ঢাকা বুধবার, ৯ই জুলাই ২০২৫, ২৬শে আষাঢ় ১৪৩২


চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের পক্ষে যারা, তাঁদের বয়কট করুন: নাহিদ


প্রকাশিত:
৯ জুলাই ২০২৫ ১৭:৪৭

পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ বুধবার চুয়াডাঙ্গার বড়বাজারের শহীদ হাসান চত্বরে। ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ, দখলদার ও চাঁদাবাজদের না বলুন। যাঁরা চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের পক্ষে আছেন, তাঁদের বয়কট করুন। জাতীয় নাগরিক পার্টি আপনাদের সঙ্গে থাকবে।’

‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা শহরের বড়বাজারের শহীদ হাসান চত্বরে এনসিপি আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন।

পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দ এখনো রাজপথে আছে। আপনারা আমাদের সমর্থন করুন, ইনশা আল্লাহ আপনারা হতাশ হবেন না।’

মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে পথসভায় উপস্থিত হাজারো মানুষের প্রতি এনসিপির কেন্দ্রীয় এই নেতা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কৃষকের নিহত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তে গত ৫৪ বছরে হাজারো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গাতেই হত্যা করা হয়েছে দুই শতাধিক। এখন থেকে বাংলাদেশের জনগণ বাংলাদেশের সীমান্ত, মানচিত্র ও মানুষকে রক্ষা করার দায়িত্ব পালন করবে। সীমান্ত হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ভারত যদি বাংলাদেশের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক চায়, সমতা ও মর্যাদার ভিত্তিতে হতে হবে। কেবল বাংলাদেশই ভারতের ওপর নির্ভরশীল নয়, ভারতও বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। এটা যেন ভারত কোনোভাবেই ভুলে না যায়। বাংলাদেশের মাটি ও মানচিত্র রক্ষা করা বাংলাদেশের ছাত্র ও যুবাদের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। জাতীয় নাগরিক পার্টি সেই লক্ষ্যে কাজ করবে।’

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘হাসিনা সরকার হাজারের ওপর মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে, ১০ হাজারের ওপর মানুষকে আহত করেছে। আমার ভাইয়েরা কেউ চোখ হারিয়েছে, কেউ পা হারিয়েছে। বিবিসি রিপোর্ট করেছে, গুলির জন্য শেখ হাসিনা নিজেই অর্ডার দিয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দায়ী।’

এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া বাজার থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে পদযাত্রা শুরু করেন। মেহেরপুরের গাংনী থেকে বেলা একটায় হাটবোয়ালিয়া বাজারে পৌঁছালে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজেই এনসিপির নেতাদের স্বাগত জানান। নেতারা হাত নেড়ে শুভেচ্ছার জবাব দেন। এরপর বেলা দেড়টায় আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরের আল তায়েবা মোড়ে পৌঁছালে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে তাঁদের বরণ করে নেওয়া হয়। আলমডাঙ্গায় পদযাত্রা শেষে এসসিপির নেতারা চুয়াডাঙ্গা শহরের পথে রওনা দেন।

চুয়াডাঙ্গা শহীদ হাসান চত্বরের এই পথসভায় দলের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের শহীদ ভাইয়েরা যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আত্মত্যাগ করেছেন, তা পূরণ হয়নি। সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’

পথসভায় অন্যদের মধ্যে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান বক্তব্য দেন। এ সময় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ দলটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।