ঢাকা বুধবার, ১২ই মার্চ ২০২৫, ২৯শে ফাল্গুন ১৪৩১


সমাধান কোথায় ?

পথশিশুদের মাদক গ্রহণ কি কমবে না?


৩০ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০২

আপডেট:
৩০ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৮

মাদক এক অভিশাপের নাম,এক সর্বনাশের নাম। বর্তমান সময়ে পথশিশুদের মাদক গ্রহণ একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত দারিদ্র্য, পারিবারিক সহিংসতা, নিরক্ষরতা, মাদকের সহজলভ্যতা ও সামাজিক সুরক্ষার অভাবে তারা মাদকের প্রতি আকৃষ্ট হয় । পথশিশুরা ক্ষুধার জ্বালা, একাকিত্বের কষ্ট বা সঙ্গদোষে নানা ধরনের মাদক নিচ্ছে। তারা সাধারণত গাঁজা, ড্যান্ডি, পলিথিনের মধ্যে গামবেল্ডিং দিয়ে ও পেট্রোল শুঁকে নেশা করে। বর্তমান পথশিশুদের ৮৫ শতাংশ ই মাদকে আসক্ত।তার মধ্যে অন্যতম মাদক হলো ড্যান্ডি। ড্যান্ডি মূলত এক ধরনের আঠা। ড্যানড্রাইট অ্যাডহেসিভ বা ড্যানড্রাইট নামের আঠাটিকেই মাদক সেবীরা ড্যান্ডি বলে।আঠায় থাকা কার্বন ট্রাই-ক্লোরাইড, টলুইন, অ্যাসিটোন ও বেনজিন স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই বাষ্পে পরিণত হয়।এসব রাসায়নিক শ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করে পথশিশুরা।তাদের ভাষ্যমতে, ড্যান্ডি গ্রহণের অন্যতম কারণ হচ্ছে ক্ষুধার জ্বালা। সমাজের বঞ্চিত, অবহেলিত পথশিশুরা ক্ষুধার জ্বালা থেকে পরিত্রাণ এর জন্য মাদক গ্রহণ করে অপুষ্টি, সংক্রামক রোগ ও মানসিক সমস্যায় ভোগে।মাদক কেনার জন্য তারা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই বা অন্যান্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তাদের অপরাধমূলক আচরণের জন্য সমাজে অস্থিরতা বিরাজ করে ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়।তারা খুব সহজেই মাদক পরিবহণ ও বিক্রয় কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে, সমাজে ভীতি ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়।

পথশিশুদের মাদক গ্রহণ রোধ করতে ও তাদের কে সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে সমাজের প্রতিটি স্তরের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। যেহেতু মাদক গ্রহণের মূল কারণ ক্ষুধা, নিয়মিত খাবার সরবরাহ করলে তারা ক্ষুধার্ত অবস্থায় মাদকের দিকে ঝুঁকবে না। পথশিশুদের জন্য সুরক্ষিত আশ্রয়স্থল এর ব্যবস্থা করা ও মানসিক সমস্যা সমাধানের জন্য নিয়মিত কাউন্সেলিং এর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। পথশিশুরা সহজেই মাদক পেয়ে যাচ্ছে,তাই মাদক সরবরাহকারীদের উপর কঠিন আইন প্রয়োগ মাদক গ্রহণের প্রবণতা কমাতে সাহায্য করবে।আইন করে মাদক সেবন কমিয়ে আনা গেলেও বন্ধ করা যাবেনা।এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা, প্রচারণা। এখন ই সচেতন না হলে এর ভয়াবহতায় সমাজ হবে কলুষিত। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প, পুনর্বাসন কার্যক্রম এবং সচেতনতা বৃদ্ধি প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ধীরে ধীরে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।তাই ছিন্নমূল বা পথশিশুদের অধিকার রক্ষা ও সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনা সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

 

নুসরাত জাহান অর্পিতা

শিক্ষার্থী

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা-১১০০।  


national, child, drugaddiction