ঢাকা শুক্রবার, ১০ই মে ২০২৪, ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১


ভর্তি জালিয়াতি: ঢাবির যে ৩৭ শিক্ষার্থীকে খুঁজছে সিআইডি


২ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:০৯

আপডেট:
১০ মে ২০২৪ ২২:২৯

গত কয়েক বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় আরও অন্তত ৩৭ জনকে খুঁজছে সিআইডি। তাদের মধ্যে অবৈধ উপায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ২৬ শিক্ষার্থীও রয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের জবানবন্দী, চক্রের হোতাদের দেওয়া তথ্য এবং অনুসন্ধানে এসব শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সূত্রটি জানায়, দীর্ঘ অনুসন্ধানে অবৈধভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া একটি বড় গ্রুপকে চিহ্নিত করেছে সিআইডি। ভর্তি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ছাড়াও টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন কিনে এবং ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০০। গত এক বছরে এমন ৫৯ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি, যাদের মধ্যে ১৬ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিকে আরও ২৬ জন জালিয়াতিকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র। এদের মধ্যে ২০১৫-১৬ সেশনের ১৩ জন, ২০১৬-১৭ সেশনের ৬ জন এবং ২০১৭-১৮ সেশনের সাত শিক্ষার্থী রয়েছেন।

নতুন তালিকায় ২০১৫-১৬ সেশনে প্রশ্ন পেয়ে ভর্তি হয়েছেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির মাসুদ রানা এবং শাবিরুল ইসলাম সম্রাট, ইসলামিক স্টাডিজের সাঈদ হাসান নেহাল, শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের আবদুল ওয়াহিদ মিশন এবং ইছহাক আলী ইছা, বাংলা বিভাগে এম ফাইজার নাঈম সাগর, রাষ্ট্র বিজ্ঞানের লাভলুর রহমান, সমাজ কল্যাণ ও গবেষণার সৌভিক সরকার, হাসিবুর রশিদ, রাকিবুল হাসান, জাকারিয়া আল শাহরিয়ার পলাশ, মারুফ হাসান খান গালিব ও মো. মেহেদী হাসান।

২০১৬-১৭ সেশনের প্রশ্ন পেয়ে ভর্তি হওয়া নতুন ছয় জন হলেন- সমাজকল্যাণ ও গবেষণার ইসরাত জাহান ছন্দা, কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারের আবু মাসুম, অর্থনীতি বিভাগের জান্নাত সুলতানা, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আল আমিন পৃথক, শিক্ষা ও গবেষণার সৈয়দ আবু আহমেদ রোমান ও জাহিদুল ইসলাম ইছমী।

অন্যদিকে ২০১৭-১৮ সেশনের ম্যানেজমেন্টের রায়হান রহমান শাকিল, মার্কেটিংয়ের মহুয়া আফরোজ নিঝুম ও মাহবুব আলম সিদ্দিকী সম্রাট, আইন বিভাগের মো. রিজন আহমেদ, একাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেমের মো. রাকিব হাসান, শিক্ষা ও গবেষণার শারমিন আক্তার এবং ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের ইফতেখার আলম জিসানকে খুঁজছে সিআইডি।

এ ছাড়াও প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সদস্য মোহাইমিনুল ইসলাম বাঁধন, মো. সানোয়ার, তাজুল ইসলাম, সোহানুর রহমান সোহান, প্রণয় পান্ডে, জাহাঙ্গীর আলম, সাইদুর রহমান সাইদ, উৎপল বিশ্বাস, সৈয়দ শাকিল, খালিদ হাসান ও মাহবুব মামুনকে সিআইডি খুঁজছে ।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানান, ‘প্রশ্নফাঁস নিয়ে গত এক বছরে পাঁচটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। তদন্তে আরও কিছু নাম পাওয়া গেছে। ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে একটি মামলার চার্জশীট দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ভর্তি জালিয়াতি অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় সহযোগীতা করে আসছে এবং এটা অব্যাহত থাকবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি জালিয়াতিদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গত ১৬ অক্টোবর বলেছিলেন, জালিয়াতি যখন, যে অবস্থায় চিহ্নিত হবে, তখনই তার ভর্তি বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।