ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯শে আগস্ট ২০২৫, ৪ঠা ভাদ্র ১৪৩২


দেখামাত্র গুলির নির্দেশ

বার্তা ফাঁসের অভিযোগে পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার


প্রকাশিত:
১৮ আগস্ট ২০২৫ ১২:৩৮

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজের ওয়্যারলেসে দেওয়া বক্তব্য ফাঁসের অভিযোগে অমি দাশ নামে এক পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত চট্টগ্রামের খুলশী থানায় কর্মরত ছিলেন।

গতকাল রবিবার (১৭ আগস্ট) রাতে খুলশী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা করা হয়েছে। তিনি পুলিশের টেলিকম ইউনিটের কনস্টেবল।

চট্টগ্রামের খুলশী থানার ওসি মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ওয়্যারলেসে বার্তা ফাঁসের অভিযোগে অভি দাশ নামে এক কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে খুলশী থানায় অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা করা হয়েছে।’

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে গত সোমবার (১১ আগস্ট) চট্টগ্রাম মহাগর বন্দর থানার এক কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন। পরে গত মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ওয়্যারলেসে অস্ত্রধারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ প্রদান করেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। তার এই বার্তা ওয়্যারলেসসহ ভিডিও করেন অভিযুক্ত। পরবর্তী সময়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও চিত্রটি ছড়িয়ে দেন। এরপরই সিএমপির পক্ষ থেকে ওই বার্তা ফাঁসকারী ব্যক্তিকে খোঁজা শুরু হয়।

ফাঁস হওয়া ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, কোনো একটি ভবনের ভেতর থেকে ভিডিওটি রেকর্ড করা হয়েছে। ৩ মিনিট ৯ সেকেন্ডের ভিডিও চিত্রে একজনকে হাতে ওয়াকিটকি ধরে রাখতে দেখা যায়।

গত সোমবার (১১ আগস্ট) রাত ২টায় চট্টগ্রাম মহানগরের সল্টগোলা ক্রসিং ইশান মিস্ত্রি হাটসংলগ্ন সড়কে মিছিল করে আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের হামলায় পুলিশের বন্দর থানার এসআই আবু সাঈদ ওরফে রানা গুরুতর আহত হন।

পরদিন মঙ্গলবার রাতে ওয়্যারলেসে সিএমপির সব সদস্যের উদ্দেশে মৌখিক নির্দেশনায় সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে যে অস্ত্রের প্রাধিকার ছিল, ওই প্রাধিকার অনুযায়ী, থানার মোবাইল পার্টি, প্যাট্রল পার্টি, ডিবির টিমসমূহ ও সব ফোর্স অস্ত্র ক্যারি করবে। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া এবং লাইভ এমুনেশন ছাড়া কোনো প্যাট্রল পার্টি, মোবাইল পার্টি, ডিবির পার্টি, চেকপোস্ট পার্টি বের হবে না। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগের প্রাধিকার অনুযায়ী, লাইভ এমুনেশন ছাড়া কেউ বের হবে না। প্রাধিকার অনুযায়ী অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং স্যুট পরে তারপর ডিউটিতে যাবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বন্দর থানার একজন এসআই গুরুতর আহত হয়েছেন। ভবিষ্যতে আরো বড় ঘটনা ঘটতে পারে। বন্দর থানার অফিসার যে পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন, তার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়। কোনো টহলদল যেন লাশ হয়ে ফিরে না আসে। কোনো টহল পার্টির সামনে কেউ অস্ত্র বের করলে, সেটা ধারালো অস্ত্র হোক বা আগ্নেয়াস্ত্র, তাৎক্ষণিকভাবে গুলি করতে হবে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকা চলবে না। দণ্ডবিধির ৯৬ থেকে ১০৬ ধারা অনুযায়ী প্রতিটি পুলিশ কর্মীর আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।’