সাংবাদিককে তথ্য নিতে বাঁধা প্রদান; দা দিয়ে কোপানোর হুমকি

সাংবাদিক সরেজমিনে সঠিক তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে অভিযুক্তদের বাড়িতে যাওয়ায় বাবা ছেলে সহ অজ্ঞাত আরো দুজনকে সাথে নিয়ে শীর্ষ খবর ও দৈনিক আমাদের দিন পত্রিকার (অনলাইন + প্রিন্ট) স্টাফ রিপোর্টার মোঃ আবু রায়হান সোহেলের উপর চড়াও হয়। সাংবাদিক তাদের ঠান্ডা মাথায় সবকিছু বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। সাংবাদিক বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, আমরা সঠিক সত্য তথ্যটা উদ্ঘাটনের জন্য আপনাদের কাছে এসেছি। আপনারা উত্তেজিত না হয়ে আমাদের তথ্য সংগ্রহে সহযোগিতা করুন। তাতেও তারা ক্ষিপ্ত হন এবং ছেলে তার বাবাকে চিৎকার দিয়ে ডেকে বলেন, বাবা দা নিয়ে এসো, সাংবাদিক আসছে, কোপাবো। তারপর তার বাবাও তার সাথে যুক্ত হন। ঐ সময় তারা ঘটনাস্থল রাস্তায় বসে চিৎকার চেচামেচি করে এবং সাংবাদিক সোহেল রায়হান ও তার সহযোগীকে তাদের বাড়ির ভিতরে ঢুকতে বাঁধা প্রদান করে। একপর্যায়ে সাংবাদিকের সামনে তারা বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে এবং সাংবাদিককে অপমান অপদস্ত করে। এতে সাংবাদিকের মানহানি ঘটে ও তার পেশাগত দ্বায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়।
সাংবাদিককে হুমকি, তথ্য সংগ্রহে বাঁধা প্রদান ও বাকবিতন্ডার সেই ঘটনার গোপন ভিডিও ফুটেজও সংরক্ষিত রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে ১৬ আগষ্ট শনিবার বেলা ৩ টার দিকে নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড চাঁদকাঠী বাজার সংলগ্ন মোঃ জাকারিয়ার বাড়ির সামনের কাচা রাস্তার মোড়ে।
উল্লেখ্য, নারী কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযুক্ত মোঃ মেজবা ও তার পিতা মোঃ জাকারিয়া নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নের (চাঁদকাঠী) ৪ নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ও এলাকার বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, মেজবা মাদক সেবন ও ব্যবসার সাথে জড়িত এবং মেজবা ও তার বাবা জাকারিয়া এলাকায় সন্ত্রাসী স্টাইলে চলাফেরা করে এবং এরা সবসময় খুব গরম মেজাজে থাকে। এদের হুমকি ধমকির ভয়ে কেউ তাদের সাথে পেরে ওঠেনা।
অভিযোগ আছে, মেজবা তার পার্শ্ববর্তী এলাকা সারেংকাঠি ইউনিয়নের কলেজ পড়ুয়া একটি মেয়েকে ভুলিয়ে ভালিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কলঙ্কিত করেছে এবং বিভিন্ন সময়ে মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে একপর্যায়ে মা বাবার মতে অন্য জায়গায় বিয়ে করেছে। জানা যায়, বিয়ের দুদিন আগে কলেজ পড়ুয়া পার্শ্ববর্তী এলাকার সেই মেয়েটি প্রেমিকের বিয়ের খবর পেয়ে নিজ বাড়ি ছেড়ে মেজবার কাছে চলে আসে। কিন্তু প্রেমিক মেজবা তার প্রেমিকাকে গ্রহন না করে প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে মেয়েটি চলে যেতে না চাইলে এলাকার সাবেক মেম্বার জাকির হোসেন এবং পাটিকেলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের সহায়তায় মেয়ের পরিবারের আপনজনদের কাছে মেয়েকে হস্তান্তর করা হয় এবং সাময়িক সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করা হয়। মূলত এই ঘটনার সঠিক তথ্য উদ্ঘাটনের উদ্দেশ্যেই সাংবাদিকের সরেজমিনে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের কাছে যাওয়া।
এলাকাবাসী ও তাদের ঘটনার বিষয়ে সবকিছু অবগত জাকির মেম্বারের কাছ থেকে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় অথচ এ সকল বিষয় অভিযুক্ত মেজবা ও তার বাবা জাকারিয়া অস্বীকার করে এবং তথ্য গোপন করে। অভিযুক্তরা বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও শত্রুতার জেরে এই ধরনের অপপ্রচার করা হয়েছে। তারা এর কিছুই জানেন না এবং কোনো মেয়ে নিয়েও এরকম কিছু হয়নি।
এ ব্যপারে সাংবাদিক সোহেল রায়হান জানান, ঘটনার সঠিক তদন্তের উদ্দেশ্যে বা তথ্য সংগ্রহের জন্য অভিযুক্তদের কাছে যাওয়ায় তারা প্রথম থেকেই আমার কোনো কথা না শুনে আমার উপরে চড়াও হয়, হুমকি ধমকি প্রদান সহ সঠিক তথ্য সংগ্রহে বাঁধার সৃষ্টি করে। যা আইন পরিপন্থী, ব্যক্তিগত ও পেশাগত অধিকার ও সম্মান ক্ষুন্ন করা এবং স্বাধীন ও কার্যকর গণমাধ্যমের ধারণার পরিপন্থী।
তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জনান এবং এ ব্যপারে সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া বলে নেছারাবাদ থানায় মোঃ মেজবা ও তার পিতা মোঃ জাকারিয়ার নামে মানহানি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রকৃয়া চলছে।