ঢাকা সোমবার, ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১লা আশ্বিন ১৪৩২


শেরপুরে ভোরের কাগজের সাংবাদিকের মোটরসাইকেল উদ্ধার হলেও হত্যার ষড়যন্ত্রকারি মুলহোতারা এখনো ধরাছোয়ার বাইরে


প্রকাশিত:
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২২:৪৯

শেরপুররের শীর্ষ সন্ত্রাসী মাদক সম্রাট রাসেল বাহিনীর হাতে আহত ভোরের কাগজের সাংবাদিক খোরশেদ আলমের ছিনতাই হওয়া মোটরসাইকেল অবশেষে উদ্ধার হলেও গত ২০ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি হত্যার ষড়যন্ত্রকারি মুলহোতারা ।

শুক্রবার গত ১৫ আগষ্ট রাতে ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের সন্ধ্যাকুড়া বাজারে সংবাদ প্রকাশের জের ধরেখোরশেদ আলমকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার উপর হামলা চালায় সীমান্তের শীর্ষ সন্ত্রাসী মাদক সম্রাট রাসেল বাহিনীর ২৫ / ৩০ জন সসস্ত্র সন্ত্রাসী । এতে অল্পের জন্য রক্ষা পান সাংবাদিক খোরশেদ আলম।

খবর পেয়ে থানা পুলিশ খোরশেদ আলমকে উদ্ধার করে। গত প্রায় ১ মাসেও শারীরিক উন্নতি হয়নি আহত সাংবাদিক খোরশেদ আলমের। তিনি শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। সাংবাদিক খোরশেদ আলম জানান, দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় রাসেল বাহিনীর সদস্যরা গারো পাহাড়ে মাদক পাচারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। থানা পুলিশ ও হলদীগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবির জোয়ানরা রাসেল বাহিনী ভারত থেকে পাঁচারকালে দফায় দফায় কোটি টাকা মুল্যের মাদক জব্দ করে। এসব মাদক জব্দের বিষয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী মাকদ সম্রাট রাসেলের নামে প্রায় ২ ডজন মামলা থাকলেও দুই যুগেও রাসেলকে কেউ গ্রেফতার করতে সাহস পায়নি। খোরশেদ আলম জানান তার উপর রাসেল বাহিনীর সন্ত্রাসী তান্ডবে চা দোকান মালিক দেলোয়ার, ওই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য শাহজাহান, কাঠ ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেনসহ অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। পুর্ব পরিকল্পিতভাবে খোরশেদ আলমকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মাদক সম্রাট রাসেল বাহিনীর সদস্যরা। এতে গুরুতরভাবে আহত হয় খোরশেদ আলম ।

খবর পেয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আল আমিন পুলিশ ফোর্সসহ সন্ধ্যাকুড়া বাজার থেকে আহত সাংবাদিক খোরশেদ আলমকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইগাতী ও পরে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্তা করেন । এ ব্যাপারে শনিবার ( ১৬ আগস্ট) খোরশেদ আলম অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও শেরপুর জেলা সদরের সাংবাদিকদের সহযোগিতায় খোরশেদ আলমের পরিবারের পক্ষ থেকে ৬ জনের নামে ও অজ্ঞাতনামা ৬ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলায় চার আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে থানা পুলিশ। চার জনের মধ্যে মামুন, দেলোয়ার, কোরবান আলী জামিনে ছাড়া পেয়েছে । শীর্ষ সন্ত্রাসী মাদক সম্রাট রাসেল ১৮টি মামলা নিয়ে গত দুই যুগধরে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসাা চালিয়ে আসলেও আইন প্রয়োগকারি সংস্থা রাসেলকে গ্রেপ্তার করতে সাহস পায়নি।

২৮ আগষ্ট রাত ৮ টায় ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো, আল আমিন অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যাকুড়া গ্রামে রাসেলের বাড়ি থেকে রাসেলকে আটক করে। এসময় রাসেল বাহিনীর নারি সদস্যরা পুলিশের সঙ্গে লড়াই করে রাসেলকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বর্তমানে শীর্ষ সন্ত্রাসী মাদক সম্রাট রাসেল ১৯ মামলার আসামি হয়ে শেরপুর জেলা কারাগারে থাকলেও তার জামিনের জন্য হাফ ডজন আইনজীবি আদালত কাপাচ্ছেন বলে জানান থানা পুলিশ। অপরদিকে সাংবাদিক খোরশেদ আলমের পক্ষে দায়ের করা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা থানার পুলিশ পরিদর্শক( তদন্ত) রবিউল আজম খান

অভিযান চালিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী মাদক সম্রাট রাসেলের মামা উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের সন্ধ্যাকুড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিনের বাড়ি থেকে আহত সাংবাদিক খোরশেদ আলমের মোটর সাইকেলটি উদ্ধার করেন বলে জানান । তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাংবাদিকের মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো এখনও উদ্ধার হয়নি। গ্রেপ্তার হয়নি ঘটনার সঙ্গে জরিত রাসেল বাহিনীর অন্যান্যরা। স্থানীয়রা জানান সরকারের গত ১৫ বছর ধরে শেরপুর সীমান্ত পথে মাদক চোরাচালানসহ রাসেল বাহিনীর নানা ধরনের অপরাধের আইনি সহায়তার পাশাপাশি রাসেল বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন। আওয়ামী লীগ নেতা জামাল উদ্দিন।

জানা গেছে ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে রাসেল বাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে চলে আসে রাসেলের ওপর মামা ইউপি সদস্য গোলাম কিবরিয়ার হাতে । তার সাথে রয়েছে স্থানীয় এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রভাবশালী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের সঙ্গে ও রয়েছে তার গভীর সম্পর্কও। ফলে রাসেল বাহিনীর সদস্যরা শত অপরাধ করলেও মামলা নেয় না থানা পুলিশ। এ অভিযোগ স্থানীয় ভুক্তভোগী মানুষের। আবার গুরুত্বপূর্ণ কোন কোন বিষয়ে মামলা নেয়া হলেও শিকারোক্তির বিষয়ে তাদের রিমান্ডে ও নেয়া হয়নি । সাংবাদিক খোরশেদ আলমকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারিদের মধ্যে ৪ জন গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হলেও তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রিমান্ডের কোন আবেদন করা হয়নি। বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি)মো, আল আমিন বলেন জামাল উদ্দিনের দাবি তিনি সাংবাদিককে হত্যার পরিকল্পনার সাথে জরিত ছিলেন না। বরং তিনি সহায়তা করেছেন বলে জানিয়েছেন। অপর দিকে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো,রবিউল আজম খান বলেন রাসেলের মামা জামাল উদ্দিনের বিষয়টি পুলিশের নজরে রয়েছে