আলাস্কা শীর্ষ বৈঠক পুতিনের ‘ব্যক্তিগত বিজয়’ : জেলেনস্কি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ভ্লাদিমির পুতিনের যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ পাওয়াকে রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য একটি ‘বড় ধরনের ব্যক্তিগত বিজয়’ হিসেবে দেখছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি আরও মন্তব্য করেছেন, এই বৈঠকের ফলে মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হবে।
আগামী শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কায় ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে এই শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০২১ সালের পর এটিই হতে যাচ্ছে কোনো মার্কিন ও রুশ প্রেসিডেন্টের মধ্যে প্রথম সরাসরি আলোচনা।
ইউক্রেনে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে চলা রুশ আগ্রাসন বন্ধে মধ্যস্থতার আগ্রহ দেখিয়েছেন ট্রাম্প। তবে জেলেনস্কির আশঙ্কা, যুদ্ধের অবসান ঘটাতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের স্বার্থ বিবেচনা না করেই মস্কোকে বড় ধরনের ছাড় দিয়ে ফেলতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জেলেনস্কি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমরা ডনবাস থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করব না। আমরা যদি আজ ডনবাস ছেড়ে দিই, তাহলে আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কৌশলগত উচ্চভূমি ও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানগুলো হারাতে হবে। এতে রাশিয়ার জন্য আক্রমণের নতুন পথ খুলে যাবে।’
উল্লেখ্য, রাশিয়া ২০২২ সাল থেকে ডনবাসের লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক অঞ্চল দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে এবং ইতোমধ্যে এগুলোকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবেও দাবি করেছে।
জেলেনস্কি সতর্ক করে আরও বলেন, দোব্রোপিলিয়ার আশপাশে রুশ বাহিনী উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তার ভাষায়, ‘রুশ ইউনিটগুলো একাধিক স্থানে প্রায় ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঢুকে পড়েছে। তাদের কিছু অংশ ধ্বংস করা হয়েছে, কিছু সেনাকে বন্দি করা হয়েছে, বাকিদের আমরা খুঁজে বের করব।’
যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী একটি ম্যাপিং প্ল্যাটফর্ম ‘ডিপস্টেট’ দেখিয়েছে, দোব্রোপিলিয়ার কাছে রুশ বাহিনীর দ্বিমুখী অগ্রগতির কারণে নিকটবর্তী কস্তিয়ানতিনিভকা শহরও হুমকির মুখে পড়েছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী দোব্রোপিলিয়া এলাকায় রাশিয়ার কোনো ঘাঁটি থাকার দাবি প্রত্যাখ্যান করলেও পরিস্থিতি ‘কঠিন’ বলে স্বীকার করেছে।
জেলেনস্কি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনের বৈঠকে অংশগ্রহণ তাকে কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ করে দেবে, যা তার জন্য একটি বড় বিজয়।
এদিকে, ইউক্রেনের স্বার্থ উপেক্ষা করে যেন কোনো সমঝোতা না হয়, সে বিষয়ে ইউরোপীয় নেতারাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জানা গেছে, শুক্রবারের শীর্ষ বৈঠকের আগে আজ বুধবার জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতারা ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলবেন।