সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ঢাকা: দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। র্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও অপরাধী ধরতে মাঠে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাত থেকে বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলবে।
গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ভোটের মাঠে তৎপর রয়েছে। এরই মধ্যে বিজিবির ৭৫ প্লাটুন সদস্য ঢাকার দুই সিটিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করতে টহল দিচ্ছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে অন্তত চারটি অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এরমধ্যে গত শনিবার (২৫ জানুয়ারি) লালবাগ এলাকা থেকে আশিকুর রহমান নামে যে যুবককে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়েছিল, সে জানিয়েছে, এসব গুলি ও আগ্নেয়াস্ত্র ভোটের মাঠে প্রভাব বিস্তারের জন্য সরবরাহ করতেই সীমান্ত এলাকা থেকে আনা হয়েছিল।
এরপর গত মঙ্গলবার মোহাম্মদপুর থেকে অস্ত্রসহ একজন, বুধবার ইশরাকের পিএস আরিফুর রহমানকে অস্ত্র ও ৫০ রাউন্ডগুলি এবং শুক্রবার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সরোয়ারকে অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, ভোটের মাঠে কোনো প্রকার অবৈধ অস্ত্র যেন ব্যবহার না হয় সে জন্য সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্যরা। গত কয়েকদিন সুনির্দিষ্ট করে কিছু এলাকায় অভিযান চালানো হলেও শুক্রবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানোর কথা রয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সবকটি ইউনিটকে মাঠে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা থানা পুলিশের সহযোগিতায় স্ব স্ব এলাকার আবাসিক হোটেল ও মেসগুলোতে অভিযান চালাবে। এ সময় সন্দেহজনক কাউকে পাওয়া গেলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, এখন সময় এসেছে রাজধানীতে যারা অপ্রয়োজনীয় রয়েছেন, যারা কাজ ছাড়া রয়েছেন, তাদের ঢাকা ছাড়ার। ভোটে কাউকে অস্ত্রের খেলা খেলতে দেওয়া হবে না। কারও রক্তচক্ষু উপেক্ষা করা হবে না। ভোটের মাঠে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে র্যাব প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান র্যাবের ডিজি।
একইদিন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, অনেকেই বাইরে থেকে নানা কাজে ঢাকায় এসেছেন। তাদের তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি। সুনির্দিষ্ট তথ্য নিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ অভিযান সাধারণ নাগরিকদের জন্য নয়। কাউকে হয়রানি করার জন্য এ অভিযান নয়। এ অভিযান অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও অপরাধীদের জন্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন
আমাদের দিনকে বলেন, ‘আগামীকাল ভোটগ্রহণ হবে। সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের কাজ। ভোটে কোনো অস্ত্রধারী প্রভাব বিস্তার করতে না পারে যাতে সে জন্য কাজ করা হচ্ছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ আবাসিক হোটেল ও মেসগুলোতে অভিযান না চালালে সেখানে অপরাধী লুকিয়ে থাকতে পারে।’
এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে রাজধানীর দুই সিটির কেন্দ্রে কেন্দ্রে, প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ অফিসার, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা যাওয়া শুরু করেছে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা টহল দিচ্ছে। চেকপোস্ট বসিয়ে কোথাও কোথাও তল্লাশি চালানো হচ্ছে।