ঢাকা শনিবার, ১২ই জুলাই ২০২৫, ২৯শে আষাঢ় ১৪৩২


ভূমিকম্পের পর বাড়িতে লুটপাট, ৫ জনকে পিটিয়ে হত্যার পর পোড়াল জনতা


প্রকাশিত:
১২ জুলাই ২০২৫ ১৭:৪৮

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকা ও গাড়ি। ছবি: এএফপি

লাতিনের দেশ গুয়াতেমালায় ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়ার পর লুটপাটের অভিযোগে পাঁচজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয় একটি গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী গুয়াতেমালার সিটির দক্ষিণ-পশ্চিমে সাকাতেপেকেজ বিভাগে অবস্থিত একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার রাতে এএফপিকে পুলিশের মুখপাত্র সিজার মাতেও জানান, স্থানীয়দের অভিযোগ—ওই পাঁচজনকে রাতে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকার বিভিন্ন ঘরে চুরি করতে দেখা যায়। ভূমিকম্পের পর অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে কিংবা আত্মীয়দের বাড়িতে থাকছিলেন, সেই সুযোগেই এ ঘটনা ঘটে।

পাঁচজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলার বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশের মুখপাত্র মাতেও বলেন, ‘চুরি করা যেমন বেআইনি, তেমনি বিচারবহির্ভূতভাবে কাউকে পিটিয়ে মারা বা গণপিটুনিও একটি অপরাধ।’ তবে তিনি এই বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি।

গুয়াতেমালার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সান্তা মারিয়া দে হেসুস পৌর এলাকার বাসিন্দারা গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অভিযুক্তদের খুঁজে বের করেন এবং পরে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে গেলে তা ঠেকিয়ে দেন। এরপর স্থানীয়রা লাঠি ও পাথর দিয়ে মারধর করে পাঁচজনকে এবং পরে সেখানেই আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেন।

এর আগে, গত মঙ্গলবারের ভূমিকম্পে গুয়াতেমালায় অন্তত সাতজন মারা যান। এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ছিল সান্তা মারিয়া দে হেসুস। এই এলাকাটিতে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পে আদিবাসী মায়া জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত সান্তা মারিয়া দে হেসুস বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং ভূমিধসের কারণে আশপাশের এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

গুয়াতেমালায় অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনা হলে প্রায়ই এ রকম বিচারবহির্ভূত ‘গণপিটুনির’ ঘটনা ঘটে থাকে। স্থানীয় একটি বেসরকারি সংগঠনের হিসাব অনুযায়ী, ২০০৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশে এই ধরনের ঘটনায় ৩৬১ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩৯৬ জন আহত হয়েছেন।

ভূমিকম্পের পরপরই সরকার ওই এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা কনরেড জানিয়েছে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর থেকে প্রাপ্ত সোলার ল্যাম্প, বালতি, মাদুর, মশারি, কম্বল ও রান্নার সামগ্রীসহ ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার আরেক বিবৃতিতে কনরেড জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে তারা আরও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।