ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির জেরে শেয়ারবাজারে পতন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার উপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ায় বিশ্ববাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তার এই ঘোষণার ফলে শুক্রবার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে।
নিউইয়র্ক থেকে এএফপি জানায়, ট্রাম্প ১ আগস্টের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি না হলে শুল্ক আরোপ করবেন বলে সরকারগুলোর কাছে ২০টিরও বেশি চিঠি পাঠিয়েছেন। এতে বাজারের আগের ইতিবাচক প্রত্যাশা হঠাৎ নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
অন্যদিকে, বিটকয়েনের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। যা সর্বোচ্চ ১১৮,০০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
ডলার অন্যান্য প্রধান মুদ্রার তুলনায় শক্তিশালী এবং তেলের দামও উর্ধ্বমুখী ছিল।
ওয়াল স্ট্রিটের তিনটি প্রধান সূচকই পতনের মুখে পড়ে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক রেকর্ড উচ্চতা থেকে পিছিয়ে আসে, তবে পতন ছিল তুলনামূলকভাবে সীমিত।
অনেক বিনিয়োগকারী এখনো ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি বাস্তবায়িত হবে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করছেন।
৫০ পার্ক ইনভেস্টমেন্টের বিশ্লেষক অ্যাডাম সারহান বলেন, ‘আমরা এখনো বড় ধরনের নতুন শুল্ক কার্যকর হতে দেখিনি। যা বিনিয়োগকারীদের দ্বিধা প্রকাশ করে।’
অক্সফোর্ড ইকোনমিক্স এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলোকে আরও শুল্ক নাটকীয়তা” বলে অভিহিত করেছে। তারা আশঙ্কা করেছে, কানাডার উপর শুল্ক আরোপের হুমকি বাজারকে অস্থির করে তুলতে পারে।
ইউরোপের বিনিয়োগকারীরাও ট্রাম্পের নতুন শুল্ক পরিকল্পনার দিকে নজর রাখছেন। ফলে প্যারিসের সূচক ০.৯ শতাংশ এবং ফ্রাঙ্কফুর্টের সূচক ০.৮ শতাংশ কমেছে।
বিশ্লেষক প্যাট্রিক ও’হেয়ার বলেন, ‘পরিস্থিতি এখনো পরিষ্কার নয়, কারণ বাজার এখনো এসব হুমকিকে কৌশলগত আলোচনার অংশ হিসেবে দেখছে।’
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প আরও বলেন, কানাডা ৩৫ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হবে, অন্যদিকে অন্যান্য দেশগুলোর উপরও শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ পর্যন্ত করা হবে।
তিনি আরও জানান, তামার আমদানিতে ৫০ শতাংশ এবং ওষুধে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। পাশাপাশি ব্রাজিলের পণ্য আমদানিতে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকিও দেন।
হোয়াইট হাউস বলেছে, এসব পদক্ষেপ মার্কিন অর্থনীতিকে ‘দীর্ঘদিনের অবহেলার হাত থেকে রক্ষা করার প্রচেষ্টার অংশ।
এপ্রিল মাসে ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার ফলে বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলেও পরে তা স্থগিত হওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়। সর্বশেষ ঘোষণাগুলোর প্রভাব তুলনামূলক ভাবে কম হয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি মে মাসে অপ্রত্যাশিতভাবে সংকুচিত হয়েছে। এটি টানা দ্বিতীয় মাসের পতন। ফলে লন্ডনের এফটিএসই ১০০ সূচক ও ব্রিটিশ পাউন্ডের মান কমেছে।
এশিয়ার বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। হংকং বেড়েছে, টোকিওতে পতন হয়েছে তবে সাংহাই সূচক প্রায় অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে, লেভি স্ট্রস অ্যান্ড কোং ৬.৪ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি মুনাফাও বাড়িয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১১.৩ শতাংশ বেড়ে গেছে, বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপে ডেনিম ব্যবসায় শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির কারণে।