ঢাকা বুধবার, ১২ই মার্চ ২০২৫, ২৯শে ফাল্গুন ১৪৩১


মোবাইলের দাসত্ব: শিশুরা কি হারাচ্ছে তাদের শৈশব?


৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:৪৩

আপডেট:
১২ মার্চ ২০২৫ ১৭:০৯

বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর এই যুগে মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু শিশুদের অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে। স্মার্টফোনের আসক্তি আজকাল শুধু বড়দেরই নয়, শিশুদের মাঝেও এক বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে, যা তাদের  সামাজিক এবং শারীরিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বাংলাদেশের শিশুরা প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিন ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করে, যা ইউনিসেফ কর্তৃক সুপারিশ করা সর্বোচ্চ সময়ের প্রায় তিন গুণ বেশি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু গড়ে প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত স্মার্টফোন ব্যবহার করে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে শিশুদের অধিক পরিমাণে মোবাইল ব্যবহারের কারণ শিশুদের সঙ্গে পরিবারের সময় না কাটানো, খেলার সাথী না পাওয়া, ভিডিও গেম আসক্তি এবং অপর্যাপ্ত খেলার মাঠ। এসবের কারণে শিশুরা মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে মোবাইলের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। যার ফলাফল স্বরূপ শিশুরা নানান ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।শারীরিকভাবে, দৃষ্টিশক্তি, মেরুদণ্ড এবং ঘাড়ের সমস্যা, স্থূলতা এবং ঘুমের ব্যাঘাত ও মানসিকভাবে, শিশুদের মধ্যে মানসিক চাপ, উদ্বেগ, আগ্রাসী আচরণ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং মনোযোগের অভাব হওয়ার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে।

এসব নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে শিশুদের মোবাইল ব্যবহারের পরিমাণ সীমিত করা এবং তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়ক কার্যক্রমে উৎসাহিত করা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে ;
প্রথমত, স্ক্রীন টাইম সীমিত করা প্রয়োজন, বিশেষ করে ২-৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য, যাতে মোবাইল ব্যবহারের প্রভাব কমে। এছাড়াও, শারীরিক কার্যকলাপে যেমন খেলাধুলা বা প্রকৃতির মধ্যে সময় কাটানো, শিশুদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে সহায়ক হতে পারে। পরিবারিক কার্যক্রমে যেমন গল্প বলা বা বোর্ড গেম খেলা শিশুদের সামাজিক দক্ষতা এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। শিশুদের শিক্ষামূলক এবং সৃজনশীল কার্যক্রমে যেমন বই পড়া, আঁকা বা মিউজিক শেখার জন্য উৎসাহিত করাও তাদের কগনিটিভ দক্ষতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক। তাদেরকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করা যেতে পারে, অবশেষে, অভিভাবকদের উচিত নিজেদের মোবাইল ব্যবহারের সময়সীমা নিয়ন্ত্রণ করা এবং শিশুদের সামনে ভালো উদাহরণ রাখা, যাতে তারা সচেতনভাবে মোবাইল ব্যবহার করে।

মাহতাবুল ইসলাম প্রান্ত
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়


mobileaddiction, jnu, children