গ্রেফতারের আতঙ্কে জি কে শামীমের সহযোগীরা!

চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে র্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর আতঙ্কে আছে তার সহযোগীরাও!
এদের মধ্যে অন্যতম হলো মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ফাহিম খান রনি ,
মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ সহ একাধিক নেতা ।
এরাও জিকে শামীমের মত পরে ভোল পাল্টিয়ে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। বাগিয়ে নেন দলের পদ। হয়ে ওঠেন প্রভাবশালী নেতা। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাদাঁবাজি ,টেন্ডারবাজি করে হয়ে উঠেন কোটিপতি।
এর আগে, মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদকে গ্রেফতারের পর জি কে শামীম নাম উঠে আসে।
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিও তিনি। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সন্মানদী ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে শামীম। আফসার উদ্দিন মাস্টার ছিলেন হরিহরদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিন ছেলের মধ্যে জি কে শামীম মেজো।
ছোটখাটো মানুষ হলেও শামীমের ক্ষমতার দাপট ছিল আকাশসমান। রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় জি কে শামীম প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত। গণপূর্ত ভবনের বেশির ভাগ ঠিকাদারি কাজই জি কে শামীম নিয়ন্ত্রণ করেন। বিএনপি-জামায়াত শাসনামলেও গণপূর্তে শামীম ছিলেন ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি।
জি কে শামীম একসময় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ক্যাডার ছিলেন। বিএনপির আমলে জি কে শামীমের ভয়ে মতিঝিল, পল্টন, শান্তিনগরের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়িয়েছেন। সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজি ছিল তার পেশা। ওই সময় মির্জা আব্বাসের ডানহাত হিসেবে গণপূর্ত ভবনের সব টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করেন।
প্রতিটি সরকারি কাজের টেন্ডার ছিল তার নিয়ন্ত্রণে। এক সময় তিনি ‘টেন্ডার শামীম’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
জানা যায়, ছয়জন অস্ত্রধারী দেহরক্ষীর প্রটেকশনে চলেন জি কে শামীম। সবার হাতেই শটগান। গায়ে বিশেষ সিকিউরিটির পোশাক। তাদের একেকজনের উচ্চতা প্রায় ছয় ফুট। যাকে মাঝখানে রেখে তারা পাহারা দেন তিনি উচ্চতায় পাঁচ ফুটের কিছু বেশি।
তবে যুবলীগের কেন্দ্রীয় দফতর জানায়, জি কে শামীম যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো পদে নেই। অনুমোদিত কমিটির কোথাও জি কে শামীমের নাম নেই। কেউ যদি মুখে মুখে নিজেকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা বলে থাকেন সেটা তো হবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় যুবলীগের এক নেতা বলেন, তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে আছেন। মূল কমিটি অনুমোদনের পর বেশ কয়েকজনকে সহ-সম্পাদক থেকে শুরু অনেক পদই দেয়া হয়েছে। আর আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক এস এম মেজবাহ হোসেন বুরুজ ২০১৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর মারা যাওয়ার পর শূন্য পদটি দেয়া হয়েছে জি কে শামীমকে। শামীম ওই পদ ব্যবহার করে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন।