জনগনের চলাচলের রাস্তার উপর বেড়া নির্মাণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে বেড়া দিয়ে প্রতিবেশীর চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের নরহা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পায়নি। বিকল্প রাস্তা না থাকায় নিরুপায় হয়ে পানিতে সাঁতরে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের। ফলে তিন সপ্তাহ ধরে ওই পরিবারের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, নরহা গ্রামের কাজী তৈয়ব আহম্মদের বাড়িতে প্রবেশের একমাত্র রাস্তা বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পূর্ব পাশের প্রতিবেশীরা তৈয়ব আহম্মদের পরিবারের চলাচলের পথটি বন্ধ করে দিয়েছে। বাড়ির দুই পাশে পুকুর ও জলাবদ্ধতা থাকায় ওই পথই ছিল পরিবারের একমাত্র চলাচলের উপায়। এখন সেটিও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
জানা গেছে, রাস্তা বন্ধ থাকায় স্কুল ও মাদরাসা যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ওই পরিবারের দুই শিক্ষার্থী। জরুরি প্রয়োজনে পানিতে ভিজে কিংবা সাঁতরে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে যাওয়ারও উপায় নেই।
ভুক্তভোগী কাজী তৈয়ব আহম্মেদ বলেন, অনেক বছর ধরে আমরা রাস্তাটি ব্যবহার করে আসছি। প্রতিবেশীরা আমারই চাচাতো ভাই। তারা স্থানীয় আধিপত্য ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের চলাচলের রাস্তাটি বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না, পানিতে ভিজে যেতে হয়—যা খুবই কষ্টকর। রাস্তা না থাকায় আমার মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে, আমার ছোট ছেলেটাও মাদ্রাসায় যেতে পারছে না।
অবরুদ্ধ পরিবারের সদস্য ও হরিণবেড় শাহজাহান উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী কাজী তামান্না আক্তার বলেন, রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। প্রথম কয়েকদিন পানিতে ভিজে স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু এভাবে যাওয়া খুবই কষ্টকর। এখন আমার স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রতিবেশী দানা মিয়া বলেন, ওই পরিবারের সদস্যরা আমাদের অনেক অত্যাচার করে এবং বিভিন্ন মিথ্যা অপবাদ দেয়। তাই আমরা এই রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদ আহাম্মদ বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনা নাছরিন বলেন, রাস্তার অভাবে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না—এটা দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।