শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন কবে—জানাল মন্ত্রণালয়

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে ৩০ শতাংশ নারী কোটা বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চলতি সপ্তাহে নিয়োগে নারী কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। এর আগে কর্তৃপক্ষের এক সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) মো. হেলালুজ্জামান সরকার বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা সংক্রান্ত ফাইল উপরে তোলা হয়েছে। আশা করছি চলতি সপ্তাহে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। কোনো কারণে চলতি সপ্তাহে না হলে প্রজ্ঞাপনটি আগামী সপ্তাহে হবে।’
জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নারী কোটা বাতিলের বিষয়ে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিল। সেই আবেদনের আলোকে বিষয়টি নিয়ে একাধিক সভা হয়েছে। সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়। এ মতামতের ফলে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তথ্যমতে, ১৯৯৯ সালে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে ৩০ শতাংশ নারী কোটা চালু করা হয়। কিন্তু পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিশ্বব্যাংকের সুপারিশে ২০০৪ সালে বিএনপি সরকার নতুন আদেশ জারি করে তা বাধ্যতামূলক করে। এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের অনগ্রসর এলাকায় নারী প্রার্থীর চরম সঙ্কট দেখা দেয়। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলা ও উপজেলায় নারী কোটা শিথিল করে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন ২০২৪ সালের ২৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনার আলোকে সরকারি চাকরির সব গ্রেডেই (৯ম-২০) ৭ শতাংশে কোটা রেখে বাকি ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে সরাসরি পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার এই মর্মে আদেশ জারি করছে, সমতার নীতি ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রজাতন্ত্রে কর্মে প্রতিনিধিত্ব লাভ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্থাৎ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত/আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্ব-শাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে/কর্মে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সব গ্রেডে নিম্নরূপ কোটা নির্ধারণ করা হইল।
ক-মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ, খ-মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, গ-ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং ঘ-শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ। নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট কোটার শূন্য পদগুলো সাধারণ মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা এবং বিগত ৪ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের পরিপত্রটিসহ পূর্বে জারিকৃত এ-সংক্রান্ত সব পরিপত্র/প্রজ্ঞাপন/আদেশ/নির্দেশ/অনুশাসন রহিত করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।