ঢাকা শুক্রবার, ৫ই ডিসেম্বর ২০২৫, ২১শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২


ম্যানগ্রোভ বন কেটে চিংড়িঘের তৈরি না করার আহ্বান- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার


প্রকাশিত:
৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০১:২৫

ম্যানগ্রোভ বন কেটে চিংড়িঘের তৈরি না করার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেছেন, উপকূলীয় পরিবেশ সুরক্ষায় ম্যানগ্রোভ বন অপরিহার্য।

৩ ডিসেম্বর ২০২৫ বুধবার রাতে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফইএ) এবং পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) আয়োজিত “Transforming Policy Support for Reviving Bangladesh's Shrimp Sector” -শীর্ষক নীতি সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, চিংড়িতে জেলি ব্যবহারসহ নানা অভিযোগের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের রপ্তানি সংকুচিত হয়েছে। যা দেশের জন্য বড় ক্ষতি। মাঠপর্যায়ে বাস্তব তথ্য সংগ্রহের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, মাঠের বাস্তবতা না শুনে সঠিক নীতি নির্ধারণ সম্ভব নয়।

সামুদ্রিক মাছের মজুত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে উপদেষ্টা বলেন, অবৈধ, অনিয়ন্ত্রিত ও অতিরিক্ত আহরণের ফলে গত সাত বছরে সাগরে মাছের মজুত ৭৮ শতাংশ কমেছে—যা অত্যন্ত ভয়াবহ। জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।

মৎস্য খাতের বিদ্যুৎ বিল বৈষম্য বিষয়ে তিনি বলেন, "খাদ্য উৎপাদনকারী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতকে শিল্প শ্রেণীর মতো বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়—যা বৈষম্য। এক বছর ধরে এ সমস্যার সমাধানে কাজ করছি। আশা করছি শিগগিরই বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ ছাড় মিলবে।” সুদের হার কমানো ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে তিনি জানান, একটি বিশেষায়িত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংক স্থাপনের প্রস্তাব বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তি, দক্ষতা বৃদ্ধি ও পরিবেশবান্ধব চাষাবাদে জোর দিলে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদকে পূর্ণাঙ্গ স্বতন্ত্র সেক্টর হিসেবে স্বীকৃতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, এটি সাব-সেক্টর নয়, পূর্ণাঙ্গ সেক্টর। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈষম্য দূরীকরণে ইতোমধ্যে অগ্রগতি হয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, এ খাতে অর্থায়নই একমাত্র সমাধান নয়। উৎপাদনশীলতা কম হওয়াই বড় সমস্যা। প্রকৃত উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

বক্তারা বলেন, নব্বইয়ের দশকে চিংড়ি খাত দেশের অন্যতম রপ্তানি খাত হলেও এখন অনেক পিছিয়ে পড়েছে। এ খাতের পুনরুত্থানে শিল্পখাতের মতো প্রণোদনা দাবি করে রপ্তানিকারকেরা বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ ছাড়, নগদ সহায়তা ও তহবিল গঠনের আহ্বান জানান।

বিএফএফইএ’র প্রেসিডেন্ট মোঃ শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো: আবদুর রউফ, বিএফএফইএ’র সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট মোঃ তারিকুল ইসলাম জহির। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই এর গবেষণা পরিচালক ড. বজলুল হক খন্দকার। আলোচনা শেষে সিমার্ক (বিডি) লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ইকবাল আহমেদ সার্বিক আলোচনার সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরেন।