মেরাদিয়ায় কোরবানির পশুরহাট চালুর দাবিতে সমাবেশ

রাজধানীর মেরাদিয়ায় ঐতিহ্যবাহী কোরবানির পশুর হাট চালুর দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার (১৭ মে) বিকেলে মেরাদিয়া বাজার প্রাঙ্গণে মেরাদিয়া, খিলগাঁও, বনশ্রী ও রামপুরা এলাকার স্থানীয় জনগণের আয়োজনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, "কোরবানীর পশুর হাট বন্ধ করা ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীদের ষড়যন্ত্র", "কোরবানির হাট কোন সমস্যা নয়, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা চাই", "কোরবানির হাট বন্ধ করা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত", "ধর্ম পালন করার অধিকার প্রত্যেকের সাংবিধানিক অধিকার", "কোরবানির হাট অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে", "একমাত্র ভারতের দালালরাই কোরবানির হাট বন্ধ করতে চায়", "শাহজালালের বাংলায় কোরবানির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মানব না"।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, কোরবানির পশুর হাট বন্ধ করার চেষ্টা ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীদের ষড়যন্ত্র। কোরবানির হাট কোনো সমস্যা নয়। বরং এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সকল অসুবিধা দূর করা সম্ভব। কোরবানির হাট বন্ধ করার চেষ্টা এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের শামিল এবং ধর্ম পালন করার অধিকার প্রত্যেকের সাংবিধানিক অধিকার।
বক্তারা বলেন, কোরবানির পশুর হাট শুধু ধর্মীয় অনুষঙ্গই নয়, এটি দেশের অর্থনীতিকেও সমৃদ্ধ করে। যারা কোরবানির হাট বন্ধ করতে চায়, তারা এদেশের শত্রু এবং একমাত্র ভারতের দালালরাই এমন কাজ করতে পারে। শাহজালালের বাংলায় কোরবানির বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেওয়া হবে না বলেও তারা হুঁশিয়ারি দেন তারা।
তারা বলেন, জনবহুল ঢাকা শহরে কোরবানির পশুর হাটের সংখ্যা কমানো নয়, বরং বাড়ানো উচিত। হাট দূরে সরিয়ে নেওয়ার কারণে একদিকে যেমন পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি পায়, তেমনি অন্যদিকে ক্রেতাদের দুর্ভোগ বাড়ে এবং নিরাপত্তার অভাব দেখা দেয়।
বক্তারা অভিযোগ করেন, মুসলমানদের কষ্ট দেওয়ার জন্যই কোরবানির হাটগুলোকে দূরে সরানো হচ্ছে। দূরে হাট থাকার কারণে পশু কিনতে যাওয়া ক্রেতাদের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন বক্তারা।
উক্ত সমাবেশে অবিলম্বে রাজধানীর মেরাদিয়ায় ঐতিহ্যবাহী কোরবানির পশুর হাট চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান এলাকাবাসী।
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল কোরবানির ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বনশ্রীর মেরাদিয়ায় এবার গরুর হাট বসানো যাবে না বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। স্থানীয় এক বাসিন্দার করা রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। বিজ্ঞপ্তির নয় নম্বর কলামে ‘মেরাদিয়া বাজারের পূর্ব পাশে খাল পাড়ের খালি জায়গা’ পশুর হাটের বিষয়টি উল্লেখ ছিল। পরে বনশ্রীর স্থানীয় বাসিন্দা মো.শাহবউদ্দিন শিকদার নয় নম্বর কলামের বৈধতা নিয়ে রিট করেন।