ঢাকা মঙ্গলবার, ৭ই মে ২০২৪, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১


সবার জন্য সুস্থ কিডনী অর্জনে করণীয়


১৪ মার্চ ২০১৯ ২০:৪০

আপডেট:
৭ মে ২০২৪ ১৯:৩০

সবার জন্য সুস্থ কিডনী অর্জনে করণীয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহসভাপতি পদে পরাজয়কে রাজনৈতিক শিক্ষা হিসেবে ধরে নিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেছেন, তিনি ভোটে হারলেও তার প্রতি শিক্ষার্থীদের ভালোবাসার জয় হয়েছে।

সামনের দিনগুলোতে এই ভালোবাসার রাজনীতির পথ ধরে চলতে চান তিনি। নিজের পরাজয়ের ক্ষেত্রে কোনো কোনো প্রার্থীর একক প্রচারকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন তিনি। ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি (ভাইস প্রেসিডেন্ট) নুরুল হক নুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনা করে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করবেন বলে প্রত্যাশা এই বিজিত প্রার্থীর। একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ছাত্রলীগের সভাপতি। গত ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে ছাত্রলীগের মনোনীত প্রার্থী শোভন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার

সংরক্ষণ পরিষদের প্রার্থী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হকের কাছে ১ হাজার ৯৩৩ ভোটে হেরেছেন। প্রায় তিন দশক পর অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে নুর পেয়েছেন ১১ হাজার ৬২ ভোট।

এই নির্বাচনের ফলসহ সাম্প্রতিক ছাত্র রাজনীতি নিয়ে বুধবার দেশ রূপান্তরের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন শোভন। ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে ভিপি (ভাইস প্রেসিডেন্ট) পদে পরাজিত হলেও আমার কোনো কষ্ট নেই। আমি শিক্ষার্থীদের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। ভালোবাসার রাজনীতি করতে চাই।’

নতুন ভিপি নুরুল হকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নুরের কাছে আহ্বান থাকবে দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর চাওয়া-পাওয়া বিবেচনায় রেখে পথ চলবেন। উসকানিমূলক রাজনীতির চর্চা থেকে বেরিয়ে আসবেন। শিক্ষার্থীরা যে রায় দিয়েছে, তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে ছাত্রকল্যাণে কাজ করবেন।’

পরাজয়কে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়েছেন জানিয়ে শোভন বলেন, ‘রাজনীতির সার্থকতা কেবল পদ-পদবি নয়, মানুষের ভালোবাসাও। সেটা কেবল আমিই পেয়েছি। ভিপি পদে পরাজিত না হলে হয়তো বুঝতামই না আমার প্রতি শিক্ষার্থীদের ভালোবাসার কথা।’

পরাজয়ের কারণ নিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক কাঠামো না থাকা, ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রচারে ব্যস্ত ছিল প্যানেলের অনেকেই। কিন্তু আমি নিজের কথা চিন্তা না করে সামষ্টিকভাবে সংগঠনের কথা চিন্তা করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্যানেলের জন্য ভোট চেয়েছি। কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকাও ডাকসু নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।’

ডাকসু নির্বাচনের দিন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও রোকেয়া হলের ব্যালট পেপার উদ্ধারের ঘটনা তার জয়ের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে দাবি করে শোভন বলেন, ‘ছাত্রলীগের প্যানেল ঠেকাতে এই দুই হলের ঘটনা ছাত্রলীগের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ছদ্মবেশীরা ঘটিয়েছে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনেকেই জড়িত। এই দুই হলের ঘটনা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভেতরে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। অথচ এর সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত নয়।’

তিনি বলেন, “আমার পরাজয়ের মাধ্যমে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছি। তাই বলব না হেরে গেছি। হারার মাধ্যমে জিতেছি আমি। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ সমস্যাও পরাজয়ের পেছনে কাজ করেছে, ছাত্রলীগের ভাইপার্টি গ্রুপ জড়িত আছে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ভাই লীগ নয়, সত্যিকার ছাত্রলীগ হবে আগামীর ছাত্রলীগ। এখন থেকে ছাত্রলীগে ‘ভাই লীগের’ রাজনীতি আর চলবে না। ছাত্রলীগ হবে একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সংগঠন। জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে চাইবেন ছাত্রলীগ সেইভাবে চলবে।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘ছাত্রলীগ দুর্নামের রাজনীতি করবে না, রক্তপাতের রাজনীতি ছাত্রলীগে চলবে না। ছাত্রলীগের আগামীর রাজনীতি হবে ভালোবাসার। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হবে। রক্তে যাদের ছাত্রলীগ তাদেরই নেতৃত্বে আনা হবে।’

ভিপি পদে শোভন পরাজিত হলেও জিএস ও এজিএসসহ বেশিরভাগ পদেই ছাত্রলীগের প্রার্থীদের বিপুল বিজয় হয়েছে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ছাত্রলীগের কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শোভনের পরাজয় না মেনে তারা ভিপি পদে কারচুপির অভিযোগ তুলে পুনর্নির্বাচনেরও দাবি তোলেন। ১২ মার্চ ভোররাত থেকে পরদিন বিকেল পর্যন্ত চলে তাদের বিক্ষোভ। এ সময় ভিসির বাসভবনও অবরোধ করে রাখেন তারা। বিষয়টি সামাল দিতে শোভনকে গিয়ে আবেগঘন বক্তব্য দিয়ে নিবৃত্ত করতে হয় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের। নির্বাচনের ফল মেনে তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। শেষ পর্যন্ত শোভনের অনুভূতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে তারা বিক্ষোভ থেকে সরে আসেন। এরপর শোভন টিএসসিতে গিয়ে বিজয়ী নুরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন।