ঢাকা মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯শে মাঘ ১৪৩১


কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুরে সাংবাদিকের ওপর হামলা; মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ


৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:০৮

আপডেট:
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৬

কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সুজন মাহমুদ নামের এক সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাজিবপুর বাজার কম্পিউটার গলিতে এ হামলা ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা সবাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমানের অনুসারী বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এর আগে গত ৩ জানুয়ারি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোখলেছুর রহমানের নামে 'অধক্ষ্য সমাচার, সরিষাতেই ভূত' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে ওই সাংবাদিক। এরই জের ধরে সাংবাদিক সুজন মাহমুদের ওপর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতির অনুসারীরা হামলা করে।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান নামে নিউজ করায় বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সাব্বির হোসেন ও কৃষক দলের সদস্য সচিব মো. কাশেম এর আগে সুজন মাহমুদের বাসায় গিয়ে অপহরণের হুমকি দিয়েছিল। এর পর ৫ জানুয়ারি সুজন মাহমুদ উপজেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি মো. মোখলেছুর রহমান, শামীম আহম্মেদ, সোহেল রানা, সাব্বির হোসেন ও মো. আবুল কাশেমের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

চর রাজিবপুর সাংবাদিক সুজন মাহমুদ বলেন, আমি সারাদিন কোদালকাটিতে সংবাদ সংগ্রহের কাজে ছিলাম। সন্ধ্যা ৬টায় রাজিবপুর বাজারে এসে আমার সহকর্মীদের সঙ্গে চা আড্ডা করছিলাম। এমন সময় (সন্ধ্যা ৭টার দিকে) উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার হোসেন (নেভী), সাব্বির হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক শফি আলম, শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, যুবদল কর্মী রুবেল, ছাত্রদল কর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুনসহ অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল এসে আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় সঙ্গে থাকা আমার সহকর্মীরা আমাকে হামলার হাত থেকে রক্ষা করে একটি দোকানে ভিতর বসিয়ে রাখে। মারমুখী দুর্বৃত্তরা দোকানের ভিতরে ঢুকে আমাকে আক্রমণ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংবাদিক সুজনসহ কয়েকজন সাংবাদিক গলিতে দাঁড়িয়ে ছিলো। হঠাৎ করে ৩০ থেকে ৩৫ জনের মতো লোকজন সাংবাদিক সুজন মাহমুদের ওপর হামলা চালায়। আর হামলাকারীরা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। উপজেলা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা ও ছাত্রদল কর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন তোর কতবড় সাহস তুই নিউজ করিস আবার আমাদের নামে থানায় অভিযোগ দিস। তোকে আজ তোর কোন বাবা বাঁচায় দেখবো।

চর রাজিবপুর উপজেলার শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, সাংবাদিক সুজন মাহমুদ আমাদের এলাকার ছেলে, আমরা তাকে ছোট ভাইয়ের মতো দেখি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর সে বিএনপি নেতাদের নামে বিভিন্ন ধরণের মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে। এই ঘটনায় আজ আমরা বাজারে তার কাছে জানতে গিয়েছিলাম সে আওয়ামীলীগের হয়ে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে লেগেছে কি না। এর বাইরে তার সাথে কিছুই ঘটেনি। আপনি সরেজমিনে এসে তদন্ত করে দেখেন।

চর রাজিবপুর উপজেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি মো. মোখলেছুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, আমি নির্বিবাদী মানুষ। বর্তমানে জেলা বিএনপির কমিটির কাজে জেলা নেতাদের সাথে ঢাকায় অবস্থান করছি। উপজেলায় ওই সাংবাদিকের সাথে কি ঘটেছে আমি জানি না। তবে আমার অনুসারীরা যদি কোন সাংবাদিকের সাথে খারাপ কিছু করে থাকে তবে আমি গিয়ে সঠিক তদান্ত করে তাদের বিচার করবো।

তিনি আরও জানান, উপজেলায় বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মী লোকজন রয়েছে। কেউ কেউ আমার ইমেজ (ভাবমূর্তি) নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন ঝামেলা জড়াচ্ছে। এসব সমস্যা বন্ধ করার জন্য আমি উপজেলায় ফিরে নেতাকর্মীদের ব্যবস্থা নিবো।