ফের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের অভ্যন্তরে গোলাগুলি, আতঙ্কে স্থানীয়রা

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি পয়েন্টে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে ভেসে আসছে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে সীমান্তবর্তী স্থানীয়দের মাঝে। দীর্ঘ সাত মাসের বেশি সময় পর ফের শুরু হয়েছে এ ঘটনা।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গোলাগুলির বিকট শব্দ শুনতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ছাড়া আজ রোববার (২৭ জুলাই) সকালেও কয়েক দফায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ৫ পয়েন্টে মিয়ানমার অভ্যন্তরে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে বলে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা গোলাগুলির এ ঘটনাকে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্টি আরাকান আর্মির সঙ্গে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্টির মধ্যে সংঘাত বলে দাবি করলেও বিজিবির সংশ্লিষ্টরা দিচ্ছে ভিন্ন তথ্য।
বিজিবির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রায় দুই বছর ধরে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে। রাজ্যটির অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ এখন আরাকান আর্মির দখলে। চলমান সংঘাতে দেশটির সেনাবাহিনীর পালিয়ে যাওয়া সদস্যদের অস্ত্রগুলো বিদ্রোহী গোষ্টির দখলে। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অস্ত্রগুলো সক্রিয় আছে কিনা তা পরীক্ষা করতেই বিদ্রোহী গোষ্টিটির ছোঁড়া গুলির শব্দ সীমান্তের এপারে ভেসে আসছে।
সীমান্তের বাসিন্দারা বলছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসা এবং আরএসও এর মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে সংঘাতের সময় ছোঁড়া গুলির কয়েকটি খোসা বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও পড়েছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসরুল হক গণমাধ্যমকে জানান, তিনিও স্থানীয়দের মাধ্যমে গুলি এসে পড়ার তথ্য জেনেছেন। তবে এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ঘটনার ব্যাপারে বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম খায়রুল আলম জানান, সীমান্তের ওপার থেকে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসার খবরে বিজিবি কড়া নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। যে কোনো ধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি প্রস্তুত রয়েছে। তবে সীমান্ত এলাকার লোকজনকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কভাবে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সীমান্তের নানা সূত্রের তথ্যের বরাতে তিনি জানান, মূলত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দখল নেওয়া অস্ত্রগুলো সক্রিয় আছে কিনা তা পরীক্ষা করতেই আরাকান আর্মির সদস্যরা গুলি ছুঁড়েছে।