ঢাকা শনিবার, ১০ই মে ২০২৫, ২৮শে বৈশাখ ১৪৩২


সবাই ভোট দিতে পারছে, এ পরিবেশ আমরাই সৃষ্টি করেছি: নানক


২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৪৬

আপডেট:
১০ মে ২০২৫ ১৯:০৮

জনসমর্থনের প্রতি তোয়াক্কা না করা বিএনপির জন্মগত মৌলিক বৈশিষ্ট্য বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।

তিনি বলেন, ‘ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সকাল থেকে শুরু হয়েছে। ভোট গ্রহণ সুষ্ঠুভাবে চলছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে প্রথমবারের মতো শতভাগ ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ চলছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের এই ব্যবস্থাকে আমরা স্বাগত জানাই।’

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সিটি নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নানক বলেন, ‘ভোটাধিকার জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। ভোটাররা শান্তিপূর্ণ ও স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক এটাই আমাদের প্রত্যাশা। বিগত দিনগুলোতে আমরা দেখেছি, জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে বিএনপি-জামাত চক্র ছিনিমিনি খেলেছে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে না, তারা প্রযুক্তির বিপক্ষে কথা বলে। কারণ প্রযুক্তির বিকাশের মধ্যেই স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও জনগণের ক্ষমতায়নের পথ সুগম হয়।’

তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র দখল করে, সিল পিটিয়ে একজনের ভোট আরেকজনের দেওয়ার সুযোগ ইভিএম পদ্ধতিতে নেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- আমার ভোট আমি দেব, যাকে পছন্দ তাকে দেব। এই নিয়মে ভোট চলছে এবং সেভাবে ভোট হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ সবাই ভোট দিতে পারছে, সেই পরিবেশ আমরাই সৃষ্টি করেছি। প্রত্যেকে যার যার ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখবে।’

বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে নানক বলেন, ‘বিএনপি এজেন্ট বেড় করে দেয়া হয়েছে এটা তাদের পুরোনো রেকর্ড।  আপনারা ( সাংবাদিক)  লক্ষ্য করেছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন চিরাচরিত মিথ্যাচার দিয়ে দিন শুরু করেছেন। তিনি নিজে গোপীবাগ শহীদ শাহজাহান প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেছেন। সেই কেন্দ্রে তিনি যখন ভোট প্রদান করেন তখন তাদের পোলিং এজেন্ট ছিল না। অথচ তারা বায়বীয় কায়দায় মিথ্যাচার করছে যে, বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তাদের পোলিং এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন যে, ভোট শুরু হওয়ার আগেই ইশরাক বলেছিলেন-আহত বা নিহত যা-ই হই, ভোট কেন্দ্র ত্যাগ করব না। যেখানে নিজেদের পোলিং এজেন্টের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারে নাই।  সেখানে আগে থেকেই আহত বা নিহত হওয়ার কথা বলে মাঠ গরম করার মধ্য দিয়ে নির্বাচন বানচাল করার দুরভিসন্ধিমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে।’

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন,  ‘আমরা আগে থেকেই বলেছি, বিএনপি ঢাকার বাইরে থেকে সন্ত্রাসী-ক্যাডার বাহিনী এনে ঢাকায় জড়ো করেছে। তারা গন্ডগোল পাকিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে ফায়দা লোটার ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। জনগণ বারংবার বিএনপি-জামাত চক্রকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই জনগণের ওপর তাদের আস্থা নেই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে।’

কূটনীতিকদের সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নিয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী বলেন,  ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশন দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। কূটনৈতিক মিশনগুলো থেকে বিদেশি পর্যবেক্ষকের পাশাপাশি দেশি পর্যবেক্ষক নিয়ো দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষক নিয়োগে আন্তর্জাতিক বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন । বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরিরত বাংলাদেশিদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে মনোনীত করে কূটনৈতিক মিশনগুলো সঠিক করেননি।’

আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য বলেন, ‘আপনারা ( সাংবাদিক)  জানেন, বিশ্বের অনেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচনী জরিপ হয়। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রাক্কালে একটি স্বতন্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠা নির্বাচনী জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে। এ ধরনের নির্বাচনী জরিপ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হয়। দেখা গেছে, জরিপে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত দুই মেয়র প্রার্থী বিএনপি মনোনীত দুই প্রার্থীর চেয়ে বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে। জরিপের ফলাফল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। এ ধরনের বিজ্ঞানসম্মত গবেষণালব্ধ ফলাফলে যেহেতু বিএনপির আস্থা নেই সেহেতু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে নির্লজ্জভাবে মিথ্যাচার করেছেন। এই ধরনের গবেষণা ও জরিপের মাধ্যমে নির্বাচন পূর্ববর্তী জনসমর্থনের চিত্র ফুটে ওঠে।’

তার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি,  আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম,  ড. হাছান মাহমুদ,  সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া,  মুক্তিযুদ্ধ বিষয় সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ।