২২ ঘণ্টার কারফিউ, থমথমে গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে দিনভর সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। জেলাজুড়ে চলছে প্রশাসনের ডাকা ২২ ঘণ্টার কারফিউ।
গতকাল বুধবার (১৬ জুলাই) এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে।
সংঘর্ষ থামাতে ও পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে নিতে বুধবার রাত ৮ থেকে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। কারফিউ চলাকালে গোপালগঞ্জ শহরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে মাইকিং করে জনগণকে বাইরে বের না হতে ঘোষণা দিয়েছে। জেলাজুড়ে বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে। সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
তবে, কারফিউ থাকলেও দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের পেটের তাগিদে রাস্তায় বেরিয়েছে। দুয়েকটি রিকশাও চলতে দেখা গেছে। তবে শহরের সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এদিকে, পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেও এ ঘটনায় মামলা, অভিযান বা কেউ গ্রেপ্তার হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। বুধবার গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সভাকে কেন্দ্র করে পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সমর্থকরা। পরে তারা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম রকিবুল হাসানের গাড়ি বহরে হামলা চালায়।
পরবর্তীতে এনসিপির সমাবেশস্থলে ভাংচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে সভা শেষে ফেরার পথে এনসিপির গাড়িবহরে হামলা চালায় তারা। এসব ঘটনার পর হামলাকারী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে দিনভর সংঘর্ষ চলে। পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে চার জন নিহত হন এবং সাংবাদিক ও পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
নিহতরা হলেন- জেলা শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২৫), শহরের থানাপাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮) ও টুঙ্গীপাড়ার সোহেল মোল্লা (৪১)।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, “বুধবার রাত ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”