ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৩শে অক্টোবর ২০২৫, ৮ই কার্তিক ১৪৩২


টেকনাফে পাহাড়ের পর সাগর পথে পাচার কালে ২৯ জন ভুক্তভোগী সহ মানব পাচারকারী চক্রের ৩ সদস্য আটক


প্রকাশিত:
২২ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৪৭

সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্র দীর্ঘ দিন ধরে দুর্গম পাহাড়ে আস্তানা করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারী,পুরুষ ও শিশু মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে পাচার করে আসছিল। মানব পাচারে পাহাড়ি এলাকায় আস্তানায় সম্প্রতি বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড ( বিজিবি) সহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দফায় দফায় অভিযান পরিচালনা করে উদ্ধার করেছে বিপুল পরিমান পাচার হতে যাওয়া ভুক্তভোগী নারী,পুরুষ ও শিশু কে।

প্রশাসনের পাহাড়ি এলাকায় কঠোর নজরদারি বৃদ্ধি পাওয়ায় কোণঠসা হয়ে পড়ে মানব পাচারকারী চক্র।তারা পাচারের কৌশল পরিবর্তন করে এবার সাগর পথে মানব পাচার কার্যক্রমে তৎপর হয়ে উঠেন। কিন্তু মানব পাচার ও সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনে বর্ডার গার্ড ( বিজিবি) সেক্টর রামুর টেকনাফ ব্যাটালিয়ন -(২ বিজিবি) ২২ অক্টোবর সেক্টর কমান্ডার রামুর টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আশিকুর রহমান পিএসসি দুই টি দুঃসাহসিক অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারী চক্র গুলোর মেরুদণ্ড ভেঙে দেন।আজ ২২ অক্টোবর ভোরে দুর্গম পাহাড়ে জিম্মি উদ্ধারের পর গত মধ্যরাতে মেরিন ড্রাইভ সৈকত এলাকায় অভিযানে নামেন টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এতে পাচারের মুহূর্তে ২৯ (উনত্রিশ) জন নিরীহ ভুক্তভোগীকে নিরাপদে উদ্ধার সহ ৩ (তিন) জন মানব পাচারকারীকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে বিজিবি।

টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আশিকুর রহমান পিএসসি জানান,দিনের শুরুতে পাহাড়ে সশস্ত্র পাচারকারীদের গোপন আস্তানা গুড়িয়ে দেওয়ার পর, ২ বিজিবি ব্যাটালিয়ন রাজাছড়ায় পরিচালিত অভিযানের সূত্রধরে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নজরদারি সমুদ্র উপকূলের দিকে ঘটনাস্থল থেকেই মানব পাচারের দায়ে চক্রটির ৩ (তিন) জন মূলহোতাকে দেশীয় অস্ত্রসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করেন বিজিবি। *আটকৃত আসামী টেকনাফের মোঃ সেলিম (৩৫)মোঃ নুরুল আবছার (১৯), এছাড়া মানব পাচারকারী চক্রের তিন সদস্য টেকনাফের মোঃ মাহমুদুল হক (৩১) সৈয়দুল ইসলাম (৩০) ও আজিজুল হক (৩০) সহ ৬/৭ জন মানব পাচারকারী বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় মানব পাচারকারী চক্রের ইন্জিন চালিত সাম্পান নৌকা থেকে একটি চাকু,একটি মোটরসাইকেল ও ইন্জিন চালিত একটি সাম্পান নৌকা উদ্ধার করেছে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি)।

টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, লেঃ কর্নেল আশিকুর রহমান, পিএসসি বলেন, "আজকের দিনটি টেকনাফ সীমান্তে মানব পাচারকারী ও সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রগুলোর জন্য একটি চরম দুঃসংবাদ বহন করে এনেছে। আমরা ভোরে পাহাড়ের দুর্গম চূড়া থেকে জিম্মি উদ্ধার করেছি এবং সন্ধ্যায় সমুদ্র উপকূলে মানব পাচার বানচাল করেছি। সর্বশেষ দুইটি সফল মানব পাচার বিরোধী অভিযানের মাধ্যমে বিজিবি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, টেকনাফ সীমান্তের পাহাড় থেকে সমুদ্রের জলসীমা পর্যন্ত কোনো অপরাধীর জন্য এক ইঞ্চি জায়গাও নিরাপদ নয়। মানবতা বিরোধী এমন জঘন্য অপরাধ আমরা কোনোভাবেই বরদাশত করব না। আমাদের এই ধারাবাহিক ও কঠোর নজরদারি এবং অভিযান অব্যাহত থাকবে।"

উদ্ধার করা ২৯ জন ভুক্তভোগী কে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে একই সাথে আটককৃত ০৩ জন মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে  বিজিবি।