ঢাকা শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


অভিনয়ে পূর্ণিমার দুই যুগ


৯ জুন ২০২১ ১৭:০১

আপডেট:
১৮ মে ২০২৪ ১৫:০২

অভিনয়জীবনে দুই যুগে পদার্পণ করলেন চিরসবুজ চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘এ জীবন তোমার আমার’। তবে এখন আর শুধু চিত্রনায়িকা পরিচয়ের মধ্যেই তিনি নিজেকে আবদ্ধ রাখেননি। একাধারে করছেন ছোট ও বড়পর্দায় অভিনয়, সঙ্গে চলছে মডেলিং, উপস্থাপনা, রিয়্যালিটি শোয়ের বিচারকাজ এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রমোশন। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও তিনি দারুণ জনপ্রিয়। ফেইসবুক ও ইন্সটাগ্রামে রয়েছে তার কয়েক মিলিয়ন অনুসারী। তাই এ মাধ্যমেও তিনি বেশ সরব। তার করা টিকটকগুলোও দর্শককে আলাদা আনন্দ দেয়। সব মিলিয়ে ভক্তদের জন্যই তার যত আয়োজন। বললেন, ‘আজকের এই পূর্ণিমা হয়েছি ভক্ত-দর্শকের ভালোবাসায়। তারা আমার মতো সাধারণ একটি অল্প বয়সী মেয়েকে যদি প্রথম সিনেমা থেকে গ্রহণ না করতেন, তাহলে আজকের মতো এই জায়গায় যেতে পারতাম না। দর্শকের সমর্থনের জন্যই বড় বড় প্রযোজক-পরিচালক আমাকে নিয়ে কাজ করেছেন। দুই যুগ সম্মানের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য আমি কৃতজ্ঞ দর্শক, প্রযোজক-পরিচালক, আমার সহশিল্পী এবং সিনেমার প্রতিটি কলাকুশলীর প্রতি। তাদের অবদান আমি সব সময় মনে রেখেই কাজ করি। এই দায়বদ্ধতা থেকেই হয়তো সব ধরনের কাজ করতে পারি না। হিসাব করে কাজ করতে হয়। কোন কাজটি আমার ভক্তরা কীভাবে নেবেন, সেটি মাথায় রাখতে হয়। তা ছাড়া দুই যুগ অভিনয়ে থাকার যে অভিজ্ঞতা সেই জায়গা থেকেই শিল্পী হিসেবে আলাদা বোধ তৈরি হয়েছে। এজন্য সিনেমা, নাটক, ওয়েব সিরিজ, বিজ্ঞাপন, অনুষ্ঠান উপস্থাপনা বা কোনো ব্র্যান্ড প্রমোশন, যাই করি না কেন আমাকে ভাবতে হয় সেটির মান কেমন। ভিন্ন কিছু না হলে এখন আর কাজ করতে মন সায় দেয় না। আমি এখন ‘ধীরে চলো নীতি’ মেনেই কাজ করছি। দর্শক যত দিন ভালোবাসা দেবেন, আমি তাদের জন্য কাজ করে যাব।

পেছন ফিরে তাকালে কোন স্মৃতি সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেয়? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এত লম্বা সময় কখন যে পেরিয়ে এসেছি, টেরই পাইনি। তবে আমার প্রাপ্তি অনেক। এখনকার দিনের সঙ্গে তুলনা করলে এ-ও মনে হয়, আমি খুবই ভাগ্যবান। সবার ভালোবাসায় থাকা, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা অনেক বড় ব্যাপার। যখন সেসব প্রাপ্তির কথা ভাবি, এই দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি মুছে যায়। গর্বিতও হই, নিজেকে সন্তুষ্টচিত্তে মনে হয় এখনো অনেক ভালো অবস্থানে আছি। আমার সময়ে অনেকে এসেছিলেন, হারিয়েও গেছেন। আমিও মাঝে চলে গিয়েছিলাম। চলচ্চিত্রে যখন দুঃসময় এলো, তখন ভেবেছিলাম, এই বুঝি শেষ! আর বুঝি ছবিতে অভিনয় করা হবে না। অশ্লীল ছবি নির্মাণের হিড়িক পড়ে গেল। কিন্তু আমি তো আর অশ্লীল ছবিতে অভিনয় করব না। স্রোতে গা ভাসাব না। আবার যখন ভালো ছবির জোয়ার এলো, অভিনয় শুরু করলাম। মান্না ভাই ও রিয়াজের সঙ্গে নতুন করে জুটি বাঁধলাম। যখন অন্য জুটি হিট হতে শুরু করল, আমাদের নিয়ে তখন আবার কাজ করা কমে গেল। তখন আবার টেলিভিশন বা অন্য অঙ্গনে কাজ শুরু করলাম। এরপর তো বিয়ে করলাম। আশপাশের সবাই বলতেন, বিয়ে করলেই নাকি ক্যারিয়ার শেষ। এর পরও সংসারের সবকিছু সমন্বয় করে কিন্তু আমি একটানা কাজ করে গেছি। মান্না ভাই, শাকিব ও রিয়াজের সঙ্গে অনেকগুলো ছবি করলাম। এর মধ্যে মা হলাম। এবার কনফার্ম ছিলাম, আর কাজ করা হবে না। এরপর আবার নাটক দিয়ে অভিনয় শুরু করি। এরপর একটি পুরস্কার অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে যেন আমার নতুন জন্ম হলো।’ পূর্ণিমা এখন ব্যস্ত মাছরাঙা টিভির জনপ্রিয় রান্নাবিষয়ক রিয়্যালিটি শো ‘সেরা রাঁধুনী’র বিচারকাজ নিয়ে। এ ছাড়া দেশটিভিতে ‘পূর্ণিমার আলো’ নামে একটি নতুন বিনোদনমূলক টকশো শুরু করেছেন। সেখানে শোবিজের জনপ্রিয় তারকাদের সঙ্গে মজার আড্ডায় মেতে ওঠেন তিনি। শোটি ইতিমধ্যে ইউটিউবেও ভালো সাড়া ফেলেছে। ঈদে সাগর জাহানের পরিচালনায় তাহসানের সঙ্গে অভিনয় করা ‘এই পৃথিবী আমাদের’ নাটকটিও বেশ প্রশংসা পেয়েছে। কয়েকটি সিনেমাও হাতে রয়েছে তার। নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল পরিচালিত ‘গাঙচিল’ ও ‘জ্যাম’ সিনেমা দুটির অল্পকিছু কাজ বাকি। এ ছাড়া ওয়েব প্ল্যাটফর্ম চরকির জন্য প্রথমবারের মতো ওয়েব সিরিজেও নাম লিখিয়েছেন তিনি। গুণী নির্মাতা অমিতাভ রেজা পরিচালিত এই সিরিজের নাম ‘মুন্সিগীরী’। এতে তার সহশিল্পী চঞ্চল চৌধুরী। গোয়েন্দা ধাঁচের এই সিরিজটি নিয়েও তিনি দারুণ এক্সাইটেড। এমন কোনো চরিত্রকে মনে মনে লালন করছেন, যা এখনো করা হয়ে ওঠেনি? পূর্ণিমা বলেন, ‘নারীপ্রধান গল্পে কাজ করতে চাই। বিদ্যা বালানের ‘কাহানি’ ছবিটা দেখে মনে হয়েছে, এ ধরনের গল্পে যদি কাজ করতে পারতাম। বিদেশি কিছু ছবি দেখে মনে হয় ফিগার, বেশি ওজন, বয়সের ছাপ এসব কিছু না। সেখানে অভিনয়টাই মুখ্য।