ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ১৬ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


১২ ঘণ্টা দোকানে কাজ করে জিপিএ-৫ পেল বুলবুল


৯ মে ২০১৯ ০৯:৪৩

আপডেট:
১৬ মে ২০২৪ ১২:২৪

আমার বাবা শারীরিকভাবে অসুস্থ। মা সেলাইয়ের কাজ করেন। কিন্তু তাতে আমাদের সংসার চলে না। তাই আমি পড়াশোনার ফাঁকে একটি মোবাইল ফোনের দোকানে সেলসম্যানের কাজ করি। এর পাশাপাশি পড়াশোনা করি।


এভাবেই কথাগুলো জানায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরের সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. বুলবুল হোসেন (১৬)। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে বুলবুল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদরের ওয়েভ সিনেপ্লেক্সের পাশের একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকে বুলবুল। তার সঙ্গে থাকে বাবা-মা। বাবা মো. খলিলুর রহমান সরদার হৃদরোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। বছর খানেক ধরে কোনো কাজ করতে পারেন না তিনি। আগে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগীদের সিরিয়াল লিখে কিছু অর্থ রোজগার করতেন।

মা আলেয়া বেগম সেলাইয়ের কাজ করেন। কিন্তু তাতে তাদের সংসার চলে না। সংসারে অভাব-অনটন লেগেই আছে। পরিবারের আর্থিক অবস্থার কারণে ক্লাস নাইনে পড়ার সময় থেকে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডের ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ মান্নার মোবাইল ফোন বিক্রির প্রতিষ্ঠান ‘মান্না স্মার্ট’ গ্যালারিতে সেলসম্যান পদে চাকরি নেয় বুলবুল।


বুলবুল জানায়, এসএসসির টেস্ট পরীক্ষার আগে বাবা-মা দুইজনই অসুস্থ হয়ে পড়েন। একদিকে আমার পড়ার চাপ, সেলসম্যানের চাকরি-খুব কঠিন সময় গেছে। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা যেমন সব বিষয়ে প্রাইভেট পড়ে, আমি তেমন সুযোগ পাইনি। সে সক্ষমতাও ছিল না আমার পরিবারের। পড়াশোনার জন্য রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয়েছে। আমার অসহায় অবস্থা ও অতীতের ভালো ফলাফলের কথা জানতে পেরে সরকারি গৌরনদী কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী প্রাইভেট পড়াতেন। বিনিময় কিছু দেয়া লাগতো না।