অনিয়মে জড়িত আটাব নেতাদের কঠোর শাস্তির দাবি সাধারণ সদস্যদের

সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ’ (আটাব)-এর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে ‘সঠিক সময়ে নেওয়া একটি বিচক্ষণ পদক্ষেপ’ আখ্যায়িত করে স্বাগত জানিয়েছেন আটাবের সাধারণ সদস্যরা।
একইসঙ্গে বিগত সময়ে আটাব-এ যে দুর্নীতি-অনিয়ম হয়েছে সে সবের সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে মানববন্ধন ও র্যালির মাধ্যমে এসব দাবি জানান আটাব-এর সাধারণ সদস্যরা। র্যালিটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল মোড় ঘুরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আটাব সভাপতি আরিফ ও মহাসচিব আসফিয়ার জান্নাত সালেহ দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভোট, আর্থিক জালিয়াতি ও রাজনৈতিক অপব্যবহার করে সংগঠনটিকে ‘ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থে’ পরিচালনা করে আসছিলেন। তারা স্বৈরাচারী সরকারের ক্ষমতাবানদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করে সাধারণ ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছেন।
ট্রাভেল এজেন্সির মালিক ইকরামুল হক বলেন, ‘অনলাইন টিকিট ও হোটেল বুকিং প্রতিষ্ঠান ফ্লাইট এক্সপার্ট প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে হঠাৎ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এর সিইও সালমান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান এবং পরে হোয়াটসঅ্যাপে এ তথ্য জানান। এই কোম্পানির সঙ্গে আটাব সভাপতি ও মহাসচিব প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘পোর্টাল খোলার নামে লাখ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে। আবার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বিমান টিকিটের দাম ১ লাখ ৫ হাজার টাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অথচ প্রকৃত ট্রাভেল এজেন্সিগুলো এই সিন্ডিকেটের জোরে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।’
সাবেক নেতা মো. বাহার আলম মজুমদার বলেন, ‘সভাপতি আরিফ, মহাসচিব আসফিয়া এবং উপদেষ্টা শাহ সম্রাট একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠন করে বিমানের টিকিট জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। হজ ও ওমরার মত ধর্মীয় সফরেও সাধারণ মানুষ এই সিন্ডিকেটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ট্রাভেল ব্যবসায়ী টিপু মুন্সি বলেন, ‘প্রতি মাসে প্রায় ৩ কোটি এবং বছরে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা চাঁদা বাবদ আদায় করা হয়েছে। এই অর্থের কোন হিসাব নেই। এসব অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে আমরা দুদক এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ট্রাভেল ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম, সবুজ মুন্সি, জুম্মন চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম রতনসহ শতাধিক ট্রাভেল এজেন্সির মালিক।