ঢাকা বুধবার, ১৪ই মে ২০২৫, ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


ডাকের ডিজি ভদ্রের হাজার কোটি টাকার ‘ডাকাতি’


২৩ অক্টোবর ২০২০ ১৯:৩৬

আপডেট:
২৩ অক্টোবর ২০২০ ১৯:৪১

উদ্যোক্তাদের সাড়ে আট হাজার ল্যাপটপের টাকা ডিজি সুধাংশুর পকেটে

ডিজিটাল সেন্টারের অস্তিত্ব না থাকলেও সেসবের নামে তিনি তুলে নিয়েছেন ৫৪০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা

ডাক বিভাগের প্রায় ৫৪১ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের একটি প্রকল্পের ১৬০ কোটি টাকার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি

প্রকল্পের ৩৮০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ের হিসাব পাওয়া গেলেও সেই টাকায় কেনা সরঞ্জাম অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে।

আউটসোর্সিংয়ের কাজে নিয়োজিত জনবলের চেয়ে অতিরিক্ত বিল তুলে আত্মসাৎ করেছেন

ডাক বিভাগের ভবন নির্মাণ প্রকল্পে ৯৯ কোটি টাকার কাজের মধ্যে ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ 

বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণ, পোস্ট ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি প্রকল্পের কেনাকাটা, পয়েন্ট অব সেল (পওস) মেশিন কেনায় অনিয়ম, উদ্যোক্তাদের সাড়ে আট হাজার ল্যাপটপসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ না করে বিল তুলে নেওয়াসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এরই অংশ হিসেবে এরই অংশ হিসেবে গত ১ সেপ্টেম্বর ডাক অধিদপ্তরের ডিজি সুধাংশু শেখর ভদ্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন অভিযোগ অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন। আর গতকাল বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক ও অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) এইচএম গিয়াসউদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

দুদকে জমা হওয়া অভিযোগ থেকে জানা যায়, সুধাংশু শেখর ভদ্র নিজের নামে না রেখে আত্মীয়স্বজনদের নামে অঢেল সম্পদ করেছেন। সারা দেশে উদ্যোক্তাদের মধ্যে সাড়ে আট হাজার ল্যাপটপসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহের কথা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। অথচ বিল ভাউচারের মাধ্যমে এ বাবদ টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

তিনি আউটসোর্সিংয়ের কাজে নিয়োজিত জনবলের চেয়ে অতিরিক্ত বিল তুলে আত্মসাৎ করেছেন। ই-সেন্টার স্থাপন ও ঠিকাদারি কাজে অনিয়মসহ বেশুমার অভিযোগ সুধাংশুর বিরুদ্ধে। ডাক বিভাগের ভবন নির্মাণ প্রকল্পে ৯৯ কোটি টাকার কাজের মধ্যে ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ২০১২ থেকে ’১৭ সালে সম্পন্ন হওয়া এ প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে তাকে দুদক জেরা করেছে।

দুদকের এক পরিচালক বলেন, ‘ডাক বিভাগের প্রায় ৫৪১ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের একটি প্রকল্পের ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। অস্তিত্বহীন কেন্দ্রের নামে অর্থ বরাদ্দ করে এসব অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। প্রকল্পের ৩৮০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ের হিসাব পাওয়া গেলেও সেই টাকায় কেনা সরঞ্জাম অকেজো, নষ্ট ও অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।’

কমিশনের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ডাক বিভাগের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতি বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠিয়েছে। এ প্রতিবেদনের বরাতে দুদকের অভিযোগে বলা হয়, বর্তমান মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র পোস্ট ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি নামে ওই প্রকল্পে বড় ধরনের অনিয়ম করেছেন।

প্রকল্পের আওতায় পোস্টাল ক্যাশ কার্ডধারী গ্রাহকদের সেবা দিতে প্রয়োজনীয় ‘পয়েন্ট অব সেল’ (পওস) মেশিন কেনা হয় ১৭ হাজার পিস, যার মধ্যে মাত্র ৭০৪টি মেশিন ব্যবহার হচ্ছে। ফিঙ্গার ভেইন মেশিন ১০ হাজারটির মধ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্র ৬৪৩টি। এছাড়া প্রকল্প কর্র্তৃপক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা না দেওয়ায় ৫৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকার পওস মেশিন ও ১৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার ফিঙ্গার ভেইন মেশিন কোনো কাজে আসছে না।

অভিযোগ অনুযায়ী, গ্রামীণ পর্যায়ে ডিজিটাল সেবা দিতে ২০১২ সালের ২৪ জানুয়ারি একনেক পোস্ট ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন ডাক বিভাগ ২০১২ থেকে ’১৭ সাল পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। প্রথমে এ প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন ডাক বিভাগের উপমহাপরিচালক মো. আলাউদ্দিন। তার দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর তিন বছর প্রকল্প পরিচালক ছিলেন সুধাংশু শেখর ভদ্র, যিনি বর্তমানে অধিদপ্তরের জিডি।

ডাক বিভাগের প্রায় ৫৪১ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের একটি প্রকল্পের ১৬০ কোটি টাকার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। প্রকল্পের ৩৮০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ের হিসাব পাওয়া গেলেও সেই টাকায় কেনা সরঞ্জাম অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। অস্তিত্বহীন কেন্দ্রের নামে বরাদ্দ করা অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এসংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

পোস্ট ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি নামের ওই প্রকল্পে বড় ধরনের এই অনিয়ম ও লুটপাটের জন্য প্রকল্প পরিচালক ও বর্তমানে ডাক বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) সুধাংশু শেখর ভদ্রকে (এস এস ভদ্র) দায়ী করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনের মন্তব্য অংশে বলা হয়েছে, ওই প্রকল্পের আওতায় পোস্টাল ক্যাশ কার্ডধারী গ্রাহকদের সেবা দিতে প্রয়োজনীয় ‘পয়েন্ট অব সেল’ বা পিওএস (পওস) মেশিন কেনা হয় ১৭ হাজারটি। ওই মেশিনগুলোর মধ্যে মাত্র ৭০৪টি মেশিন ব্যবহার হচ্ছে। অর্থাৎ ৯৫.৮৬ শতাংশ পওস মেশিন ব্যবহৃত হচ্ছে না। আর ফিঙ্গার ভেইন মেশিন ১০ হাজারটির মধ্যে মাত্র ৬৪৩টি মেশিন ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই হিসাবে ৯৩.৫৭ শতাংশ ফিঙ্গার ভেইন মেশিন অব্যবহৃত অবস্থায় আছে। এ ছাড়া প্রকল্প কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা না দেওয়ার কারণে ৫৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকার পওস মেশিন ও ১৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার ফিঙ্গার ভেইন মেশিন কোনো কাজে আসছে না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনসাধারণকে ডিজিটাল সেবা দিতে ২০১২ সালের ২৪ জানুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) পোস্ট ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিনিউটি প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়।

প্রকল্পটির লক্ষ্য ছিল কম্পিউটারের ওপর মৌলিক প্রশিক্ষণ, বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত জনগণকে ব্যাংকিং সুবিধা দেওয়া, ই-কমার্সের সেবা দেওয়া, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ভাতা প্রদান, বীমা পলিসি বিক্রয় এবং প্রিমিয়াম আহরণ ও বিতরণ করা, ই-বিজনেস সম্প্রসারণ, টেলিমেডিসিন সেবা প্রদান, কৃষি তথ্য সেবা, বালাই ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি সেবাসহ অন্যান্য ই-সেবা দেওয়া।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন ডাক বিভাগ ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ বছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। প্রথমে প্রকল্পটির পরিচালক ছিলেন ডাক বিভাগের উপমহাপরিচালক মো. আলাউদ্দিন। তিনি প্রথম দুই বছর এই দায়িত্ব পালন করলেও পরের তিন বছর প্রকল্প পরিচালক ছিলেন সুধাংশু শেখর ভদ্র। এখন ডাক বিভাগের মহাপরিচালক হলেও উপমহাপরিচালক থাকাকালে তিনি ওই প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন। তাঁর সময়েই প্রকল্পের মূল কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রকল্প প্রতিবেদনে সংগ্রহ পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের সাড়ে আট হাজারটি পোস্ট অফিসের জন্য প্রকল্পের আওতায় ৫৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকায় ১৭ হাজারটি পওস মেশিন, ১৯ কোটি ৬২ লাখ টাকায় ১০ হাজার ফিঙ্গার ভেইন মেশিন, ১৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকায় আট হাজার ১০০ ফটো প্রিন্টার, দুই কোটি তিন লাখ টাকায় ৩২৬টি কম্পিউটার ও একসেসরিজ, ১১ কোটি ৫৭ লাখ টাকায় সাত হাজার ২৫০টি লেজার প্রিন্টার, ১০২ কোটি ৩৪ টাকায় ২১ হাজার ৪৫টি দোয়েল ল্যাপটপ, ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকায় সাত হাজার ৫১০ সেট ফার্নিচার, ৪৭ কোটি ২৩ লাখ টাকায় এক হাজার ৫০০টি সোলার সিস্টেম, পাঁচ কোটি ৩৬ লাখ টাকায় একটি জিপসহ ১০টি ডবল কেবিন পিকআপ, ১৫ কোটি ১১ লাখ টাকায় ইউপিএসসহ ৫০০টি সার্ভার, চার কোটি ৪৭ লাখ টাকায় ৫০০টি চিপ বেইজ কার্ড ও দুই কোটি ৭৩ লাখ টাকায় আট হাজার ২৭০টি দোয়েল ওয়েভ ক্যাম কেনা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনুমোদিত প্রকল্পে ৫৪০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হলেও প্রকৃত ব্যয় হয়েছে ৩৮০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে ১৬০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে দাবি করা হলেও প্রকল্প শেষে যে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে সেখানে সাশ্রয়ের বিষয়ে কোনো মন্তব্য নেই। এই টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দেওয়া হয়েছে কি না সেটাও উল্লেখ করা হয়নি। প্রকল্পটি ২০১৭ সালে শেষ হলেও টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস) ও আইটিসিএলের সরবরাহ চালানে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের উল্লেখ রয়েছে। অর্থাৎ কোন কোন সরঞ্জাম প্রকল্প সমাপ্তির দুই বছর পরে সরবরাহ করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ১৭ হাজার পওস মেশিনের মধ্যে ১৪ হাজার ১২৯টি মেশিন মাঠপর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি দুই হাজার ৮৭১টি মেশিন ডাক মহাপরিচালকের দপ্তরে পড়ে আছে। মাঠপর্যায়ে পাঠানো মেশিনগুলো অব্যবহৃত ও অবিতরণকৃত অবস্থায় পড়ে আছে। তদন্তকালে ডাক বিভাগের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে ৮৫০টি পওস মেশিন ও ৬০০টি ফিঙ্গার ভেইন মেশিন প্যাকেটবন্দি অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ডাক অধিদপ্তরের ৪০৯টি পওস মেশিন স্থানীয় সরকারের ইনকাম সাপোর্ট প্রগ্রাম ফর দ্য পুওরেস্ট (আইএসপিপি)-যত্ন প্রকল্পে দেওয়া কতটা যৌক্তিক-কার্যকর তা পর্যালোচনার দাবি রাখে বলে মন্তব্য করেছে তদন্ত কমিটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, কেনাকাটা থেকে শুরু করে পোস্ট ই-সেন্টার স্থাপনসহ প্রকল্পের সব ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে অনেক ই-সেন্টার কাগজে থাকলেও বাস্তবে সেগুলোর অস্তিত্বই নেই এবং সেই সব সেন্টারের নামে বরাদ্দ করা টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, একই ডাকঘরের নাম একাধিকবার লিখে সাড়ে আট হাজার ডাকঘরের তালিকা পূর্ণ করা হয়। নামে-বেনামে খরচ দেখিয়ে প্রকল্পের অর্থ লোপাট করেছেন প্রকল্প পরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র। সেই অভিযোগ তদন্তে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মুসলেহ উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে সদস্য ছিলেন একই বিভাগের উপসচিব (প্রশাসন-২) মো. আমিনুল হক ও উপসচিব (ডাক-১) সাজ্জাদ হোসেন। ওই কমিটি তদন্ত করে বড় ধরনের দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে। পরবর্তী সময়ে এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক এরই মধ্যে মহাপরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

ডাক বিভাগের এই অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ওই বৈঠকে। গত  জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে কমিটির সদস্যরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁরা ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্রকে অপসারণের সুপারিশ করেন। মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্রের উপস্থিতিতে এই আলোচনা হলেও তিনি কোনো কথা বলেননি।

সভাপতির অনুপস্থিতিতে সংসদীয় কমিটির ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সদস্য বেনজির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ডাক বিভাগের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনেক অভিযোগ থাকায় কমিটি তাঁকে পদ থেকে অপসারণের সুপারিশ করেছে। কারণ দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার পরও তিনি পদে থাকায় জনগণের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও তিনি (মহাপরিচালক) গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থিত হওয়া জনমনে সন্দেহ আরো বেড়েছে।’

দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য সুধাংশু শেখর ভদ্রের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।