নেছারাবাদে সাবেক মন্ত্রীর পার্সোনাল অফিসার মুছিবুল হাসান ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

পিরোজপুরের নেছারাবাদে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, দীপু মনি এবং মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের দপ্তরের পারসোনাল অফিসার মুছিবুল হাসান ও তার বড় ভাই আওয়ামী লীগের মইনুল হাসান মিলনের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নের এগারোগ্রাম সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মুছিবুল হাসান ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি শিক্ষা শাখায় অতিরিক্ত সচিব হিসেবে যোগদানের পরে বাংলাদেশের বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তদবির প্রমোশন ও তদন্তের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়া ২০১২ সালে প্রাক্তন মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পার্সোনাল সেক্রেটারির ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে মন্ত্রীর দপ্তরে যোগদান করেন। ২০২৪ সালে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেও দপ্তরের পার্সোনাল অফিসারের পদে বহাল থেকে তার অবৈধ কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের পরে মুজিবুল হাসান মন্ত্রীর দপ্তর থেকে বদলি হয়ে প্রায় দুই মাস গাঁঢাকা দিয়ে থাকে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় কিভাবে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার অফিস আদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদ মর্যাদা) হিসেবে বদলি হয়।
এছাড়াও তার ভাই মনিরুল হাসান মিলন পিরোজপুর জেলার আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল এবং প্রায় প্রতিটি স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ও প্রাইমারি স্কুলের নিয়োগ বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে এবং জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আউয়াল, সেক্রেটারি কানাইলাল বিশ্বাস, সাবেক মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম, সাবেক এমপি মহিউদ্দিন মহারাজ মন্ত্রণালয়ের টাকা ভাগ বাটোয়ারা করতো। এর একাধিক প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কিভাবে তারা বর্তমান সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দাপটের সাথে চলছে আমাদের বোধগম্য নয়।
উপস্থিত বক্তারা আরো বলেন, এগারগ্রাম সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সুদীর্ঘ ১১ বছর টানা একই পরিবারের সভাপতি থাকায় সেখানেও তৈরি করে এক নিয়োগ সাম্রাজ্য। প্রায় ১৫টি নিয়োগ ও অন্যান্য কাজে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। এখনো আওয়ামীলীগের দোসর হয়েও কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে বহাল তবিয়তে চাকরি করছে তা সাধারণ জনগণের মনে প্রশ্ন। তারা এলাকায় এখনো আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। সঠিক তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে মইনুল হাসান মিলন বলেন, আমরা চাকরির সুবাদে সকলের সাথে সমন্বয় করে চলতে হয়। প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে যে সরকার ক্ষমতায় আসুক তাদের সাথে থেকেই দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করি। এখানে রাজনৈতিক দলকে ব্যবহার করে আমাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করার কোন সুযোগ নেই।
মুছিবুল হাসান জানান, আমাদের নিজ এলাকায় সামাজিকভাবে মানুষ ভালোবাসে বলে রাজনৈতিকভাবে ছোট করার অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে। আমরা কোন রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান না। চাকরির সুবাদে বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করতে হয়েছে। যা করেছি রাষ্ট্রের স্বার্থে করেছি।