ঢাকা শনিবার, ১০ই মে ২০২৫, ২৮শে বৈশাখ ১৪৩২


স্ত্রী ও বোনকে উপদেষ্টা বানালেন জিএম কাদের

জাপায় পাল্টাপাল্টি পদোন্নতি অব্যাহত


১৮ জানুয়ারী ২০২০ ১৩:৩৫

আপডেট:
১০ মে ২০২৫ ২১:১৮

স্ত্রী ও বোনকে উপদেষ্টা বানালেন জিএম কাদের
রওশন এরশাদের সইয়ে ১৬ জনকে পদোন্নতির আদেশের পাল্টাপাল্টি হিসাবে এবার অর্ধশতাধিক নেতাকে বিভিন্ন পদে আসীন করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। এর মধ্য দিয়ে দেবর-ভাবির মধ্যে নতুন যুদ্ধ প্রকাশ্য হলো।

চেয়ারম্যান কাদের শুক্রবার পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে নতুন ২৯ জন উপদেষ্টা, ৩৭ জন ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১৪ জন যুগ্ম মহাসচিবের নাম ঘোষণা করেছেন; এর মধ্যে নিজের স্ত্রী ও বোনকে বানিয়েছেন উপদেষ্টা।
প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বড় ছেলে রাহগির আল মাহি এরশাদকে (সাদ এরশাদ) দলের যুগ্ম মহাসচিবের পদ দিয়েছেন জিএম কাদের। অথচ মাত্র দুদিন আগে সাদের মা ও জাপার  প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ তার ‘ক্ষমতাবলে’ সাদকে দলের কো-চেয়ারম্যানের পদ দিয়েছিলেন।
রওশন এরশাদ বুধবার যে ১৬ জনকে পদ দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে সাদ ছাড়া ছয়জনকে জিএম কাদের কমিটিতে রেখেছেন। তাতে ভাইস চেয়ারম্যান পদের একজন ছাড়া বাকিদের জুটেছে অন্যপদ।
এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির প্রথম সম্মেলনে ২৮ ডিসেম্বর রওশনের জন্য প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদ সৃষ্টি করা হয়। চেয়ারম্যান হন জিএম কাদের। ওই সম্মেলনে রওশন ছিলেন না, আসেননি সাদ এরশাদও। সে সময় রওশনের ‘আলঙ্করিক পদ’ নিয়ে মহাসচিব রাঙ্গা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘দলের সর্বক্ষেত্রে রওশন এরশাদের অবস্থান দলের চেয়ারম্যানের ঊর্ধ্বে থাকবে।’ এরপর ১৫ জানুয়ারি এরশাদপত্মী রওশন নিজের স্বাক্ষরে ১৬ জনকে দলের বিভিন্ন পদে মনোনীত করলে তা নিয়ে আপত্তি তোলেন দেবর কাদের। পার্টি চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, পদোন্নতির ওই খবর ‘বিভ্রান্তিকর’, এভাবে নিয়োগ দেওয়ার অধিকার প্রধান পৃষ্ঠপোষকের ‘নেই’।
জিএম কাদেরের উপদেষ্টা যারা : হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কমিটিতে উপদেষ্টা পদে ছিলেন ১২ জন। জিএম কাদের চেয়ারম্যানের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পাওয়ার পর দুই দফায় ২৯ জনকে উপদেষ্টা করে নিয়েছেন। উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন স্ত্রী শেরিফা কাদের ও বোন মেরিনা রহমান। মেরিনা রহমান এর আগে সংসদ সদস্য হলেও শেরিফা কাদের রাজনীতির অঙ্গনেই ছিলেন না। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উৎসবের উদ্যোক্তা হিসেবেই সঙ্গীতশিল্পী শেরিফা কাদেরের নামটি এতদিন শোনা যেত।
জিএম কাদেরের উপদেষ্টা পরিষদে এসেছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর স্ত্রী মেহেজেবুন্নেসা রহমান টুম্পা, গত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাসিবুল ইসলাম জয় ও মনিরুল ইসলাম মিলন। আরও আছেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ক্বারী মো. হাবিবুল্লাহ বেলালী, নুরুল আজহার শামীম, আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী, সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, মো. সেলিম উদ্দিন, হাসান সিরাজ সুজা, মো. নোমান, সোমনাথ দে, এমএম নিয়াজ উদ্দিন, আশরাফ উদ দৌলা, এমএ কুদ্দুস খান, মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, জিয়াউল হক মৃধা, মো. লুৎফর রহমান চৌধুরী, এমএ তালহা, দেলোয়ার হোসেন, মো. নুরুল ইসলাম মিলন, গিয়াস উদ্দিন, একরামুল হক, সরদার শাহজাহান, আতাউর রহমান সরকার ও মো. জহিরুল আলম রুবেল।
৩৭ জন ভাইস চেয়ারম্যান : জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যানের ৪১ পদের মধ্যে ৩৭ জনের নাম ঘোষণা করেছেন চেয়ারম্যান। এরা হলেনÑ মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম, মাহজাবিন মোরশেদ, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, সালা উদ্দিন আহমেদ, শামসুল আলম মাস্টার, হাজী আবু বকর, মো. আরিফুর রহমান খান, দেওয়ান আলী, বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল, অধ্যাপক মহসিন ইসলাম হাবুল, আমানত হোসেন আমানত, নজরুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, রুস্তম আলী ফরাজী, নিগার সুলতানা রানী, মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, দিদারুল কবির দিদারের নাম এসেছে এ তালিকায়। এ ছাড়া শফিকুল ইসলাম শফিক, আহসান আদেলুর রহমান, গাফফার বিশ^াস, সিরাজুল ইসলাম, মোস্তফা আল মাহমুদ, আব্দুর রউফ মানিক, শফিকুল ইসলাম মধু, শেখ আলমগীর হোসেন, নুরুল ইসলাম ওমর, সুলতান আহমেদ সেলিম, মোবারক হোসেন আজাদ, রাকিবা নাসরিন, আবুল মাকসুদ চৌধুরী নান্টু, সালমা হোসেন, আশরাফ সিদ্দিকী, তোফাজ্জল হোসেন, শফিউল্লাহ শফি, শাহ-ই আজম, মো. ইলিয়াস ও পনির উদ্দিন আহমেদ ভাইস চেয়ারম্যানের পদ পেয়েছেন।
১৪ জন যুগ্ম মহাসচিব : জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুগ্ম মহাসচিবের ১৬টি পদের মধ্যে পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ১৪ জনের নাম ঘোষণা করেছেন। এরা হলেনÑ গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ইয়াহহিয়া চৌধুরী, নুরুল ইসলাম দীপু, মো. নোমান মিয়া, এসএম ইয়াসির, আমিনুল ইসলাম ঝন্টু, আমির উদ্দিন আহমেদ ঢালু, শাহিদা রহমান রিংকু, রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ, মো. শামসুল হক, আব্দুল হামিদ ভাসানী, এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু, মো. আমির হোসেন ও ইকবাল হোসেন তাপস।
সুনীল শুভ রায় জানান, জাতীয় পার্টির ২৯৯ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য পদ বণ্টনের জন্য ২০ জানুয়ারি থেকে আগ্রহী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেবেন তাদের চেয়ারম্যান