪৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, এক হাজার ঔষধ ও টিকাতে লাগবে দুই কোটি টাকা, গ্যাস ও জ্বালানি খরচবাবদ লাগবে এক কোটি ৩২ লাখ টাকা, প্রশিক্ষণ খাতে ৫৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ৩০ মাস ভেন্যু ভাড়ায় লাগবে দেড় কোটি টাকা, অফিস ভাড়া এক কোটি ২৬ লাখ টাকা, অডিও-ভিডিও/চলচ্চিত্র নির্মাণে চার কোটি ৯৫ লাখ টাকা, বিজ্ঞাপনে ব্যয় হবে ২০ কোটি টাকা, পানির বিল এক কোটি ৩২ লাখ টাকা, বিদ্যুৎ বিল এক কোটি ৩২ লাখ টাকা, উপযোগ সেবার চার্জ এক কোটি ৩২ লাখ টাকা, ৯০টি সেমিনার/কনফারেন্সে ব্যয় হবে ৬০ কোটি ৩০ লাখ টাকা, মোটরযান রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হবে দুই কোটি ৩১ লাখ টাকা, বাড়িভাড়ার ভাতা হিসেবে ধরা হয়েছে তিন কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
এছাড়া, পাঁচ বছরের সম্মানী ভাতায় ব্যয় হবে দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা, ২২০টি প্রকল্পের অনুদানে যাবে এক হাজার ২৫ কোটি টাকা, প্রশিক্ষণ অনুদান যাবে দুই হাজার ১৭ কোটি টাকা, তিনটি আবাসিক ভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮০ কোটি টাকা, পাঁচটি মোটরযান ক্রয়ে লাগবে তিন কোটি ৩৩ লাখ টাকা, আইসিটি সরঞ্জাম ক্রয়ে ব্যয় হবে ৪৮ কোটি টাকা, ১২০টি কম্পিউটার সামগ্রীতে লাগবে এক কোটি ২৪ লাখ টাকা, টেলিযোগাযোগের আট সরঞ্জামাদিতে লাগবে এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা, দুটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং টেলিকমিউনিকেশন সরঞ্জামাদিতে লাগবে ১০ কোটি টাকা, ৩৯টি অফিস সরঞ্জামাদিতে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই কোটি ৮৬ লাখ টাকা, পাঁচটি বিবিধ যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদিতে খরচ হবে ৫০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এভাবে প্রায় সব খাতেই অতিরিক্ত ব্যয় পরিলক্ষিত হয়েছে বলে জানান পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারের বহু প্রতিষ্ঠান জড়িত। এটার বিষয়ে আমি ওইভাবে কোনো তথ্য দিতে পারব না। আরও আলোচনা হবে, তারপর বিস্তারিত বলা যাবে। পাঁচ মন্ত্রণালয়কে নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। সুতরাং এটার বিষয়ে আমি একা কিছু বলতে পারব না
মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর
এ বিষয়ে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যেহেতু সরকারের প্রকল্প তাই সেভাবেই ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, আরও আলোচনা হবে। ব্যয়গুলো নিয়ে ডিটেইলস (পুঙ্খানুপুঙ্খ) আলোচনা করব আমরা।’
‘প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারের বহু প্রতিষ্ঠান জড়িত। এটার বিষয়ে আমি ওইভাবে কোনো তথ্য দিতে পারব না। আরও আলোচনা হবে, তারপর বিস্তারিত বলা যাবে। পাঁচ মন্ত্রণালয়কে নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। সুতরাং এটার বিষয়ে আমি একা কিছু বলতে পারব না।’
শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (পরিকল্পনা) ড. মো. আল-আমিন সরকার বলেন, ‘প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের দিয়ে কিছু ট্রেনিং করানো হবে। ডিপিপি তৈরির ক্ষেত্রে আমাদের মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে আমার জানা নেই। প্রকল্প তাদের, ডিপিপি তারাই করেছে। এখানে আমরা কিছু জানি না।’
প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের দিয়ে কিছু ট্রেনিং করানো হবে। ডিপিপি তৈরির ক্ষেত্রে আমাদের মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে আমার জানা নেই। প্রকল্প তাদের, ডিপিপি তারাই করেছে। এখানে আমরা কিছু জানি না
ড. মো. আল-আমিন সরকার, যুগ্ম সচিব (পরিকল্পনা), শিল্প মন্ত্রণালয়
পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ও আছে। প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গভিত্তিক ব্যয়ের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (পরিকল্পনা) ফররুখ আহম্মদ বলেন, ‘ডিপিপির খাতভিত্তিক ব্যয়ের বিষয়ে আমাদের মন্ত্রণালয় কিছুই জানে না। ডিপিপি প্রস্তুত করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর। এতে যদি সবকিছুর ব্যয় অতিরিক্ত ধরা হয়, তাহলে আমরা ভেটো (নিষেধ করা) দেব। এখানে আমাদের মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার কথা রয়েছে।’
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, ‘এখন প্রকল্পটির বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। আমি প্রকল্পটি নিয়ে মিটিং করেছি। ডিপিপি সংশোধনের জন্য পাঠানো হয়েছে। সংশোধিত ডিপিপি না আসা পর্যন্ত কিছুই বলতে পারব না।’
ডিপিপির খাতভিত্তিক ব্যয়ের বিষয়ে আমাদের মন্ত্রণালয় কিছুই জানে না। ডিপিপি প্রস্তুত করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর। এতে যদি সবকিছুর ব্যয় অতিরিক্ত ধরা হয়, তাহলে আমরা ভেটো (নিষেধ করা) দেব
ফররুখ আহম্মদ, উপসচিব (পরিকল্পনা), প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়
প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা বলা হয়েছে
প্রস্তাবিত প্রকল্পটির মাধ্যমে মহিলা ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশি যুবক ও কর্মীদের ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরির লক্ষ্যে তাদের চাহিদাভিত্তিক দক্ষ জনবল হিসেবে তৈরি করা। ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমসমাজ সৃষ্টি হবে। এর মাধ্যমে এক লাখ যুবক সহায়তা হবে এবং এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- তিনটি অনাবাসিক ভবন নির্মাণ, প্রশিক্ষণ, প্রশিক্ষণ অনুদান, প্রকল্প অনুদান, কনসালটেন্সি, সেমিনার ও কনফারেন্সবাবদ ব্যয়, আইসিটি সরঞ্জামাদি, ফার্নিচার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (টিভিইটি) সেক্টরে কোভিড মোকাবিলা সংক্রান্ত সচেতনতা সৃষ্টি।
আর্থ-সামাজিক বিভাগের শিক্ষা উইং যেসব বিষয়ে জানতে চেয়েছে
১. প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গ্রহণের উদ্দেশ্য, কার্যক্রম ও যৌক্তিকতার বিষয়ে সভায় আলোচনা করতে হবে।
২. অতি সম্প্রতি কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ মোট এক হাজার ৭৪৭ কোটি ৮৮ লাখ (জিওবি ২০৩.৭৬ এবং প্রকল্প সাহায্য ১৫৪৪.১২) টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জুলাই ২০১০ হতে ডিসেম্বর ২০১৯ মেয়াদে কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এসটিইপি প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে। এ পর্যায়ে বর্ণিত প্রকল্পের অর্জন ও সাফল্য এবং প্রস্তাবিত প্রকল্পের সঙ্গে এর সঙ্গতি মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে।
এখন প্রকল্পটির বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। আমি প্রকল্পটি নিয়ে মিটিং করেছি। ডিপিপি সংশোধনের জন্য পাঠানো হয়েছে। সংশোধিত ডিপিপি না আসা পর্যন্ত কিছুই বলতে পারব না
মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, সদস্য, পরিকল্পনা কমিশন
৩. প্রকল্পের আওতায় তিনটি কম্পোনেন্ট বিদ্যমান রয়েছে। প্রকল্পের লিড বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর এবং অংশীদার বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ কাজ করবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে ডিপিপিতে। এক্ষেত্রে লিড এবং প্রতিটি অংশীদার বাস্তবায়নকারী সংস্থার কাজ সম্পর্কে কমিশনকে জানাতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগের কাজসমূহ কীভাবে সমন্বয় করবে সে বিষয়েও স্পষ্টভাবে জানাতে হবে।
৪. প্রকল্পের আওতায় ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটসমূহকে অনুদান দেওয়ার কথা উল্লেখ আছে। এক্ষেত্রে ইনস্টিটিউট নির্বাচনের পদ্ধতি, ইনস্টিটিউটের সংখ্যা এবং ইনস্টিটিউটসমূহের নিকট থেকে কোনো চাহিদা গ্রহণ করা হয়েছে কি না, সে সম্পর্কিত তথ্য সভায় উল্লেখ করা প্রয়োজন।
৫. সেমিনার/কনফারেন্স ব্যয় ৬০ কোটি ৩০ লাখ টাকা, ইন্টারনেট/ফ্যাক্স/টেলেক্স ব্যয় ১০৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং কনসালটেন্সি খাতে ১৩৫৪ জনের জন্য ব্যয়বাবদ ১৪৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব ব্যয়ের যৌক্তিকতা ও নির্ধারণের ভিত্তি সভায় জানাতে হবে।
৬. ডিপিপিতে সম্মানী অনুদান বাবদ দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা, প্রকল্প অনুদানবাবদ এক হাজার ২৫ কোটি টাকা এবং প্রশিক্ষণ অনুদানবাবদ দুই হাজার ১৭ কোটি ২০ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ খাত তিনটি সভায় স্পষ্ট করতে হবে।
৭. তিনটি ‘অনাবাসিক ভবন নির্মাণবাবদ ৩৮৫ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ভবন দুটির শুধু ভার্টিক্যাল এক্সটেনশনের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ভবনটির কত তলা সম্প্রসারিত হবে সে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
৮. প্রস্তাবিত প্রকল্পে ৩৪ জনের বেতন-ভাতা খাতের জন্য ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। জনবল কমিটির ২৪/০২/২০২১ তারিখের সভায় প্রেষণে ১২ জন এবং আউটসোর্সিং নীতিমালা সেবার আওতায় ১৫ জনসহ মোট ২৭ জনবলের সুপারিশ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী জনবল খাতের ব্যয়, ড্রাইভারের সংখ্যা, যানবাহনের সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে।
৯. প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় বিভাজনে বিশ্ব ব্যাংক হতে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে দুই হাজার ৫৮০ কোটি টাকা সংস্থানের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত কোনো সম্মতিপত্র ডিপিপিতে উল্লেখ নাই।
১০. প্রকল্পের উদ্দেশ্যে কোডিড-১৯ মহামারি উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেতনতা সৃষ্টিতে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা উল্লেখ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কী কী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে তার বিস্তারিত বর্ণনা দিতে হবে।
১১. সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতি সংক্রান্ত পরিপত্র অনুযায়ী ফিজিক্যাল কন্টিনজেন্সি খাতে প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের সর্বোচ্চ দুই শতাংশ হারে বরাদ্দ রাখার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এ প্রকল্পে ফিজিক্যাল কন্টিনজেন্সি খাতে তিন শতাংশ হারে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
১২. প্রকল্পে নতুন করে একটি আন্তর্জাতিকমানের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ইনস্টিটিউট কোথায় নির্মিত হবে এবং এক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ প্রাপ্যতা সম্পর্কে মন্ত্রণালয়কে অবগত করতে পারে।

 
                 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    