ঢাকা বুধবার, ১২ই মার্চ ২০২৫, ২৯শে ফাল্গুন ১৪৩১


তারা কী বিচার পাবে?

ধর্ষণ যেন নিত্যদিনের খবর, নারীরা নিরাপদ কোথায়?


২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:০০

আপডেট:
১২ মার্চ ২০২৫ ১৭:১৯

ছবি: আমাদের দিন

' ২০২৪ ' এক নাম যা বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না! অভুত্থান যা ৩৬ শে জুলাই (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আমরা এক নতুন বাংলাদেশে পদার্পণ করি। এও এক কল্পনার জগত, কারণ যেখানে বৈষমহীনতার নামে সেখানে নারীর রয়ে যায় অন্ত্যজ। তার বিরুদ্ধে যেন অস্ত্রে দেওয়া হয় নতুন শান। ধর্ষণ যেন এখন নিত্যদিনের খবর। মিলছে না সঠিক বিচার।


একটু পেছনে তাকালেই, ২০২২ সালের ৩ মার্চ, ভাড়াটিয়া প্রভাষক মুরাদুজ্জামানের খুবই কথার শিকার হয় বগুড়া ধুনেটের স্কুল ছাত্রী। মেয়ের ধর্ষণের বিচার পেতে আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছে শিক্ষার্থীর পিতা মাতা।
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ সালে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে সঙ্গবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ চলন্ত বাসে নারীকে ধর্ষণ। গত নভেম্বরে পুলিশ সদর দপ্তরে বরাতে নাজনীন আক্তারের (প্রথম আলো, ৯ নভেম্বর ২০২৪) প্রতিবেদনে জানা যায় ওই বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সারাদেশে ২০০০- এর বিভিন্ন ধারায় মোট ১২ হাজার ৭৬৯ টি ধর্ষণ মামলা হয়েছে।
২০২৫ এ, এই পর্যন্ত হয়েছে বেশ কিছু ধর্ষণ। ১৭ ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ঢাকা- রাজশাহী রুটে মধ্যরাতে ডাকাতির শিকার হওয়া বাসটি প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ডাকাতের দখলে ছিল। যেখানে নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে। নরসিংদী রায়পুরায় ২০ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে এক শিশুকে (৮) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির (৫০) বিরুদ্ধে। মধ্যরাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৬৫ বছরের বৃদ্ধাকে দলগত ধর্ষণ। ১৩ ই ফেব্রুয়ারি বাস স্ট্যান্ড থেকে গৃহবধুকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ। ২০ ফেব্রুয়ারি মধুপুরের দুই বন্ধু মিলে পালা ক্রমে কিশোরকে ধর্ষণ। ট্রলারে মাওয়া ঘাট পার হতে গিয়ে গৃহবধুকে সংঘবদ্ধ হয়ে ধর্ষণ।

পুঁজি শোষণের এই ব্যবস্থায় নারীদের ভোগ্যপণ্য হিসেবে যেন ব্যবহার করছে পুরুষরা। কিন্তু এর পরিত্রাণের উপায় কি?
প্রথমত. দেশের প্রত্যেকটি বিষয়ে নারীর উপস্থিতি, সাফল্য অর্জন ও অংশগ্রহণ কে উদযাপন করতে হবে।

দ্বিতীয়ত. দেশের রাজনৈতিক দল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহের নেতৃত্বে ও মনোনয়নে নারীদের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।

তৃতীয়ত. সব লিঙ্গ পরিচয় মানুষের জন্য নিরাপদ কর্মক্ষেত্র, শিক্ষালয়, রাস্তা তৈরি করার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যৌন নিপীড়ন মোকাবেলায় আইন প্রণয়ন করতে হবে।

চতুর্থত. মজুরি, পদমর্যাদা এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে হবে। নিরাপদ কর্ম পরিবেশ যাতায়াত জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে। মাতৃত্বকালীন ছুটির কর্ম ক্ষেত্রে ও আবাসিক এলাকায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।

পঞ্চমত. নারীদের নিরাপত্তার জন্য পৃথক বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।

ধর্ষণের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যাল য়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করছে এবং ধর্ষকদের বিচারের দাবি করছে। একটাই প্রত্যাশা, কবে অবসান হবে নারীদের প্রতি এই করাল গ্রাস।

 

ফাবিয়া হোসেন অথৈ

শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।


ধর্ষণ, নারীর নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা