ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


আওয়ামী লীগের মনোনয়নে আসছে বড় পরিবর্তন


১৬ নভেম্বর ২০১৮ ১৬:১৬

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৬:৫০

আওয়ামী লীগ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মনোনয়নপত্র বিতরণ শেষ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গত বুধবার সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়ার কথা থাকলেও সেখানে তাদের বিভিন্ন নির্বাচনী দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষে দলটির মনোনয়ন কমিটির নীতিনির্ধারণী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।


সেই বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, খুব শিগগির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তিনটি আলাদা দলে বিভক্ত করে তাদের সাক্ষাৎকার নেয়া হবে।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কোন কোন বিষয়ের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়া হবে, শরিকদের জন্য কত আসন ছাড় দেওয়া হবে বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তিন ধরনের দলের আলাদা আলাদা সাক্ষাৎকার গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে একটি দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিশেষভাবে বসবেন।

যাদের সাক্ষাৎকার নেয়া হবে

১. নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় বেশকিছু মনোনয়ন প্রত্যাশীকে দলের বৃহত্তর স্বার্থে মনোনয়ন দেয়া হবে না। শরিক দলগুলোর জন্য ওই সব আসন তাদের ছেড়ে দিতে হবে। এই দলটি হচ্ছে সাক্ষাৎকার পর্বে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রথম দল। এদের ডেকে নির্বাচনী নির্দেশনা দেয়া হবে।

২. একটি আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থী থাকলেও মনোনয়ন পাবেন একজন। তবে অন্য প্রার্থীরা যাতে মনোনীত ব্যাক্তির পক্ষে কাজ করে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করেন সেজন্য নির্দেশনা থাকবে। ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে তাদের মূল্যায়ন করা হবে।



৩. আওয়ামী লীগের অনেক প্রবীণ ও সিনিয়র নেতা আছেন যাদের বার্ধক্য ও অসুস্থতার কারণে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। সিনিয়র নেতাদের এই দলটি তৃতীয় দল।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, এবারে শরিকদের জন্য আওয়ামী লীগ ৫০ থেকে ৭০টি আসন ছেড়ে দেবে। এর মধ্যে সুনিশ্চিত বিজয়ী হতে পারবে এমন প্রার্থীদের আসনে শরীক দলগুলাকে সুযোগ দেবে। যেসব জনপ্রিয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না তাদেরকে মনোনয়ন বোর্ড ডাকবে এবং এলাকায় শরীক দলগুলোর প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়ার জন্য ও তাদের সমর্থনে কাজ করার জন্য অনুরোধ করবে।

এছাড়া একই এলাকায় সমান সংখ্যক জনপ্রিয় একাধিক প্রার্থী থাকলে কৌশলগত কারণে অন্যদের মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব হবে না। ওই আসনে বিরোধী প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কে ভালো করবে সে বিবেচনায় তুলনামূলক শক্তিশালী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে যে মনোনয়ন প্রত্যাশীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না তাকে ডেকে সম্মানিত করা হবে এবং আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য বোঝানো হবে।

প্রবীন ও বার্ধক্যজনিত কারণে কিছু জনপ্রিয় ও ত্যাগী মনোনয়ন প্রত্যাশী বাদ পড়তে পারেন। এই বাদ পড়া প্রবীণদের প্রধানমন্ত্রী নিজে ডেকে সম্মানিত করবেন। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলে তাদের অবদানের কথা স্মরণ করবেন এবং নিজ নিজ এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার জন্য অনুরোধ করবেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ শরীক দলের প্রার্থীদের সাথে সমন্বয় রক্ষা করে নিজ দলীয় প্রার্থীদের তাদের পক্ষে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করা। বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগ জনপ্রিয় ও শক্তিশালী হলেও শরীক দলগুলোর অবস্থা তেমনটি নয়। সে দিক বিবেচনায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সমর্থন না পেলে শরীক দলের প্রার্থীদের বিজয় অনিশ্চিত। অতীত রেকর্ড ঘাটলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের ভরাডুবির অন্যতম প্রধান কারণ শরীকদের সাথে সমন্বয়হীনতা।

মনোনয়ন প্রসঙ্গে একটি সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যেহেতু ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ তাই তার আগেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দিয়ে দেওয়া হবে। এতে এই সময়ের মধ্যে প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতে বা নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবেন।