ঢাকা মঙ্গলবার, ২০শে মে ২০২৫, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


বিদ্যালয় চলাকালীন ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা, অভিযুক্ত ছেলেকে থানায় দিলেন বাবা


১৭ মে ২০২৫ ১২:২১

আপডেট:
২০ মে ২০২৫ ০২:২৩

মো. লিখন হোসেন

তাড়াশ উপজেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ © সংগৃহীত
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মো. লিখন হোসেন (১৮) নামে এক তরুণের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সালিস না মানায় অভিযুক্ত ছেলেকে শুক্রবার (১৬ মে) রাতে থানায় দিয়েছেন বাবা। এর আগে ভুক্তভোগী মেয়েটির মা থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে শুক্রবার সেটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ১৪ বছর বয়সী মেয়েটিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল লিখন। কিন্তু রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩০ এপ্রিল দুপুরে বিদ্যালয়ের মধ্যাহ্নবিরতির সময় স্কুল ভবনের চতুর্থ তলার একটি শৌচাগারে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণচেষ্টা চালায় সে। তবে সময়মতো দুই বান্ধবী সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করে।

জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ভুক্তভোগী ছাত্রী। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর থেকেই অভিযুক্ত তরুণ ও তার পরিবারের সদস্যরা ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকি ও হয়রানি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর মদদে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলেছে বলেও জানা গেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তরুণের বাবা বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর আমি ছেলেকে বলি, ওই মেয়েকে বিয়ে করতে। কিন্তু সে রাজি হয়নি। তাই আমি নিজেই তাকে থানায় দিয়ে এসেছি।’

তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। আমরা আসামিকে তার নানার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছি। তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাওয়া হবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঘটনার সত্যতা আছে জানিয়ে বলেন, ‘আমি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে বিদ্যালয়ে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা উপযুক্ত বিচার করবেন বলেছিলেন। কিন্তু এখনও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা জানিয়েছেন, ‘মেয়ে ভয় পেয়ে এখন স্কুলে যেতে সাহস পাচ্ছে না।’

স্থানীয় সগুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জুলফিকার আলী ভূট্টো বলেন, ‘আমি শুনেছি, এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ওই তরুণ। পরে সালিশে বিয়ের চেষ্টা করা হলেও ছেলেটি রাজি হয়নি। অবশেষে তার বাবা নিজেই থানায় দিয়ে এসেছে। ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় মামলা করেছে বলেও জেনেছি।’

ঘটনার তদন্ত করছেন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম রব্বানী। তিনি বলেন, তদন্তে ধর্ষণচেষ্টার সত্যতা পাওয়া গেছে। যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।