সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ডাঃ ইশরাতের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ

মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের (আজিমপুর মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট) সাবেক পরিচালক ডাঃ ইশরাত জাহানের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি, টেন্ডার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সাথে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, ডাঃ ইশরাত জাহান আজিমপুর মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের পরিচালক থাকাকালীন একটি শক্তিশালী টেন্ডার সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি প্রতিষ্ঠানের শত শত কোটি টাকার কেনাকাটা নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ওঠা কোনো অভিযোগ তদন্তের মুখ দেখেনি বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
ডাঃ ইশরাত জাহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির দমন কমিশনেও (দুদক) একটি মামলা চলমান রয়েছে, যা তিনি প্রভাব খাটিয়ে ধামাচাপা দিয়ে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একটি সূত্রের দাবি, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের দুর্নীতির একটি বড় অংশের অর্থ তার কাছে গচ্ছিত থাকতে পারে।
তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি কোনো দলীয় পদে না থেকেও ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন এবং তদবির ও বদলি বাণিজ্যের সাথেও জড়িত ছিলেন। অভিযোগকারীদের মতে, জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ডাঃ ইশরাত জাহানের সাথে তার বিশেষ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং এই সম্পর্ককে ব্যবহার করে তিনি স্বাস্থ্যখাতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও ডাঃ ইশরাত জাহানের নাম উঠে এসেছে। অভিযোগকারীরা বলছেন, গত জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং আন্দোলন দমনে ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এমনকি, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত করার চেষ্টারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সরকার পরিবর্তনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে থাকলেও একটি বিশেষ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সক্রিয় আছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। সম্প্রতি গ্রেফতারকৃত মেজর সাদিকের সাথে একটি বৈঠকেও তিনি উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ডাঃ ইশরাত জাহানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর কোনো মন্তব্য না করেই ফোন কেটে দেন।
উল্লেখ্য, ডাঃ ইশরাত জাহানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত এবং এখনো তদন্তাধীন। কোনো অভিযোগই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি।