ঢাকা শনিবার, ১০ই মে ২০২৫, ২৮শে বৈশাখ ১৪৩২


ডাকসুতে ছাত্রলীগের প্যানেলে প্রকাশ্য বিভক্তি


৯ মার্চ ২০২০ ০৩:৫৪

আপডেট:
৯ মার্চ ২০২০ ২০:৪৮

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি ক্যাম্পাসে সাধারণ যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা আনা এবং রিক্সাভাড়া নির্ধারণ। প্রায় ২৯ বছর পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা আরো জোরালো হয়। কিন্তু একে একে মেয়াদের প্রায় পুরোটা শেষ হলেও ডাকসু নেতাদেরকে এ ব্যাপারে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।

এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের লক্ষ্যে আগামী ১৫ মার্চ ক্যাম্পাসে রিক্সাভাড়া নির্ধারণ এবং পরিবহন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে উদ্যোগ নিয়েছেন ডাকসু সদস্য তানভীর হাসান সৈকত এবং নজরুল ইসলাম। তবে তাদের এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপরই পাল্টা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন এবং পরিবহন সম্পাদক শামস-ঈ-নোমান। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে সমালোচনার ঝড় বইছে। আগামী ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘ক্রেডিট’ নিতেই এজিএস কর্তৃক এমন পাল্টা বিজ্ঞপ্তি দেয়া হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন এবং পরিবহন সম্পাদক শামস-ঈ-নোমান এবং ডাকসু সদস্য তানভীর হাসান সৈকত ও নজরুল ইসলাম ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেন।

তবে এর আগেও ক্রেডিট ক্রেডিট খেলা নিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম। এর আগে ডাকসুর এজেন্ডা ঠিক করা নিয়ে অন্যান্য সদস্য ও সম্পাদকের মতামত না নিয়েই নিজের প্রস্তাবিত এজেন্ডা তাতে অন্তর্ভুক্ত করে সমালোচনার সূচনা করেন সাদ্দাম। সে সময় ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানীর স্বাক্ষর তাকে না জানিয়েই এজেন্ডার বিজ্ঞপ্তিতে বসানো হয়েছে বলেও গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছিলেন জিএস।

এজিেএসের বিরুদ্ধে পরবর্তী ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেকে শিক্ষার্থীবান্ধব প্রমাণ করতেই ‘ক্রেডিট’ ছিনিয়ে নেয়ার মতো অভিযোগ করেছেন ডাকসুর অন্যান্য সদস্যরা।

এর আগে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের নারীদের জন্য সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক ট্রেনিং প্রোগ্রামের আয়োজন করলেও সেখানে ছাত্রলীগের নেতাদের বিশেষ করে সাদ্দাম এবং রাব্বানীর অসহযোগিতার কারণে তা আর সম্পন্ন হতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে পরবর্তীতে একই ধরনের কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত ডাকসু নেতারা।

এদিকে, এজিএস সাদ্দামের বিতর্কিত ও পাল্টা বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন রিক্সাভাড়া নির্ধারণ এবং পরিবহন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোক্তা ডাকসু সদস্য তানভীর হাসান সৈকত।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন সৈকত। সেখানে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে যখন যানবাহন শৃঙ্খলা ও ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে অনেকবার আশ্বাস দিয়েও কেউ কোন প্রকার সমাধানের পদক্ষেপ নেই নি, ঠিক তখনি একপ্রকার বাধ্য হয়েছেই এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে এবং ১৫ই মার্চ থেকে কার্যকর হবে বলে টাইমলাইন দিয়ে দিয়েছি।সুন্দর পরিকল্পনা সহ সবকিছু যখন গুছিয়ে এনেছি ঠিক তখনি নোংরামি খেলা শুরু করে দিয়েছেন। ভালো!

মাঝে মাঝে আমার নিজেকে সুপারম্যান মনে হয় যেখানেই হাত দেয় সেখানেই টনক নড়ে উঠে, ঘুম ভেঙে যায় সবার। হয়তো কাজ করার জন্য নয়তো কাজ নস্যাৎ করার জন্য। কাজ করলে ভালো না হয় এইসব ভাওতাবাজি খেলা বন্ধ করেন। মানুষ এইসব খেলা এখন বুঝে গেছে।

এই কাজ আমি করবোই।আল্লাহ ছাড়া কেউ আমাকে আটকাতে পারবে না,কোন নোংরামি কাজ হবে না। আমাকে খেলা শিখায়তে আইসেন না।নোংরামি আমি করলে সইতে পারবেন না! ছাত্রদের জন্য কাজ আমি করবোই। কেউ আটকাতে পারবেন না।
খেলাহবে…..”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈকত বলেন, এতোদিন এ ব্যাপারে কেউ এগিয়ে আসেন নি। যেই আমরা উদ্যোগ নিয়েছি তখন তারা আসছে ক্রেডিট নিতে। কারণ তারা জানে সৈকত যেটা শুরু করে সেটা সফল হবে। এই জন্যই তাদের এমন তোরজোর বেড়েছে এখন।

এ বিষয়ে জানতে ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেনকে কল দিলে তার মোবাইল সংযোগটি ব্যস্ত পাওয়া যায়। পরে এ নিয়ে মন্তব্য চাইলে পরিবহন বিষয়ক সম্পাদক শামস-ঈ-নোমান স্টুডেন্ট জার্নালকে বলেন, এখানে পাল্টাপাল্টি কোনো বিষয় নয়। শিক্ষার্থীদের মতামত নেয়ার উদ্দেশে এবং ভাড়ার তালিকা তৈরি করতে তাদের সাথে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগেও শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে দুইবার ভাড়ার তালিকা করা হয়েছিল- সেটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে তালিকা আমরাদের হাতে নেই।