ঢাকা রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


রিফাতের স্ত্রী মিন্নির ফেসবুক অ্যাকাউন্ট গায়েব


২৯ জুন ২০১৯ ১২:১২

আপডেট:
১৯ মে ২০২৪ ০৪:০৬

বরগুনায় দিনদুপুরে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তোলপাড় চলছে সারাদেশে। নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছেন। এরমধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিরা যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।


ঘটনার পর থেকে মিন্নির ফেসবুকে ঢুঁ মারছেন অনেকেই। মিন্নির তার ফেসবুকে সর্বশেষ স্ট্যাটাস দিয়েছেন ৭ মে।

সেখানে তিনি লিখেছেন- ‘তোরে ভুলে যাওয়ার লাগি আমি ভালোবাসিনি সব ভেঙ্গে যাবে এভাবে ভাবতে পারিনি তুই ছাড়া কে বন্ধু হায় বুঝে আমার মোন তুই বিহনে আর এ ভুবনে আছে কে আপন???

তার এই পোস্টটি এখন পর্যন্ত হাজারের অধিক শেয়ার এবং ৮ হাজারের মত মন্তব্য করেছেন।

তবে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার পর থেকে মিন্নির ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

 

এদিকে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, তিনি তার সর্বোচ্চটা দিয়ে স্বামী রিফাত শরীফকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পারেননি। এই আক্ষেপ আর বেদনা নিয়ে বাকি জীবনটা কীভাবে পার করবেন, সেটা এখন বুঝে উঠতে পারছেন না।

তিনি বলেন, ‘আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু আমি পারিনি, আমি আমার স্বামীকে আপ্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি...। আমি চিৎকার করেছি, সবাইরে ডাকছি কেউ আমারে সাহায্যে করেনি।’

বুধবার সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার পথে একদল দুর্বৃত্ত হামলা করে রিফাতের ওপর। আশেপাশে অনেক মানুষ ছিল। এর মধ্যেই দা দিয়ে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয় রিফাতকে। এই ঘটনায় ছড়ানো ভিডিওতে দেখা যায়, মিন্নি অস্ত্রধারীদের হাত টেনে ধরার চেষ্টা করছেন। রিফাতকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।

এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে অসংখ্য মানুষ ঘটনার ভিডিও ধারণ করছেন, ছবি তুলছেন। কেউ কেউ মোবাইল ফোনে কথা বলছেন, কেউ বা চেয়ে চেয়ে দেখছেন। আর হামলাকারীরা মনের আক্রোশ মিটিয়ে চলে গেছে, কিন্তু কেউ কিছু বলেনি।

এই ঘটনাটি হাইকোর্টের নজরে আনার পর উচ্চ আদালত মর্মাহত হয়েছে। কেউ এগিয়ে আসল না-এটা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দুই বিচারপতি।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্বামী হারা তরুণী বলেন, ‘আমি আর আমার স্বামী কলেজে বের হই। হঠাৎ আমাদের উপর আক্রমণ করে। ...আমরা কলেজ থেকে বের হবার পর প্রথমে কয়েকজন আমাদের আটকায়। সে সময় ওরা আমার স্বামীকে মারতে শুরু করে। এসময় দা টা কী কী যেন নিয়ে আসে ওরা। পরে সবাই ছেড়ে দেয়। এ সময় রিশাতত নামে একজন ছেলে রিফাতকে ধরে। পরে নয়ন ও রিফাত ফরাজী দুইজন মিলে আমার স্বামীকে কোপাতে থাকে।’ এরপর তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বিকালে রিফাত শরীফ মারা যান।