ঢাকা মঙ্গলবার, ৬ই মে ২০২৫, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩২


গাজা দখল করে বাসিন্দাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেতানিয়াহুর


৬ মে ২০২৫ ১১:৪৫

আপডেট:
৬ মে ২০২৫ ১৪:৫০

গাজা থেকে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছেন স্থানীয়রা। ছবি : সংগৃহীত

গাজা দখল করে বাসিন্দাদের স্থানান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি উপত্যকায় একটি নতুন, আরও তীব্র সামরিক অভিযান শুরুর কথা জানিয়েছেন।

সোমবার (০৫ মে) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন যে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল একটি নতুন, আরও তীব্র সামরিক অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে। এই অভিযানের লক্ষ্য হবে হামাসকে পরাজিত করা। তবে তিনি এ বিষয়ে স্পষ্ট করেননি যে গাজার কতটুকু এলাকা ইসরায়েলি বাহিনী দখলে নেবে।

সোমবার এক হিব্রু ভাষার ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, গাজার জনগণকে তাদের নিরাপত্তার জন্য সরিয়ে নেওয়া হবে।

গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৫২,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে হাজার হাজার শিশু রয়েছে। এ ছাড়া এ হামলায় প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

নেতানিয়াহু আরও বলেন, ইসরায়েলি সৈন্যরা গাজায় যাবে না, অভিযান চালাবে না এবং তারপর পিছু হটবে না। আমাদের উদ্দেশ্য তার সম্পূর্ণ বিপরীত।

ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা সোমবার সর্বসম্মতভাবে একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যাতে গাজায় অভিযান সম্প্রসারণ, রিজার্ভ বাহিনী ডাকা এবং মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোকে জানিয়েছেন, এই পরিকল্পনায় গাজা উপত্যকার সম্পূর্ণ সামরিক দখলের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

রয়টার্স জানায়, অভিযানটি গাজার সম্পূর্ণ দখল পর্যন্ত গড়াতে পারে। এএফপি-কে এক সূত্র জানায়, পরিকল্পনায় গাজার দখল ও সেখানে থাকা জনগণকে দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সূত্রটি আরও বলে, নেতানিয়াহু এখনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই বিতর্কিত পরিকল্পনাকে সামনে এগিয়ে নিচ্ছেন, যেখানে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েলের এই পরিকল্পনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, এই পরিকল্পনা বহু বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু এবং গাজার আরও ধ্বংস নিশ্চিত করবে। গাজা একটি ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়া উচিত।

হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মাহমুদ মারদাওয়ি আল জাজিরাকে বলেন, আমরা কেবল একটি পূর্ণ যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত একটি চুক্তি গ্রহণ করব।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও এই পরিকল্পনা ঘিরে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেনাপ্রধান এয়াল জামির হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সম্পূর্ণ অভিযান চালালে গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের জীবন বিপন্ন হতে পারে।