এই মুহুর্তে জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে স্থানীয় নির্বাচন জরুরি: বাংলাদেশ কংগ্রেস

এই মুহুর্তে জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান এ্যাডঃ কাজী রেজাউল হোসেন। বাংলাদেশ কংগ্রেস আয়োজিত “আগে কোন্ নির্বাচন : স্থানীয় নাকি জাতীয়” শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। আজ শুক্রবার বিকাল ৩টায় সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের ১ নং হলে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায় তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ও সিটি কর্পোরেশন- দেশের এসব স্থানীয় সরকার কাঠামো এখন জনপ্রতিনিধিহীন। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিয়ে আপততঃ সেবা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা চললেও গত ৮ মাসের তথ্য বলছে- পুরো স্থানীয় সরকার কাঠামো কার্যতঃ ভেঙে পড়েছে; উন্নয়ন কাজের পাশাপাশি সেবা কার্যক্রমেও নেই গতি।
এ্যাডঃ কাজী রেজাউল হোসেন বলেন, দেশ চালানোর জন্য অন্তর্বর্তীকালিন সরকার দেশে বিদ্যমান রয়েছে, কিন্তু জনগণের কাঙ্খিত ও নিয়মিত সেবা প্রদানের জন্য কোন স্থানীয় সরকার বিদ্যমান নেই। ফলে নাগরিক সেবা প্রদান বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে স্থানীয় সরকার কাঠামো শক্তিশালী করতে দ্রুতই নির্বাচন হওয়া দরকার। স্থানীয় সরকার শক্তিশালী না থাকায় সরকারের কাজ তৃণমূল পর্যন্ত পৌছানো দুরূহ হয়ে যাচ্ছে।
কাজী রেজাউল হোসেন আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন এখনো কোন নির্বাচন সম্পন্ন করেনি। নির্বাচন আয়োজন বা সম্পন্নের বাস্তব অভিজ্ঞতা তারা অর্জন করতে পারেননি। ধাপে ধাপে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে তারা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে এবং সক্ষমতার প্রমান দিতে পারেন। দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখন দূর্বল অবস্থায় আছে। এমতাবস্থায় তাদের দিয়ে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব না হলেও ধাপে ধাপে স্থানীয় নির্বাচন করা সম্ভব। দেশে এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন না হওয়ার কোন কারণ নেই।
গোলটেবিল আলোচনায় বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহাসচিব এ্যাডঃ মোঃ ইয়ারুল ইসলাম বলেন, জাতীয় নির্বাচন সম্পন্নের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থার ব্যপক সংষ্কার দরকার। নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করলেও তারা নির্বাচন পরিচালনা করে না। নির্বাচন পরিচালনা করে ডিসি ও ইউএনও’র নেতৃত্বে নির্বাহী বিভাগ। ফলে জাতীয় নির্বাচন সরকারের দ্বারা ব্যপকভাবে প্রভাবিত হয় এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন ব্যবস্থাকে নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্বমুক্ত করতে এখানে সংষ্কার প্রয়োজন যা সংবিধান বলে দিয়েছে। এজন্য নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব নিয়োগ বিধি ও লোকবল দরকার যাদের নেতৃত্বে প্রতিটি নির্বাচন পরিচালিত হতে হবে। এটার বাস্তবায়ন না হলে জাতীয় নির্বাচনে জনআকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে না। কিন্তু স্থানীয় নির্বাচন পরিচালনায় উপজেলা, জেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা নেতৃত্ব দিতে পারেন। অর্থাৎ নির্বাচন ব্যবস্থার সংষ্কার ছাড়াই নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছা থাকলে বর্তমান কাঠামোয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে।
গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য মুহাম্মদ আশরাফ আলী আকন্দ, জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, জাগপা’র সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রধান, গণসংহতি আন্দোলন’র এ্যাডঃ রেজাউল ইসলাম রিয়াজ, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি’র মহাসচিব নিজামুল হক নাঈম, এনসিপি’র যুগ্ম সমম্বয়ক ডাঃ জাহিদুল বারী, গণআজাদী লীগের সভাপতি আতাউল্লাহ খান, বাংলাদেশ জাস্টিস এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি'র চেয়ারম্যান মোঃ দেলোয়ার হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
গোলটেবিল আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ভাইস-চেয়ারম্যান এ্যাডঃ মোঃ শফিকুল ইসলাম, উপদেষ্টা পরশ ভাসানী, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নাজমুল মোর্শেদ, অর্থ সম্পাদক প্রভাষক মোস্তফা আনোয়ার ভুইয়া রিপন, দপ্তর সম্পাদক মোঃ তুষার রহমান, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডঃ আব্দুর রউফ খান, কৃষি, খাদ্য ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোঃ তোফায়েল আহমেদ, বন, পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব আবু সায়েম মোহাম্মদ সা'-আদত উল করীম, যোগাযোগ ও বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আজিজুল হক সুমন, সমাজ সেবা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডঃ মোঃ মাইনুল ইসলাম, যুগ্ম অর্থ সম্পাদক মোঃ রেদোয়ান হোসেন, যুগ্ম সমাজ সেবা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আবু জাফর, শ্রমিক নেতা সেলিম রেজা বাচ্চু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।