ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬শে আগস্ট ২০২৫, ১১ই ভাদ্র ১৪৩২


অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য পিআর পদ্ধতি চালু করুন : ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের


প্রকাশিত:
২৫ আগস্ট ২০২৫ ২৩:১৩

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, “দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় । জুলাই সনদ বাস্তবাায়ন না হলে বিপ্লব অপূর্ণ রয়ে যাবে। সংস্কারবিহীন নির্বাচন হলে আবারও ফ্যাসিবাদ জন্ম নেবে। যারা আওয়াামী আমলের মতো স্বৈরাচার ফিরিয়ে আনতে চায়, তারাই সংস্কার ছাড়া নির্বাচন চায়।

তিনি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর যাদের জনগণ ক্ষমতায় বসিয়েছে, তারাও আজ ফ্যাসিবাদের সাথে আপস করছে। এই বাস্তবতায় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে।

২৪ আগস্ট ২০২৫ খ্রি: রবিবার বিকাল ৩ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের আয়োজিত পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ও ‘জুলাই সনদ’-এর আইনি ভিত্তি র্শীষক গোল টেবিল বৈঠাকে তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা সভায় দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, আইনজ্ঞ, রাজনীতিক ও আন্দোলনকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য এবং বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করীম বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-শিক্ষক ও জনতার সম্মিলিত গণ-অভ্যুত্থান এক অনন্য মাইলফলক। এর রাজনৈতিক ফসল ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র হলেও, এ দলিল এখনো আইনি ভিত্তি পায়নি। এটি নিশ্চিত করতে না পারলে বিপ্লবের অর্জন কাগজেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-শিক্ষক ও জনতার গণ-অভ্যুত্থান নিঃসন্দেহে এক অনন্য মাইলফলক। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসনের পতনের মধ্য দিয়ে যে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার সূচনা হয়েছে, তার কেন্দ্রে রয়েছে ছাত্র-শিক্ষক ও জনতার অভূতপূর্ব ঐক্য। পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতির আলোচনায় প্রত্যাবর্তন এবং সাম্প্রতিক সময়ে ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫। এই দলিল দুটি ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রসংস্কারের রূপরেখা এবং গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আইনি ভিত্তি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হলে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা একান্ত জরুরী। উক্ত ঘোষণা মূলত অসম্পূর্ণ।

আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বক্তারা বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ৯১টি দেশে পিআর পদ্ধতি চালু রয়েছে। বাংলাদেশেও এই পদ্ধতি চালু হলে স্বৈরাচারী প্রবণতা রোধ হবে, সংলাপের সংস্কৃতি গড়ে উঠবে এবং বহু দলীয় অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। বক্তারা দাবি করেন, “প্রার্থী নয়, প্রতীকে ভোট” এই ভিত্তিতে নির্বাচন হলেই জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটবে।

সভার সভাপতি অধ্যাপক ড. এম কোরবান আলী বলেন, “পিআর পদ্ধতি শুধু একটি নির্বাচন পদ্ধতি নয়, এটি একটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সূচনা। আমাদের দেশের রাজনৈতিক কাঠামো ও প্রশাসনিক দুর্বলতা দূর করতে হলে এ সংস্কার এখন সময়ের দাবি।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ মো: সিরাজুল ইসলাম, জিএম আলাউদ্দিন, অধ্যক্ষ ড. মো: সাখাওয়াত হোসাইন, অধ্যাপক নূর নবী মানিক, প্রফেসর ড. আবুল কালাম পাটোয়ারী, প্রফেসর ড. উমার আলী, ড. নজরল ইসলাম, ব্যারিস্টার বেলায়াত হোসাইন, মানবাধিকার নেতা ড. গোলাম রহমান ভূঁইয়া, এবং অন্যান্য শিক্ষা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।

বক্তারা সরকার ও রাজনৈতিক দলসমূহকে অনতিবিলম্বে একটি ঐকমত্য ভিত্তিক আইনি কাঠামো নির্ধারণ করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন এবং ‘জুলাই সনদ’-কে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান।