ঢাকা রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১


সশস্ত্র বাহিনীর ছোট ছোট টিম মাঠে থাকবে,

১৫ ডিসেম্বরের পর মাঠে সশস্ত্র বাহিনীর টিম: সিইসি


২২ নভেম্বর ২০১৮ ২৩:৪৩

আপডেট:
২২ নভেম্বর ২০১৮ ২৩:৪৬

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৫ ডিসেম্বর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর ছোট ছোট টিম মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।

তিনি বলেন, ১৫ ডিসেম্বরের পর সশস্ত্র বাহিনীর ছোট টিম পুলিশের সঙ্গে দেখা করবে। প্রতিটি জেলায় থাকবে সশস্ত্র বাহিনীর এসব ছোট ছোট টিম। এসব টিমকে নিয়ে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে পুলিশকে।

বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক বিশেষ সভায় পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে এসব কথা বলেন সিইসি।

এসময় তিনি আরও বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর এই টিমের যাতায়াতের ব্যবস্থা পুলিশকে করে রাখতে হবে। অন্যান্য বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে পুলিশকে নির্দেশনা জানান সিইসি।

অনুষ্ঠানে পুলিশ বাহিনীকে ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে সিইসি নুরুল হুদা বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তথ্য সংগ্রহ করার কথা আমরা বলিনি। এটা আপনারা করবেন না। কারণ এটা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা এতে বিব্রত হন। আমরা এটা চাই না।

তিনি আরও বলেন, যদি তথ্য সংগ্রহ করার প্রয়োজন হয় তাহলে কোনো ব্যক্তির তথ্য গোপন সূত্র ব্যবহার করে সংগ্রহ করতে পারেন। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করার দরকার নেই। এটা আমরা চাই না।

তফসিল ঘোষণার পর কাউকে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার না করার নির্দেশনাও দেন সিইসি। তিনি বলেন, বিনা ওয়ারেন্টে কাউকে গ্রেফতার করবেন না। মামলা করবে না। কাউকে হয়রানিমূলক মামলা বা গ্রেফতার করা যাবে না। আশা করি আপনারা এটা করছেনও না।

সিইসি আরও বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কারণে যেন নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।

নুরুল হুদা বলেন, এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সব দল এই নির্বাচনে অংশ নেবে। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। কিন্তু সব প্রস্তুতি একা করা সম্ভব নয়। প্রজাতন্ত্রের সবাই মিলেই নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কাজ করব। নির্বাচনের সিংহভাগ দায়িত্ব পুলিশের ওপরে থাকে। ভোটারের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব ধরনের নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনাদের (পুলিশ) ওপরই বেশি থাকে।

এ বিষয়ে সহায়তা চেয়ে সিইসি আরও বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা রোধ করাও আপনাদের দায়িত্ব। ঐতিহ্যগতভাবেই এই দায়িত্ব আপনাদের। এবারও দেশের বৃহত্তম স্বার্থে আপনারা দায়িত্ব পালন করবেন। সংবিধান মতে কর্তৃত্ব নয়, বিবেক মতে কাজ করতে হবে। প্রজাতন্ত্রের সবাই নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করবে। আমরা কারও ওপর কর্তৃত্ব করব না। নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তার বিষয়ে সংবিধানে যেমন বলা আছে, সেভাবেই কাজ করতে হবে।

নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকাণ্ডে নির্বাচন কমিশন নজরদারি করবে জানিয়ে সিইসি বলেন, আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনে আমরা পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। তবে কমিশন আপনাদের কর্মকাণ্ড নজরদারি করবে। অলরেডি অভিযোগ আসা শুরু হয়েছে। তবে নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করবেন। ভালোভাবে যাচাই না করে আপনাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এতে আপনাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে খেয়াল রাখতে হবে, নির্বাচন যেন কোনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।

সিইসি জানান, আইনশৃঙ্খলার বিভিন্ন পর্যায়ের তথ্য একমাত্র পুলিশেরই আছে। তাই বিভিন্ন বাহিনী পুলিশের কাছ থেকেই পরামর্শ নেবে। পুলিশকে এখনই কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে বলেও জানান সিইসি।

সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইজিপি, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনারসহ পুলিশ সুপার পর্যন্ত পদমর্যাদার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।