ম্যাডামের হাতে ১০ লাখ টাকা দিয়ে বিএনপি করি, সান্টুর বক্তব্যে তোলপাড়!

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার হাতে দল চালাতে ১০ লাখ টাকা দিয়ে বিএনপির রাজনীতি শুরু করি। তার এ কথা বলায় বরিশালজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
রোববার (২০ জুলাই) বানারীপাড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু বলেন, আমি ১৭ বছর ধরে বিএনপি করি না; অনেক আগে থেকে করি। মান্নান ভূইয়া যখন দলের মহাসচিব। ফালু ভাই জানেন, দল চালাতে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার হাতে ১০ লাখ টাকা দিয়েছি।
তখন আমি দল করিনা, বিএনপি করি। এলাকায় তখন এক শতাংশ সম্পত্তির দাম ছিল ৫০ টাকা। সেই সময় ১০ লাখ টাকার জায়গা কিনলে এখন ১০ কোটি একশ কোটি দাম হতো। ম্যাডাম তখন বলেছিলেন আমার কথা মনে রাখবেন। তিনি কথা রেখেছেন ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী হয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। সালাউদ্দিন ভাই তখন ম্যাডামের এপিএস। তিনিই বলেছিলেন ম্যাডাম আপনার সঙ্গে দেখা করতে চান। ৯৩ সালে ম্যাডামের সঙ্গে হেলিকপ্টারে আমি উজিরপুরে আসি, মিটিং করি। তার হাত ধরে বিএনপিতে যোগদান করি।
সান্টু তার এসব কথার সত্যতা প্রমাণে সাক্ষী হিসেবে বলেন, ফালুভাই, সালাউদ্দিন ভাই এখনও বেঁচে আছেন ম্যাডামও বেঁচে আছেন। দলের নেত্রীকে টাকা দেওয়ার কথা গর্বের সঙ্গে অকপটে স্বীকার করে তার দেওয়া এ বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
আপসহীন নেত্রীকে জড়িয়ে সরফুদ্দিন সান্টুর এ ধরণের বক্তব্য বিএনপি নেতা-কর্মীদের হতবাক, বিস্মিত ও আহত করেছে। উজিরপুরের গুঠিয়ায় সান্টুর মালিকানাধীন বায়তুল ভিউ কনভেনশন সেন্টারে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান। উদ্বোধক ছিলেন বরিশাল জেলা বিএনপির (দক্ষিণ) আহবায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন খান। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নু। বিশেষ বক্তা ছিলেন বরিশাল জেলা বিএনপির (দক্ষিণ) সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস. সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু, হায়দার আলী লেলিন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের উপস্থিতিতে দলের চেয়ারপার্সনকে নিয়ে এধরণে বক্তব্য শুনেও তারা ছিলেন নিরব-নিশ্চুপ। তিনি প্রথমে আওয়ামী লীগ, পরে বিএনপি, ওয়ান ইলেভেনে কিংস পার্টি সেখান থেকে পরে আবার বিএনপিতে ভেড়েন। ১৯৯৬ সালে তিনি বরিশাল-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে যান। ২০০৮ সালে কিংস পার্টির ব্যানারে বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বদন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। এর পরে ২০০৮ ও ১৮ সালে বিএনপির টিকিটে বরিশাল-২ আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। তিনি এ পর্যন্ত চারটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে চারবারই পরাজিত হন।